Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

উত্তর কোলকাতার কুমোরটুলির ও তার মৃৎশিল্পীদের অজানা তথ্য

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

ঠিক এই পুজোর সময়েই আমরা অনেকেই ছবি তোলার সখে কুমোরটুলির অলিগলি তে যাতায়াত শুরু করি । এখান কার মৃৎশিল্পী দের বানানো দুর্গা প্রতিমা শুধুমাত্র বাঙলাতেই নয় , পাশ্চাত্যে দেশেও বিখ্যাত । কিন্তু এই কুমারটুলি সম্পর্কে বা তার ইতিহাস সম্পর্কে আমরা কোটটুকুই বা জানি!

প্রথম দুর্গা পূজা শুরু হয়েছিল ১৬০৬ সালে। অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র দুর্গা পূজার প্রচলন করেন। পরে নবদ্বীপ,শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর থেকে কুমোররা ভালো আয়ের আসায় এই কলকাতায় বসবাস করতে শুরু করেন। এরপর ১৭৫৭ সালে শোভাবাজার রাজবাড়ির রাজা নবকৃষ্ণ দেব কলকাতায় দুর্গা পূজা শুরু করেন। তখনকার দিনে কুমোররা জানত না যে সিংহ কি রকম দেখতে হয় তাই রাজা নবকৃষ্ণ দেবের বাড়ির দুর্গা প্রতিমায় সিংহের জায়গায় ঘোড়ার রূপ দেওয়া হয়। সেটির প্রচলন আজ অব্দি অব্যাহত।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করে। গোবিন্দপুর গ্রামে কোম্পানি ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সুতানুটি অঞ্চলে। গোবিন্দপুরের বনিক সম্প্রদায় পাথুরিয়াঘাটা ও জোড়াসাঁকো  অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। এর পাশাপাশি গড়ে ওঠে অন্যান্য কয়েকটি অঞ্চলও।

কোম্পানির ডিরেক্টরদের আদেশানুসারে জন জেফানিয়া হলওয়েল ‘কোম্পানির মজুরদের জন্য পৃথক পৃথক অঞ্চল’ (‘separate districts to the Company’s workmen’) বণ্টন করেন। এইভাবে কলকাতার দেশীয়দের অঞ্চলগুলি বিভিন্ন পেশাভিত্তিক পাড়ায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। এইভাবেই শুঁড়িপাড়া, কলুটোলা, ছুতারপাড়া, আহিরীটোলা ও কুমারটুলি প্রভৃতি অঞ্চলের উৎপত্তি ঘটে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বড়োবাজার অঞ্চলের আগ্রাসনের শিকার হয়ে উত্তর কলকাতার মৃৎশিল্পীরা শহর ছেড়ে চলে যান। কিন্তু কুমারটুলির পটুয়ারা, যাঁরা গঙ্গামাটি সংগ্রহ করে মাটির পাত্র ইত্যাদি তৈরি করে সুতানুটি বাজারে (অধুনা বড়োবাজার) বিক্রি করতেন, তারা টিকে যান। পরবর্তীকালে তারা ধনী সম্প্রদায়ের বাড়ির পূজার নিমিত্ত দেবদেবীর প্রতিমা নির্মাণ করতে শুরু করেন। কলকাতা ও বাইরে বারোয়ারি বা সার্বজনীন পূজার প্রচলন হলে পূজাকমিটিগুলি কুমারটুলি থেকে প্রতিমা সংগ্রহ করতে থাকেন।

কুমারটুলি অঞ্চল অতীতের কলকাতার বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির বাসস্থান ছিল। ১৭০০ সালে কুমারটুলির নন্দরাম সেন কলকাতার প্রথম কালেকটর নিযুক্ত হন। তাকে ব্ল্যাক ডেপুটি বলা হত। কুমারটুলি অঞ্চলে বর্তমানে তার নামে একটি রাস্তা আছে। পরবর্তী ব্ল্যাক ডেপুটি গোবিন্দরাম মিত্র এই অঞ্চলে ৫০ বিঘা (১৬ একর) জমিতে এক বিরাট প্রাসাদোপম বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন।

লৌকিক ছড়ায় উল্লিখিত বনমালী সরকারের বাড়ি ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত কুমারটুলিতে অবস্থিত ছিল। কুমারটুলিতে তার নামে একটি গলিপথ রয়েছে।এছাড়া কলকাতার বিখ্যাত মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশই কুমারটুলিতে বাস করেন। জনপ্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলেবেলা কেটেছিল এই অঞ্চলে।

