পুজো এলেই আমাদের সকলের মনেই চলে আসে ছোট বেলার স্মৃতি। কারন আমরা পুজোয় সব থেকে বেশি আনন্দ করেছি ছোট বেলাতেই। বড় দের দেওয়া নতুন জামা কাপড়। নতুন জুতো পড়ে পায়ে ফোসকা পড়ে যাওয়া কিন্তু সব কিছু নিয়েই ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখা। পুজো এলেই আমাদের হাতে উঠে আসতো ক্যাপ বন্দুক। সেই নিয়েই পাড়ার পুজো মন্ডপে সারাক্ষণ চোর পুলিশ খেলা। কিন্তু এত কিছুর পরেও আমাদের অনেকের লোভ থাকতো মা দুর্গার হাতে সাজানো অস্ত্রের ওপর। ওই অস্ত্র দিয়েই তো মা দূগ্গা অসুর কে বধ করেছিলেন। তাই আমরা মনে মনে ভেবেই রাখতাম ঠাকুর বিসর্জন গেলেই পাড়ার বড়দের কে যা হোক করে ম্যানেজ করে একটা পছন্দের অস্ত্র নেব। নিয়েছিও বেশ কয়েকবার। তবে কিছুদিন পরেই জং পরে গেলে আর ভালো লাগতো না।
অনেকে আবার মা দুর্গার হাতের খর্গ নিয়ে বাড়ির মূল প্রবেশ দ্বারের মাথায় লাগিয়ে রাখতেন। বলতেন এতে কোন কিছু খারাপ গৃহে প্রবেশ করবে না।
এখন আর সেই দিন নেই। পাড়াতে পুজো হয় কিন্তু সেপুজো তে পাড়ার সকলে যুক্ত হতে পারেনা। থিমের পুজোর মন্ডপে থাকে না বসার জায়গা। যাই হোক, আজ আমরা খুজে পেয়েছি বাংলার এমন একটা জায়গা যেখানে সারা বছর ধরে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে মা দুর্গার জন্য অস্ত্র তৈরী হয়।
হাওড়ার বোয়ালিয়া গ্রাম। বীরশিবপুর গ্রাম স্টেশন থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে দামোদর নদির ধারে অবস্থিত এই বোয়ালিয়া গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই গ্রামের মানুষরাই সারা বছর ধরে মা দুর্গা সহ নানান দেব দেবীর অস্ত্র তৈরী করেন নিপুন দক্ষতার সাথে যা পুজোর সময় চলে আসে বড়বাজার, কুমারটুলি হয়ে পৃথিবীর নানান জায়গায়। এবং আমরা মা দুর্গা কে দেখতে পাই অস্ত্র দিয়ে সুসজ্জিত রুপে।
আপনাদের জন্য রইলো কিছু ছবি। পারলে একদিন ঘুরেও আসতে পারেন এই বোয়ালিয়া গ্রাম থেকে।