Home » ঐতিহ্য ডাস্টবিনে, নাকি ঐতিহ্যই ডাস্টবিন !

ঐতিহ্য ডাস্টবিনে, নাকি ঐতিহ্যই ডাস্টবিন !

স্বর্ণালী পাত্র,কলকাতা : কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি ছবি অনেকের নজর কারে। ছবিতে দেখা যায় একটি ধামসা। যাতে লেবেল করে লেখা আছে “১৯৫৪ সালে রক্তকরবী নাটকে ব্যবহৃত ধামসা ” এবং ছবির ক্যাপশন পড়ে জানা যায় সেটি রবীন্দ্র সদনে রাখা রয়েছে। এখন আপনাদের মনে হতেই পারে এতে নজর কারার কি আছে? আছে। কারণ ছবিতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ৬৯ বছর পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এই ধামসাটির মধ্যে ফেলা রয়েছে কাগজের কাপ,প্লাস্টিক এর বোতল আরো টুকি টাকি কিছু আবর্জনা

বাংলা এবং বাঙালি জাতির ইতিহাসের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে শিল্প,সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে গান, নাচ,আবৃত্তি, নাটক ইত্যাদির চর্চা। বহু গুণী মানুষ তাদের ছাপ রেখে গেছেন এই বাংলায়। যা আমাদের কাছে সম্পদের সমান,যার সাথে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার উজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৫৪ সালে শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় এমনই একটি বিখ্যাত নাটক হলো “রক্তকরবী”। বহুরূপী- এর প্রযোজনায় যা ছিল মূলত ওই নাটকটির প্রথম স্মরণীয় এবং সম্ভবত শ্রেষ্ঠতম মঞ্চায়ন। বহুরূপীর এই প্রযোজনা রবীন্দ্র-নাটককে বাংলা রঙ্গমঞ্চে সুপ্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি বাংলা থিয়েটারের গতিপথও বদলে দেয়। এরূপ ঐতিহ্যবাহী নাটকে ব্যবহৃত যেকোনো সরঞ্জামই আজকের দিনে দাড়িয়ে আমাদের কাছে সম্পদের সমান। যা আমাদের যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করে রাখা উচিত।
তবে, ছবিটি লক্ষ্য করলে দেখা যাচ্ছে,৬৯ বছর পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এই ধামসা টি পরিণত হয়েছে ডাস্টবিনে।

সূত্র মারফত জানা যায়,ছবিটি ২৩ শে এপ্রিলের।ধামসাটিকে এহেন অবস্থায় দেখে তারা সেটি পরিষ্কার করে এবং কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরবর্তীকালে,জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ নাকচ করে ও জানায় এরকম কোনো জিনিস সেখানে কখনই রাখা ছিল না। আমরা সেই স্থান ঘুরে দেখতে চাওয়ায় প্রথমে বাঁধা দিলেও পরে তারা রাজি হয়ে যায়। তবে সেখানে ছবির মতন কোনো ধামসা নজরে আসেনি।

RABINDRA SADAN


এখন প্রশ্ন উঠছে ছবিতে দেখানো ধামসাটির অবস্থান সত্যিই রবীন্দ্র সদন ছিল কিনা। কর্তৃপক্ষের দাবি,ছবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ফটোশপ করা হয়েছে। তবে পোস্টের মালিক জানায় তথ্য সম্পূর্ণ নির্ভুল। ছবির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ভেবে দেখুন তো, আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের বিবেক। বাংলার সম্পদ, বাঙালির ঐতিহ্য রক্ষার দায় কি কারোর একার? মর্ম বুঝে সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত। সেখানে তথাকথিত শিক্ষিত নবীন প্রজন্মের ঠিক কতটা শিক্ষা আছে ? প্রশ্ন উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!