বিনোদন জগতে দৈনন্দিন নানা রকমের অকল্পনীয় কাজ হয়ে থাকে । কখনও অর্থ উপার্জনের জন্য আবার কখনও নিজেকে কেরিয়ারের প্রতিযোগিতায় একেবারে সামনের সারি তে রাখার জন্য। জেনে বুঝেই অনেকেই অনেক সময় নানান তার্কিক সমালোচনার জায়গাও তৈরি করেন। এর আগেও বলিউডে নগ্নতার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন অনেকেই । কোন এক সময় কলকাতার একটি বিখ্যাত মাসিক বিনোদন ”ম্যাগাজিন” নিগ্নতার দায় নিয়ে বেশ কিছুবার সমালোচনাও করেছিল ৮০-র দশকে ।
তৎকালীন সময়ে রেখার ”উৎসব” চলচিত্র এবং পরবর্তী কালে মিরা নায়ারের কামসুত্র চলচিত্রে নগ্নতা দেখানোর জন্য ভারতের সনাতনী হিন্দু সমাজ বেশ কিছু সিনেমা হলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। বেশ কিছু জায়গায় প্রতিবাদ ও পথ অবরোধ ও করেছিল কারন প্রকাশ্যে নগ্নতা দেখানো ভারতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে।
নগ্নতা তো দূর, চলচিত্রে প্রকাশ্যে চুম্বনের দৃশ্য এক কালে নিষিদ্ধ ছিল। পরবর্তী কালে আধুনিক কালের আগমনে চলচিত্র জগতের সেন্সর বোর্ড গল্পের প্রয়োজনের খাতিরে কিছু প্রাপ্ত বয়স্ক দৃশ্য কে চলচিত্রে অনুমতি প্রদান করতে থাকেন। কিন্তু সেখানেও রয়েছে কিছু সময় ও নিয়মানুবর্তিতা যা সকল প্রযোজক ও পরিচালক কে মেনে চলতেই হয়।
এর আগেও একটি বিজ্ঞাপন শুট করে দেশের দুই বিখ্যাত ভারতীয় মডেল বেশ বিপাকে পরেছিলেন। সেই সময় সামাজিক মাধ্যম না থাকায় খবরের কাগজে সেই বিজ্ঞাপন বেরোবার সাথে সাথেই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় এমনকি সেই বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান কেও জনসাধারণের কাছে ক্ষমা চেয়ে সংবাদ পত্রে নোটিশ দিতে হয়েছিল কারন তারা ভারতীয় সংস্কৃতির ভাবমূর্তি তে অজান্তেই আঘাত করেছিলেন।
এবার সেই তালিকায় নাম তুললেন বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা রনবীর সিং । বিখ্যাত হয়েছেন অভিনয় করে নয় বরং বারং বার তার নানা রকমের উদ্ভট কাজ কর্মের জন্য। রনবীর সিং এখনও অবধি যে কটি চলচিত্রে কাজ করেছেন তার সব কটি বক্স অফিসে খুব একটা বেশি দাগ কাটতে পারেনি শুধু মাত্র তার উদ্ভট কাজ কর্ম যেমন হঠাত করে মহিলা দের স্কার্ট পরে বা বিধকুটে কোন পোশাক পরে যা কোন ভাবেই তাঁকে মানাচ্ছে না আবার কখনো জঙ্গলের মধ্যেয় একাকী জোকস বলা যেখানে সেই জোকস শুনে হাসার মত কেউ নেই তার সাথে জঙ্গলের মধ্যেয় বেয়ার গ্রিলস কে চুমু খাবার জন্য তাড়া করা এছারাও কনডমের অদ্ভুত বিজ্ঞাপন করে নিজেকে প্রতিযোগিতায় সামনের সারিতে রাখতে চান । এবার সব কিছুর সিমা লঙ্ঘন করে গেলেন তিনি।
বিদেশী একটি অনলাইন ম্যাগাজিনের জন্য নিজেকে একেবারেই নগ্ন করে ক্যামেরার সামনে নিজেকে উপস্থাপন করলেন রনবীর সিং । শুটের পর নাকি তিনি শুটিং ফ্লোরে উপস্থিত সকলকেই আলিঙ্গন ও করেছেন আবার এক মহিলা সাংবাদিক কে মজার ছলে চুমু খাবারও চেষ্টা করেছেন। যদিও এহেন খ্যাতনামা নায়কের থেকে চুমু, কেরিয়ারে যথেষ্ট গতিবেগ বাড়িয়ে দিতে পারে তাই হয়তো সেটা হত উপরি পাওনা।
প্রসঙ্গত আসা যাক ছবির আস্তিক বিশ্লেষণে ঃ
স্থির ছবির ক্ষেত্রে নগ্ন শরীর নিসন্দেহে একটি শিল্পের অঙ্গ । কিন্তু এখানে যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে ছবির কম্পজিশন কোন ভাবেই ঠিক নেই। কালীনের ওপর নিম্নাঙ্গ বা যৌনাঙ্গ ঢেকে নিজেকে যেভাবে উপ্সথাপন করেছেন রনবীর সিং তা সঠিক হলেও এই ছবি গুলি একবারেই শিল্প বা কলাকৃতির মধ্যেয় পরে না । এই ছবি প্রকাশ করার কোন অর্থ অন্তত আমাদের জানা নেই ।
ছবিতে ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ছবির বাচকগ্রাউন্ডের প্রায় সবটাই দৃশ্যমান যা সম্পূর্ণ ভাবে শিল্প কলা ফটোগ্রাফির বিরোধী।
ক্যামেরার দৃষ্টি ভঙ্গী সঠিক নয় এবং আঙ্গেল ও সঠিক না ।
এবং যে আলর ব্যাবহার করা হয়েছে তাও সঠিক না । যদি এ গুলি অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় ছবি হয় তাহলে এই ছবি প্রচার করে আবারো নতুন বিতর্কে এলেন রনবীর সিং।
কারন এবার হয়তো ভারতীয় সংস্কৃতির ভাব মূর্তিতে আঘাত করার অভিযোগ উঠতে পারে। রনবীরের এই বীরত্ব দেখে অন্য যুবক রাও তাদের নগ্ন ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করতে পারেন। আমাদের দেশে নগ্নতা নিয়ে আলোচনা করা অন্যায় নয় কিন্তু নগ্নতা কে দেখানো অন্যায় তাই ভারতীয় আইনে রনবীরের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ আইনি পদক্ষেপ ও নেওয়া যেতেই পারে।
কিন্তু এই ছবি নেটে ভাইরাল হবার ১৬ ঘণ্টা পরেও গো রক্ষা সমিতি বা আদর্শ সনাতনী হিন্দু সমাজ মুখে কুলুপ এঁটে দিবা নিদ্রায় আছে বলেই আমাদের ধারনা।