বিখ্যাত বলিউড অভিনেত্রী রানি মূখার্জী ও বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বান ভট্টাচার্য্য অভিনীত Mrs Chatterjee vs Norway এ মাসেই মুক্তি পেতে চলেছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে একজন ভারতীয় নারীর, তার সন্তানদের ফিরে পাবার জন্য একটি বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে কি ভাবে লড়াই করেছিলেন সেই গল্পই তুলে ধরা হচ্ছে এই সিনেমায় আর সাথে বলা হচ্ছে “সত্য ঘটনা অবলম্বনে”। কিন্তু আদৌ কি সত্যি টা দেখানো হচ্ছে? বলা বচ্ছে কি? সত্যিই কারজন্য নরওয়েতে আটকে পড়া শিশুদুটি দেশে ফিরেছিল?
২০১১-১২ সালে, প্রবাসী বাঙালি দম্পতি অনুরুপ ও সাগরিকা ভট্টাচার্য্যের কাছ থেকে নরওয়ে সরকার তাদের ” রীতি” অনুযায়ী শিশুদের অযত্ন ও অপরিচর্চার অভিযোগে তাদের থেকে তাদের শিশু সন্তান দুটি কেড়ে নেয়। এই নির্মম অমানবিক অত্যাচারের শিকার হয়ে নিরুপায় হয়ে তৎকালিন সময় অনুরুপ ভট্টাচার্য্য দুদুর নরওয়ে থেকে যোগাযোগ করেন কলকাতার বিশিষ্ট সমাজকর্মী রাজীব সরকারের সাথে। রাজীব সরকার পুরো বিষয় টি জানার পরে শিশুদুটি কে নরওয়ে সরকারের থেকে মুক্ত করতে উদ্যোগী হন।
( আমরা রাজীব সরকারের এই দুটি শিশু উদ্ধার নিয়ে সমস্ত তথ্য প্রমান ও তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন মহীরুহ সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট সহ যে খবর করে ছিলাম তার লিঙ্ক –http://theindianchronicles.com/মিসেস-চ্যাটার্জি-ভার্সে/ )
রাজীব সরকারের এই উদ্যোগ পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশে একটি আন্দোলনে রুপান্তরিত করেছিল। সেই সময় কলকাতার রাজপথে নেমেছিল মিছিল। রাজীব সরকার কে সমর্থন করে সেদিন সেই মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন সমাজের বিশিষ্টজন সহ বর্তমান তৃনমূল কংগ্রেস মূখপাত্র কুনাল ঘোষ। ঘেরাও করা হয় কলকাতায় অবস্থিত নরওয়ে সরকারের দূতাবাস। কথাহয় নরওয়ে সরকারের আধিকারিকের সাথে। সেই সময় কূটনৈতিক চাপে পড়ে শিশুদুটিকে শর্ত সাপেক্ষে তাদের কাকার হাতে তুলে দিতে রাজি হয় নরওয়ে সরকার। শিশুদুটি তাদের কাকার সাথে ভারতে ফিরে আসে।
যদিও এর পরেও রয়েছে আরো এক রহস্যজনক কাহিনী। কেন অনুরুপ ভট্টাচার্য্য আজও নরওয়ে তে রয়েগেলেন। কেন সাগরিকা একা দেশে ফিরলেন? কেনই বা সাগরিকা শিশুদুটি কে আইনি মামলা করে কাকার থেকে নিজের কাস্টডিতে নেবার পরেও অনুরুপের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ও খোরপোষ মামলা করলেন? সে সব আলোচনা আমরা করবো তবে অন্যদিন।
ভারতে এই দুটি শিশু উদ্ধারে সাগরিকা দেবীর একার লড়াই কতটা ছিল সে নিয়েই আমাদের প্রশ্ন। কেন সাগরিকা দেবী, এই ঘটনা নিয়ে তার লেখা গল্পের বইতে রাজীব সরকারের ও অনান্য দের কথা উল্লেখ করলেন? কেন সমস্ত কৃতিত্ত্ব নিজের নামে করলেন? আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এক ভারতীয় নারীর তার সন্তান দের ফিরে পাবার লড়াই নামক শীর্ষে যে অভিবাদন তিনি একা কুড়িয়ে যাচ্ছেন তা কি একা তার প্রাপ্য? রাজীব সরকার যে এই আন্দোলনে কতটা যুক্ত ছিলেন তা আমরা ছাড়াও অন্য সংবাদ মাধ্যমও স্বীকার করেছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এর থেকে কলঙ্কিত আর কি হতে পারে যখন এ প্রসঙ্গে সত্য মিথ্যা জানতে গেলে সাগরিকা (চক্রবর্তী) ভট্টাচার্যের পরিবারের সদস্য রাজীব সরকারের ওপর মিথ্যা অভিযোগ আনেন। এমনকি রাজীব সরকারের কাছে এই অভিযোগ নস্যাৎ করার প্রমান থাকা সত্বেও তিনি আজ চুপ। কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন – সব তথ্য প্রমান উনমুক্ত করেদিলে শিশুদুটির ভবিষ্যত খারাপ হতে পারে। এর পরেও কি আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে আমরা গর্বের জায়গায় থাকতে পারি? একাধারে এক জন মা হয়ে তিনি তার সন্তান দের সাথে হওয়া দূর্ঘটনা একটি গল্পের বই -এর আকারে প্রকাশিত করে ও সিনেমা বানিয়ে ব্যাবসা করছেন অন্যদিকে একজন পুরুষ সমাজকর্মী হয়ে শিশু দুটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে চলেছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মাহাত্ম্য আমরা সবাই জানি কিন্তু সত্যিই কি তার সেই মাহাত্ম্যের ধারা বজায় থাকছে?
উত্তর জানান অপনারা।