ঝাড়খন্ডে ভৌতিক রহস্য – পড়লেই মনে হবে এ যেন সত্যজিত রায়ের নতুন কোন ভৌতিক গল্পের নাম যার রহস্য উন্মোচন করবেন স্বয়ং বিখ্যাত গোয়েন্দা ফেলুদা সাথে তোপসে আর জটায়ু। না একেবারেই সেরকম টা নয় বরং বিষয় টি সত্যি গায়ে কাঁটা দেবার মতোই।
আমরা অনেকেই গল্পের বই, চলচ্চিত্র ও আত্মীয় পরিজন দের থেকে এই ভুত নিয়ে অনেক কিছু শুনে এসেছি। ইতিমধ্যে অনেকের সাথে ঘটেছে কিছু ভুতুড়ে কান্ডও যার রহস্য উন্মোচন হয়নি। পৃথিবীতে বহু বিজ্ঞানী এই ভুত বা বলা ভালো প্যারানরমাল বিষয়টি কে ইদানিং কালে গুরুত্ব দিলেও শহরের বেশ কিছু বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ এই বিষয় টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তারা এখনও এই বিষয় টিকে কুসংস্কার আর বুজরুকি বলে চালিয়ে দিতেই বদ্ধপরিকর কোন এক অজ্ঞাত কারনে। আদৌ “ভুত” আছে না নেই এ নিয়ে তর্ক বহুদুর। তবে সব তর্ক এড়িয়ে বলিউড চলচিত্র জগত এমনকি কোলকাতা পুলিশও ভৌতিক তদন্তের জন্য শরনাপন্ন হয়েছিলেন এই ভৌতিক গবেশনা দল ডিটেকটিভস্ অফ্ সুপার ন্যাচরালের। যাদের প্রধান উদ্দেশ্য হল আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া অদ্ভুড়ে কান্ডকারখানা (সে ভৌতিক হোক বা কালাজাদু ) থেকে পর্দা উন্মোচন করে মানুষ কে সচেতন করা এবং অজানা বিষয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবগত করে তাদের মধ্যে থেকে ভয় দুর করা।
এর আগেও ডিটেকটিভস্ অফ্ সুআর ন্যাচরাল এর প্রধান দেবরাজ সান্যাল জানিয়ে ছিলেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারনে মানুষের মধ্য অবচেতন মনের বিক্রিয়া দেখা গেছে তবে কোথাও কোথাও তারা “তাঁদের” উপস্থিতি টের পেয়েছেন তাদের বিভিন্ন রকম বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের মাধ্যমে। এমনকি তাদের সাথে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের মাধ্যমে কথার আদান প্রদানও হয়েছে।
কিছুদিন আগেই ঝাড়খন্ডে হাইকোর্টের একটি নতুন ভবন নির্মান হয়। শোনাযাচ্ছে ঝাড়খন্ডের এই হাইকোর্টের ভবনটি তৈরী হয়েছে একটি পরিত্যক্ত কবরখানার জমির ওপরে বা পাশের কোন জমিতে। উদ্বোধনের পর ওখানে কর্মরত আইন বিশেষজ্ঞদের অনেকের অনেক রকমের অভিজ্ঞতা হলেও সেকথা তারা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে নারাজ। এর পরেই তড়িঘড়ি ঝাড়খন্ড হাইকোর্টের নবনির্মীত ভবনে প্রধান বিচারপতি একটি সর্বধর্ম পুজোর আয়োজন করেন যা ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয়। আর হাইকোর্টের এই পুজোকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বিতর্ক। গুঞ্জন শুরু হয় এই হাইকোর্ট ভবন জুড়ে রয়েছে অতৃপ্ত আত্মাদের বসবাস আর যেহেতু এই ভবন পরিত্যক্ত কবরস্থানের জমিতে নির্মিত তাই এই গুঞ্জন হু হু করে ছড়িয়ে পড়ে এবং তারপরেই দেশের সব ধর্মের সর্বাধিকারী পন্ডিতদের নিয়ে শান্তি যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। তবে সাংবাদিকদের কাছে আইনজীবীরা প্যারানরমাল বা অদ্ভুতুড়ে বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি বরং তারা এটা গুজব বলেই উল্লেখ করেছেন।
এই খবর পাবার সাথে সাথেই, ভারতবর্ষের তথা কলকাতার বিখ্যাত প্যারানরমাল তদন্তকারী দল ডিটেকটিভস্ অফ্ সুপারন্যাচরাল ঝাড়খন্ড হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কে লিখিতভাবে আবেদন জানান যাতে তাদের কে ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট ভবনটি তদন্ত করে দেখার অনুমতি দেন। যদিও ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট থেকে এবিষয়ে এখনও অনুমতি না মিললেও ঝাড়্গখন্ডে অন্য একটি স্থানে ভৌতিক তদন্তের আগামী সপ্তাহেই ঝাড়খন্ডে রওনা দিচ্ছে ডিটেকটিভস্ অফ্ সুপার ন্যাচরাল।
এর আগে কোলকাতা হাইকোর্ট ভবনের বেশ কিছু পরিত্যক্ত বন্ধ ঘর যা ইংরেজ আমল থেকে অব্যবহত ছিল সেগুলির মধ্য কয়েকটি খোলার পর ১১ নম্বর ঘরটি নিয়ে বেশ কিছু গুজব রটে। ডিটেকটিভস্ অফ্ সুপার ন্যাচরালের প্রধান দেবরাজ সান্যাল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছেও সেই ঘরটি তদন্ত করে দেখার লিখিত অনুমতি চেয়েছেন।