কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম গোয়েন্দা বিভাগ কয়েক দিন আগেই “ডি কোম্পানি” বা ভারতের অন্যতম ডন দাউদ ইব্রাহিম কে ধরিয়ে দিলে বা তার খোঁজ দিলে ২৫ লক্ষ্য টাকার পুরস্কার ঘোষনা করেছিল। এর পরেই সামনে এলো আর এক চমকে দেবার মতো ঘটনা।
1993 সালের মুম্বাই তে সিরিয়াল বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায় মূল চক্রী ছিল টাইগার মেমন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অভিপ্রেতে এবং হিন্দুদের ওপর প্রতিশোধ নিতেই টাইগার মেমন মুম্বাই তে সিরিয়াল বোমা বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করে। সেই ষড়যন্ত্রে টাকা ও আর ডি এক্স এর মতো সাংঘাতিক বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিল দাঊদ । ১৯৯৩ সালের ১২ই মার্চ সেই বিস্ফোরণে প্রায় ৭০০ জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন আহত ২৭০০ জনের বেশী ।
মুম্বাই শহরের চারিদিকে বোমা লাগিয়ে ১১ই মার্চ টাইগার মেমন তার ভাই ইয়াকুব মেমন সহ তার সমগ্র পরিবার নিয়ে দুবাই পালিয়ে যায়। দাউদ আগেই ভারত ছেড়ে দুবাই তে আশ্রয় নিয়েছিল। পরবর্তীকালে দাউদ সহ টাইগার মেমন সপরিবারে পাকিস্তানের শরনাপন্ন হয়। যদিও আজও পাকিস্তান সে কথা অস্বীকার করে এসেছে।
অন্যদিকে টাইগার মেমনের ভাই ইয়াকুব মেমন ভারতে ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করেন। ইয়াকুব মেমন কে এয়ারপোর্টে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীকালে ২০০৫ সালে ইয়াকুব মেমন কে মুম্বাই সিরিয়াল বোমা বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত আসামী হিসাবে ফাসি দেওয়া হয়। যদিও সেই সময় দেশের বেশ কিছু সংখ্যালঘু সমাজের মানুষ এই বিচারের প্রতিবাদ করলেও ফাসি কার্যকর হয়েছিল।
এবার সেই ইয়াকুব মেমনের সমাধিস্থল নিয়েই চমকে দেওয়া তথ্য সামনে এলো।
ইয়াকুব মেমন কে যেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছিল সেই কবরস্থানের ট্রাষ্টি সদস্য নবরঙ্গী বাবুর কাছে ইয়াকুব মেমনের সম্পর্কে আর এক ভাই যার নাম রউফ মেমন তিনি যোগাযোগ করেন এবং নবরঙ্গী কে প্রথমে অনুরোধ ও পরে ডি কোম্পানির হুমকি দিয়ে বলেন ইয়াকুব মেমনের সমাধিস্থল কে সাধারণ সমাধিস্থল না রেখে সেটিকে সাজিয়ে স্মৃতি সৌধ করে দিতে। কিন্তু নবরঙ্গী জানতেন ইয়াকুব একজন অপরাধী সেই কারনে তিনি রউফ মেমন কে না করেদেন। এর পরেই নবরঙ্গী কে রউফ মেমন জানায় তাকে “ভাই” ফোন করবে। এরপরেই নবরঙ্গী মুম্বাই ATS কে লিখিত অভিযোগ করেন কিন্তু তাতে কোন তদন্ত হয়নি।
এরপরেই ওই সমাধিস্থল থেকে নবরঙ্গী কে কৌশলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাকে ট্রাষ্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়। নবরঙ্গীর দাবী ২০১৯ অবধি খুব সাধারণ সমাধি ছিল ইয়াকুব মেমনের যা আজ মার্বেল পাথর আর লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে। এই নিয়ে আবারও সরগরম হচ্ছে দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি। তাহলে কি দাউদের আতঙ্ক আজও মুম্বাই তে রয়েছে?