Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

৪০০ বছর ধরে পুজিত হন এই কালো দুর্গা

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

মা দুর্গা বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক রণংদেহী মূর্তি। সে রূপে যেমন তেজ থাকে তেমন থাকে সৌন্দর্যও। আজ এমন দুটি পুজোর কথা বলবো যেখানে মা দুর্গার মুখের রং কালো। যার মধ্যে একটি খোদ এই কলকাতাতেই এবং অপরটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে।

ভট্টাচার্য বাড়ির কালো দুর্গা ক্যানিং :
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গার রূপ অন্য। এবাড়ির মা দুর্গার মুখের রং কালো। গোটা শরীর ঝলসানো তামাটে রঙের। দেবী নাকি এবাড়িতে এমন পোড়া মুখেই পূজিত হতে চেয়েছিলেন। প্রায় ৪৩১ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল ঢাকার বিক্রমপুরের বাইনখাঁড়া গ্রামে। এখন আর পুজোয় সেই আড়ম্বর নেই, তবে বনেদিয়ানাতেই সে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার।
প্রায় ৪৩১ বছর আগে বাংলাদেশে এই ভট্টাচার্যদের বংশধররা শুরু করেছিলেন মা দুর্গার পুজো। মূলত জমিদার বাড়ির শোভা ও আভিজাত্য প্রদর্শনের জন্য দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু পুজো শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই এই পরিবারে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। বাড়ির দুর্গা মন্দিরের পাশে ছিল মা মনসার মন্দির। পুরোহিত মনসাপুজো করে দুর্গাপুজো করতে আসেন। তখন মনসা মন্দিরের ঘিয়ের প্রদীপের জ্বলন্ত পলতে নিয়ে উড়ে যাচ্ছিল একটি কাক। সেই সময়, দুর্গামন্দিরের শনের চালে পড়ে যায় সেটি। আর তাতেই পুড়ে যায় দুর্গা মন্দির ও প্রতিমা। এরপর পরিবারের সদস্যরা মনে করেন মা দুর্গা বোধহয় তাঁদের পুজো আর চাইছেন না। সেই মোতাবেক পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এমন অবস্থায় একদিন রাতে স্বপ্নাদেশ পান পরিবারের তৎকালীন গৃহকর্তা রামকান্ত ভট্টাচার্য। স্বপ্নে দেখা দিয়ে দেবী বলেন, তাঁর পুজো যেন কোনওভাবেই বন্ধ না হয়। ওই পোড়া রূপেই যেন পুজো করা হয়। এই স্বপ্ন পাওয়ার পর থেকে আজও দেবীর সেই পোড়া মুখ ও ঝলসানো শরীরের মূর্তিতেই বছরের পর বছর চলে আসছে ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো।
শুধু পোড়া রং নয়, দেবীর স্বপ্নাদেশে আরও বৈচিত্র রয়েছে এবাড়ির মূর্তিতে। ডানদিকে নয়, এবাড়িতে গণেশ থাকেন বাঁদিকে। আর ডানদিকে থাকেন কার্তিক। কার্তিকের ঠিক পাশেই থাকেন নবপত্রিকা।
এছাড়া এবাড়ির দুর্গাপুজোয় যে ধ্যান হয় তা সাধারণত দুর্গাপুজোয় যে নিয়মে ধ্যান হয় তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আগে ভট্টাচার্য বাড়ির পুজোয় মোষ বলি দেওয়ার রীতি ছিল। এখন আর সেসব হয় না। নিয়ম রক্ষার জন্য চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। নবমীর দিন চালের গুঁড়ো দিয়ে মানুষের আদলে একটি মূর্তি বানানো হয়। তারপর তাকে বলি দিয়ে শত্রু বলি দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় টি কোলকাতার বেলেঘাটা অঞ্চলে রামকৃষ্ণ নস্কর লেন নিবাসী ভট্টাচার্য্য পরিবারের ২৮৭ বৎসর প্রাচীন কালো দুর্গার আরাধনা ।
