বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন কথাটি ধ্রুব সত্য। তবে আমরা অনেকেই সব পুজো পার্বন সম্পর্কে বিশদ জানিনা। বংশানুক্রমিক ভাবে পালন করে আসা হচ্ছে তো হচ্ছেই !
রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। আর এই দিনেই সারা বাংলা জুড়ে বেশিরভাগ বাড়িতেই পালিত হয় “অরন্ধন” বা রান্না পুজো। এই অরন্ধন বা রান্না পুজো বিষয়ে হিন্দু বিশেষজ্ঞরা বলেন, বেদ ও অনান্য শাস্ত্রে প্রমাণ পাওয়া যায় দেবী মনসা নাকি জলের অন্বেষণেই পশ্চিম থেকে পুবে এসেছিলেন। রান্না পুজোর দিন গৃহের উনুনের আগুন বন্ধ রেখে এক বিজ্ঞান সম্মত বার্তা লুকিয়ে আছে এই প্রাচিন লোকাচারে। ভবিষ্যতের জন্য জল সংরক্ষণ করো, পৃথিবী কে শীতল রাখো, তবেই সুস্থ থাকবে আমাদের ভবিষ্যতের দিনগুলি।। আবার আষাঢ় ভাদ্রে চরম বর্ষণের পর আশ্বিনের শরতের প্রথম রোদে ঘরের বালিশ, বিছানা, গদি রেখে তা জীবানুমুক্ত করা সাথে ব্যবসায়িক স্থলে বিশ্বকর্মা পুজো ও গৃহে রান্না পুজো হেতু বর্ষা কালে ঘর ও ব্যাবসায়িক স্থলের সর্বত্র পরিস্কার করা। এত সব কর্ম সম্পাদন করতে গেলে তো গৃহকর্ত্রী রান্না করার সময় পাবেন না তাই ভাদ্রের শেষ পঞ্চ ব্যাঞ্জন রান্না করে, পরের দিন সেই পঞ্চ ব্যাঞ্জন আহার করা হয়।
শাকসবজি, ইলিশ মাছের নানাবিধ পদ, নারকেল থেকে চালতার চাটনি এবং শেষ পাতের জন্য থাকে পায়েস। এই সব রান্না আগের দিন সন্ধ্যা থেকে ভোররাত অবধি তৈরী করেন গৃহকর্ত্রী। এরপর মাটির উনুনের আঁচ নিভিয়ে তাতে সিঁদুরের প্রলেপ দিয়ে স্বস্তিকা চিহ্ন একে মালা পরানো হয়। একটি ছোট মনসা গাছ বা শালুকফুলের মালা দিয়ে সব রান্না উনুনের সামনে সাজিয়ে রাখা হয়।