শোনাযায়, সেই সময় শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব দুরারোগ্য ব্যাধি কর্কট অর্থাৎ ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর গলাতেই হয়েছিল এই ক্যৃনসার রোগের বাসা। বেশ কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ থাকার পর, ১৮৮৬ সালের ১লা জানুয়ারিতেই তিনি একটু সুস্থ বোধকরায় তাঁর শিষ্যদের সাথে নিয়ে একটু হাটতে বেরিয়েছিলেন। অনান্য গৃহশিষ্যদের মধ্যে সেদিন ছিলেন নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ। উদ্যানবাটির একটি অশ্বত্থ গাছের কাছে পৌঁছে শ্রী রামকৃষ্ণ তাঁর শিষ্য গিরিশ ঘোষ কে প্রশ্ন করেন – তোমার কি মনে হয়, আমি কে?.. এই প্রশ্নের উত্তরে গিরিশ ঘোষ বলেছিলেন – আমার বিশ্বাস, আপনি মানব কল্যানের জন্য মর্তে অবতীর্ণ ঈশ্বরের অবতার। এই উত্তর শুনে শ্রীরামকৃষ্ণ – তোমাদের চৈতন্য হোক – বলেই সমাধিস্থ হন এবং তার প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন।
শ্রীরামকৃষ্ণের এই স্পর্শে সেদিন সকল শিষ্যদের মধ্যে অদ্ভুত এই আধ্যাত্মিক অনুভূতির সঞ্চার হয়েছিল। এই ঘটনায় গিরিশ ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্রী রামকৃষ্ণের আর এক শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত, এই ঘটনায় উপস্থিত থেকে রামচন্দ্র দত্ত এই দিনটির নাম দেন কল্পতরু দিবস যা সেই থেকে আজও সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে।
প্রতি বছর ইংরেজী নববর্ষের প্রথম দিনেই শ্রীরামকৃষ্ণ কল্পতরু হয়ে শিষ্যদের যাবতীয় মনোবাঞ্জা পুরন করেন এই বিশ্বাসেই লাখ লাখ ভক্ত ছুটে আসেন দক্ষিনেশ্বরে মা ভবতারিনীর সাথে শ্রীরামকৃষ্ণের এই পীঠস্থানে। আজ পয়লা জানুয়ারিতে ভীড়ছিল উপচে পড়া। মা ভবতারিনীর মন্দিরে পুজো দেবার জন্য লাইনের দীর্ঘতা মন্দির প্রাঙ্গন থেকে বেরিয়ে বালি ব্রিজ ছাড়িয়ে চলে যায়। শুধুমাত্র দক্ষিনেশ্বরেই নয়, কাশীপুর উদ্যানবাটি তেও সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে কল্পতরু উৎসব। ইংরেজি নববর্ষ যেন সকলে সুখ সাচ্ছন্দ ও সুস্থতার সাথে কাটাতে পারেন সেই কামনা নিয়েই ভক্তদের সমাগম।