বাংলায় একটি প্রবাদ আছে। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। অর্থাৎ এক বছরের বারোটি মাসে তেরো রকমের পার্বন অনুষ্ঠিত হয় যানিয়ে বাঙালি জাতি মেতে ওঠে। কিন্তু সেই পার্বন গুলো ছাড়াও আমাদের বাংলার প্রত্যন্ত জেলায় বা গ্রামে পালিত হয়ে থাকে বেশ কিছু প্রাচীন ও প্রথাগত পার্বণ যা আমরা জানিইনা।
বাংলার ইতিহাসের মধ্যে অন্যতম প্রাচিন জেলা বাঁকুড়া। যার মূল আকর্ষণীয় স্থান বিষ্ণুপুর। আমরা অনেকেই এই মন্দিরে ঘেরা বিষ্ণুপুর সম্পর্কে জানি। বা এই বিষ্ণুপুরেই মনসাপুজো তে একটি বিশেষ দিনে সাপ সহ সাপুড়েদের মেলাহয় সে সম্পর্কেও আমরা অনেকেই অবগত। কিন্তু দুর্গা পুজোয় দশমীর দিন বাঁকুড়ার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে প্রাচীন প্রথানুযায়ী কাদা ছোঁড়াছুড়ি খেলা হয়েথাকে। যেখানে অংশগ্রহন করেন আট থেকে আশি সকলেই। জানতেন নাকি এ বিষয়ে?
বাঁকুড়া 1659 সালে প্রায় 400 বছর আগে রাজা রঘুনাথ সিং এর আমলে তখন এই রাস্তার উপর দিয়ে রঘুনাথ সিং তৎসহ প্রজা নিয়ে যুদ্ধ করতে যাচ্ছিল সন্ধিপুর দিকে সেই সময় একটি বাচ্চা মেয়ে রক্ত নিয়ে একটি বট গাছ সন্নিকটে খেলা করছিল সেই সময় রাজা সেই মেয়েটিকে দেখে দাড়িয়ে পড়ে এবং মেয়েটিকে নানান ভাবে প্রশ্ন করতে থাকে সেই সময় মেয়েটি দেবী দুর্গার রুপ নাম ছগর ভঞ্জনি বলেন যে তুই এই যুদ্ধ জয় করে এলে আমার এখানে একটি মন্দির তৈরি করে দিতে হবে এবং এই রক্ত খেলাটিকে বাদ দিয়ে একটি কাঁদা খেলা রুখে রুপ দান করতে হবে কথিত আছে রাজা সেই দিন মাকে প্রনাম করে গড় জয় করার জন্য এগিয়ে যায় এবং রাজা যুদ্ধ জয় করে ফিরে আসে । যেদিন ফিরেন সেই দিন ছিল শুভ বিজয়া দশমী তখন মাকে এসে সে প্রনাম করে কাঁদা খেলা অনুষ্ঠান এবং মন্দির নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেন । চিরাচরিত ভাবে আট থেকে আসি সেই শুভ বিজয়ার দিন এই কাঁদা খেলায় অংশ নেন। এখন বর্তমানে নয়টি পুকুরের জল একত্রিত করে এই কাঁদা খেলা অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করা হয় । এই দেবীর চার দিন ব্যাপী দূর্গা পূজা সম্পন্ন হয় বিশেষত এই বিজয়া দশমীর দিনটি প্রচুর দুরদুরান্ত থেকে আসা মানুষের ঢল নামে এবং বাচ্চা মহিলা ও সর্বস্তরের মানুষ এই খেলায় অংশ গ্রহণ করে । তাতে মানুষের বিশ্বাস অনেক রোগ থেকে এবং অনেক মনস্কামনা পুর্ন হয় ।
সঞ্চয় সন্তকি সেবায়িত এই কথা জানান । উত্তরবাড় গ্রাম ষোল আনার উদ্যোগে বহু প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে কাঁদা ছোড়াছুড়ি এই খেলা । খেলায় অংশ নিতে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে প্রচুর ভক্তগন আসেন ।
বাঁকুড়া জেলার জয়পুরের ঝগড়াই মাড়ো এলাকায় এটি হয়ে আসছে। বাঁকুড়া থেকে দেবজিৎ দত্ত