ঠিকানা : ১/২ পি/১বি, রামকৃষ্ণ নস্কর লেন, কোলকাতা — ৭০০০১০
পথনির্দেশ : ই আম বাইপাস থেকে বেলঘাটার দিকে যেতে বাঁদিক আয়োজিত হয় ‘ধীরেন চারু স্মৃতি সংঘ’ — এর মাতৃ আরাধনা। তার থেকে আর একটু এগিয়ে গেলেই বাঁদিকে দেখা যাবে মায়ের এই অভিনব রূপ।
প্রায় ২৮৭ বছরের পারিবারিক দুর্গাপূজা। তবে তা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের পাবনা জেলার স্থলবসন্তপুর অঞ্চলে। নাটোরের রাণী ভবানীর আমলের শ্রী হরিদেব ভট্টাচার্য্য প্রথমবার এই পারিবারিক দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। আদতে তিঁনি ছিলেন নদীয়া জেলার বাসিন্দা। নাটোরের রাণী মা তাঁহাকে জমি প্রদান করেন এবং হরিদেব হয়ে যান স্থলবসন্তপুরের জমিদার।
প্রসঙ্গত দুর্গাপূজা শুরুর অনেক আগে থেকেই এই ভট্টাচার্য্য পরিবারে মা কালীর পূজো হয়ে আসছিল। শ্রী হরিদেব ভট্টাচার্য্য নিজেও ছিলেন কালী ভক্ত। কিন্তু তিঁনি স্বপ্নাদিষ্ট হন এবং দুর্গাপূজা শুরু করেন। মা স্বপ্নে আদেশ দিয়েছিলেন কালো দুর্গামূর্তি পূজা করতে। সেই মত আজও কালো দুর্গামূর্তির পূজো হয়ে আসছে ভট্টাচার্য্য পরিবারে।
ও-পার বাংলার পূজো এ-পার বাংলায় এলেও, নিয়ম নীতিতে কোনও ভাঁটা পড়েনি ব লে জানান কৃষ্ণাদেবী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং পূজোও ছড়িয়ে গিয়েছে পরিবারের মধ্যে। বর্তমানে ভট্টাচার্য্য পরিবারের একটি শাখার পূজো এগিয়ে নিয়ে চলেছেন ষাটোর্ধ্ব কৃষ্ণাদেবী। অন্য একটি পূজো হয় তাঁরই জ্যাঠামশাইয়ের বাড়িতে। কালীঘাটের পটুয়াপাড়া অঞ্চলে রয়েছে ভট্টাচার্য্য পরিবারের দয়াময়ী কালী মন্দিরও, যেখানে নিত্যপূজোর আয়োজন রয়েছে।
বেলঘাটার ‘ধীরেন চারু স্মৃতি সংঘ’ — এর পূজো মন্ডপের খুব কাছেই অনুষ্ঠিত হয় ভট্টাচার্য্য পরিবারের কালো দুর্গার আরাধনা। এক সময়ে নিজেদের বাড়িতেই আয়োজন করা হত মাতৃবন্দনার। কিন্তু, এখন তা হয় এপার্টমেন্টের নীচেই, জানালেন কৃষ্ণাদেবী।
মায়ের রঙ কালো হলেও চার সন্তানের গায়ের রঙ স্বাভাবিক। মহিষাসুর অবশ্য সবুজ রঙের। ভট্টাচার্য্য পরিবারের এই পূজো সম্পন্ন হয় কালিকা পুরাণ মতে। মা এখানে পূজিতা হন ভদ্রকালী রূপে। লক্ষনীয় এখানে চার সন্তানের গায়ের অবস্থান আলাদা। মায়ের ডানপার্শ্বে থাকেন লক্ষ্মীদেবী ও কার্ত্তিকেয় এবং বামপার্শ্বে থাকেন দেবী সরস্বতী এবং গণপতি।
নিজেদের বাড়িতে যখন পূজো হত, তখন মহিষ বলি হত, বললেন কৃষ্ণা ভট্টাচার্য্য। বছর কুড়ি হল তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে পূজোর চারদিনই চালকুমড়ো বলি দেওয়া হত। মা কে দেওয়া হয় অন্ন ভোগ। পুরোহিতের অঙ্গবস্ত্র রক্তিম। তন্ত্রমতেই আরাধনা হয় দেবীর এই পরিবারে। পথচলতি অনেকেই এই প্রাচীন পূজোকে নিছক এপার্টমেন্টের পূজো বলে ভুল করতে পারেন। কিন্তু তা একেবারেই নয়। পাবনা জেলার শ্রী হ রিদেব ভট্টাচার্য্য যে কালো দুর্গা আরাধনা শুরু করেছিলেন, সেই ঐতিহাসিক রসদ ই বহন করে নিয়ে চলেছে এই পূজো।

