শুনে অবাক মনে হলেও এটাই সত্যি। রোজ সকালে ঠিক ঘুম থেকে উঠে যে ভাবে আপনি বাজার করতে আপনার কাছের বাজারে গিয়ে শাক-সব্জি থেকে মাছ নিজের হাতে তুলে নেরে ঘেঁটে ভালো করে দেখে কেজি প্রতি দাম দিয়ে বাজার করেন ঠিক তেমন ভাবেই একটি বাজার আছে যেখানে গেলে আপনি ঠিক শাক- সব্জি মাছের মত নেরে ঘেঁটে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে পারবেন তাও আবার সব্জির থেকে সস্তা দরে। আর বাজার টি কোন অংশেই আমাদের হাতিবাগান বা নিউমার্কেটের থেকে কম নয়। ফারাক শুধু একটাই এখানে শুধু মাত্র অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি ও বিক্রি করা হয়।
এই মুহূর্তে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের সেনা বাহিনীর প্রথম পছন্দ হল কালাশনিকভ রাইফেল বা AK 47 রাইফেল । কারণ এই রাইফেল টি খূব সহজে বহন করা যায়, জলের মধ্যেয় ডুবিয়ে রাখলেও এর কর্মক্ষমতা একই থাকে, অটোম্যাটিক বা ও সেমি অটোম্যাটিক দুই মোডেই ইচ্ছামত ব্যাবহার করা যায় এছাড়া এর মারণ ক্ষমতা ৯০% এবং এই রাইফেলে গ্রেনেড ছোঁড়ার সুবিধাও আছে। বর্তমানে এই রাইফেলের বাজার মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় ২০০০০০ টাকা সেখানে এই বাজারে আপনি এই রাইফেল পাবেন মাত্র ৩০৫০০ টাকায় । কি ভাবছেন ? কিনবেন নাকি ? তাহলে আপনাকে পাকিস্তানের ‘’দারা আদম খেল’’ এ আপনাকে স্বাগত। বিশ্বের এবং পাকিস্তানের সব থেকে বড় বেআইনি আগ্নেয় অস্ত্রের বাজার। যদিও পাক সরকার অর্থনীতি কে চাঙ্গা করতে এদের কে আইনি স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছেন। আসুন এক নজরে জেনে নেওয়া যাক এই বাজার সম্পর্কে।
’দারা আদম খেল’’ ইসলামাবাদ থেকে ২০০ কিমি দূরেই, আফগাণীস্থান সীমান্তে অবস্থিত এক আদিবাসী সম্প্রদায়ের গ্রাম । এখানকার বাসিন্দারা – একাধিক পুত্র সন্তান ও ততগুণ বন্দুকে বিশ্বাসী । সুতরাং সামান্য তর্কেই যে যুদ্ধের শুরু হতে পারে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী দারা আদম খেল এ ভ্রমণ পীপাষূ বা বাইরে থেকে আসা মানুষ দের প্রবেশ নিষেধ এবং দিনে বেশ কয়েক বার স্থানীয় প্রশাসনিক দফতরের লোকজন বা স্থানীয় পুলিস টহল দেন কিন্তু মাথায় রাখবেন রাষ্ট্রের নাম পাকিস্তান। সামান্য কিছু হাতে দিলেই ছাড় পেয়ে যাবেন। তবে কোন ভাবেই খূব একটা নিরাপদ জায়গা নয় এই দারা আদম খেল। ২ কিমি জূড়ে এই দারা আদম খেল বাজার কয়েক শতাব্দী ধরে আগ্নেয়াস্ত্র আর নিষিদ্ধ নেশার [ হেরোইন / হাসিস / চরস ] এর ব্যবসা করে আসছে। এখানে দেশী বন্দুক মানে ওয়াণ শাটার থেকে শুরু করে চাইনিজ নাইন এম এম পিস্তল, গ্লোক এমনকি এঊএস-এ তৈরি এম১৬ পর্যন্ত তৈরি করা হয় তাও আসলের থেকেও ভালো মানের এবং সস্তায়। এখান থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন উগ্রপন্থী দল থেকে শুরু করে নানান অপরাধীর দল অস্ত্র আমদানি করিয়ে থাকে। চাহিদা এতই বেশী যে একজন ষাটোর্ধ বৃদ্ধা দিনে ৪০০০ গুলি তৈরি করতে পারেন। এমনকি রাশিয়ার পেন গান ও এখানে সস্তায় পেয়ে যাবেন।
যাইহোক, সব মিলিয়ে যদি চান সাথে একটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র রাখার তাহলে একবার ঘুরে আসতেই পারেন- দারা আদম খেল ।