পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ প্রায় সাড়ে ৬ ফুট লম্বা, চোখে পুরু কালো সেলুলয়েড চশমা, মাথা ভর্তি ব্যাক ব্রাশ করা কোঁকড়ানো চুল, দাড়িগোঁফ কামানো, গৌড়বর্ণ। বাকচাতুর্য আছে তবে কম কথা বলা এই লোকটিকে সাহিত্য প্রেমী বাঙালি এক কথায় চিনতে পারবেন। হ্যাঁ ইনি গোয়েন্দা কিরীটী রায় যিনি বাঙালি হলেও বিশ্বের বড় বড় গোয়েন্দাদের সাথে টক্করে এক ইঞ্চিও পিছিয়ে নেই। না আজ কিরীটীর কথা বলব না। আজ বলব তার বাবার কথা। স্রষ্টা তো বাবাই হলেন। নীহার রঞ্জন গুপ্ত বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নাম। আজ তার ১১২ তম জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধা এবং প্রণাম।
পেশায় চিকিৎসক নেশায় সাহিত্য এমন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন। চুরি কাচি চালানো মানুষের মাথায় এমন বাংলা সাহিত্যের রস আসে কীভাবে সেটাই ভাবার বিষয়। ‘শিশুসাথী’ পত্রিকার সম্পাদকের পাকা জহুরির চোখ তিনি ঠিক হীরে চীনে নিয়েছিলেন। এই পত্রিকায় তার প্রথম উপন্যাস যখন ছাপা হয় তখন তার বয়স মাত্র আঠেরো। সেই শুরু তারপর তার কলমে তৈরি হয়েছে তাবড় তাবড় উপন্যাস। আর কিরীটী তো বাংলা গোয়েন্দাদের মধ্যে অন্যতম।
উত্তম কুমার কিরীটী চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তার কাছে প্রস্তাব রেখেছিলেন। কিন্তু উত্তম কুমারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি সোজা বলে দিয়েছিলেন কিরীটী চরিত্রে তোমাকে মানাবে না। এই দৃঢ়টা তখনকার দিনে কোন লেখকের মধ্যে ছিল কিনা জানিনা। পরবর্তীতে তার লেখা নিয়ে বিভিন্ন ভাষায় বহু সিনেমা তৈরি হয়েছে।
‘মায়া মৃগ’ ‘উত্তর ফাল্গুনী’ বাদসা, ‘তাপসী’, ‘কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী’ সব বিখ্যাত সিনেমাগুলি তারই কলমে সৃষ্ট। এছাড়াও তার মায়া মৃগ এবং উল্কা গল্প নিয়ে বিভিন্ন ভাষায় একাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। বর্তমান কালে কিরীটী নিয়ে চারটি সিনেমা তৈরি হয়েছে। সানডে সাসপেন্সে গোয়েন্দা কিরীটীর অসংখ্য গল্প পাঠ হয়েছে।