কুমারটুলির প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় হলেন মোহনবাঁশী রুদ্রপাল ও তার দুই পুত্র সনাতন রুদ্রপাল ও প্রদীপ রুদ্রপাল, গোরা চাঁদ পাল, প্রদ্যোৎ পাল, রাখাল পাল, গণেশ পাল, অলোক সেন, কার্তিক পাল, কেনা পাল প্রমুখ। বর্তমান যুগে ‘থিম শিল্পী’দের রমরমা সত্ত্বেও সনাতন প্রতিমার গুণগ্রাহী আজও কুমারটুলির মৃৎশিল্পীদের দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করান। পুরুষদের পাশাপাশি কুমারটুলিতে প্রায় ৩০ জন মহিলা প্রতিমাশিল্পী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে মিনতি পাল, সোমা পাল, কাঞ্চী পাল ও চম্পারাণী পাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এঁরা দীর্ঘকাল ধরে প্রতিমানির্মাণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কুমারটুলি অঞ্চলের নিজস্ব সর্বজনীন দুর্গাপূজার সূচনা হয় ১৯৩৩ সালে। সেযুগের বিশিষ্ট প্রতিমাশিল্পী গোপেশ্বর পাল ছিলেন কুমারটুলি সর্বজনীনের প্রতিমার নির্মাতা।

More Related Articles

অপারেশন সিঁদুর' ট্রেডমার্কের দৌড়ে নামল একাধিক কোম্পানি, সেনা অভিযানের পর বাড়ছে বাণিজ্যিক লড়াই
Featured News

অপারেশন সিঁদুর’ ট্রেডমার্কের দৌড়ে নামল একাধিক কোম্পানি, সেনা অভিযানের পর বাড়ছে বাণিজ্যিক লড়াই

সাম্প্রতিক সামরিক সাফল্যের পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম ঘিরে তৈরি হয়েছে জাতীয় আবেগ। সেই আবেগকে পুঁজি করে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের দৌড়ে নেমেছে একাধিক সংস্থা। শুরু হয়েছে আইনি ও বাণিজ্যিক লড়াই।

Read More »
অপারেশন সিঁদুর: মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত, ভারতীয় প্রত্যাঘাতে কেঁপে উঠল বহওয়ালপুর!
Breaking News

অপারেশন সিঁদুর: মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত, ভারতীয় প্রত্যাঘাতে কেঁপে উঠল বহওয়ালপুর!

ভারতের অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ২১টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস। জইশ প্রধান মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত। বহওয়ালপুরে চালানো এই হামলায় আজ়হার বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা।

Read More »
‘অপারেশন সিঁদুর’: গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত, সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন দুই ‘অগ্নিকন্যা’
Breaking News

‘অপারেশন সিঁদুর’: গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত, সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন দুই ‘অগ্নিকন্যা’

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত চালালো ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নিখুঁত স্ট্রাইক। সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

Read More »
দেশ

ভারতজুড়ে ২৫৯টি স্থানে নিরাপত্তা মহড়া, পশ্চিমবঙ্গেও তৎপরতা চরমে—পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জোরদার প্রস্তুতি

পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার, সেনা-আসামরিক যৌথ মহড়া, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা।

Read More »
দেশ

দেশপ্রেমের নতুন সংজ্ঞা: সোশ্যাল মিডিয়াতেই লড়াই, আপনি কি প্রস্তুত ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ হতে?

দেশের বিরুদ্ধে অনলাইনে চলতে থাকা বিদ্বেষমূলক প্রচার আর বরদাস্ত করবে না কেন্দ্র। এবার যে কেউ, যেকোনো জায়গা থেকে দেশের পাশে দাঁড়াতে পারেন—হোক সেটা বাড়ির সোফা, অফিসের ডেস্ক কিংবা মোবাইলের স্ক্রিন। কারণ, ‘ডিজিটাল যুদ্ধ’ এখন শুরু হয়েছে, এবং এই যুদ্ধে সেনা শুধুই সীমান্তে নয়—রাস্তায় নামবেন আপনি, আমিও।

Read More »
error: Content is protected !!