More Related Articles

Breaking News

হাই অ্যালার্টে কলকাতা বিমানবন্দর! CISF জওয়ানদের ছুটি বাতিল, বাড়ছে নজরদারি

গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের গুরুত্বপূর্ণ হাবগুলির মধ্যে অন্যতম কলকাতা বিমানবন্দর এখন হাই রিস্ক জোনে। সাম্প্রতিক কিছু আন্তর্জাতিক গতিবিধি ও অনলাইন বার্তালাপ থেকে এই ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

Read More »
নারীর সাহস ও আত্মপরিচয়ের গল্প নিয়ে পরিচালক পদ্মিনী দত্ত শর্মার 'ব্ল্যাক কোট' এর প্রিমিয়ার সুজাতা সদনে
বিনোদন জগত

নারীর সাহস ও আত্মপরিচয়ের গল্প নিয়ে পরিচালক পদ্মিনী দত্ত শর্মার ‘ব্ল্যাক কোট’ এর প্রিমিয়ার সুজাতা সদনে

পরিচালক পদ্মিনী দত্ত শর্মার শর্ট ফিল্ম ‘ব্ল্যাক কোট’ এর প্রিমিয়ার হল সুজাতা সদনে। নারীর আত্মপরিচয় ও ন্যায়বিচারের বার্তা নিয়ে তৈরি এই চলচ্চিত্র শীঘ্রই মুক্তি পাবে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে।

Read More »
অপারেশন সিঁদুর' ট্রেডমার্কের দৌড়ে নামল একাধিক কোম্পানি, সেনা অভিযানের পর বাড়ছে বাণিজ্যিক লড়াই
Featured News

অপারেশন সিঁদুর’ ট্রেডমার্কের দৌড়ে নামল একাধিক কোম্পানি, সেনা অভিযানের পর বাড়ছে বাণিজ্যিক লড়াই

সাম্প্রতিক সামরিক সাফল্যের পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম ঘিরে তৈরি হয়েছে জাতীয় আবেগ। সেই আবেগকে পুঁজি করে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের দৌড়ে নেমেছে একাধিক সংস্থা। শুরু হয়েছে আইনি ও বাণিজ্যিক লড়াই।

Read More »
অপারেশন সিঁদুর: মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত, ভারতীয় প্রত্যাঘাতে কেঁপে উঠল বহওয়ালপুর!
Breaking News

অপারেশন সিঁদুর: মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত, ভারতীয় প্রত্যাঘাতে কেঁপে উঠল বহওয়ালপুর!

ভারতের অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ২১টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস। জইশ প্রধান মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত। বহওয়ালপুরে চালানো এই হামলায় আজ়হার বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা।

Read More »
‘অপারেশন সিঁদুর’: গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত, সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন দুই ‘অগ্নিকন্যা’
Breaking News

‘অপারেশন সিঁদুর’: গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত, সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন দুই ‘অগ্নিকন্যা’

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত চালালো ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নিখুঁত স্ট্রাইক। সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

Read More »
দেশ

ভারতজুড়ে ২৫৯টি স্থানে নিরাপত্তা মহড়া, পশ্চিমবঙ্গেও তৎপরতা চরমে—পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জোরদার প্রস্তুতি

পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার, সেনা-আসামরিক যৌথ মহড়া, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা।

Read More »
error: Content is protected !!