পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ গত ৪ঠা জুন নজরুল মঞ্চে ধূমধাম ভাবে অনুষ্ঠিত হল ২০ তম টেলি সিনে অ্যায়ার্ড (20th Tele Cine Award)। এদিন নজরুল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দুই বাংলার সব বিখ্যাত মানুষজন। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভিআইপি গেস্ট সকলের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়েছিল নজরুল মঞ্চ। উপস্থিত ছিল দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস টিম।
অনুষ্ঠানটি সুদক্ষ হাতে সঞ্চালনা করেছে অভিনেতা ঈশান মজুমদার, রোহণ ভট্টাচার্য এবং অভিনেত্রী অমৃতা চ্যাটার্জী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিশেষ পুরষ্কার(special award) দিয়ে প্রবীণ এবং শ্রদ্ধেয় কিছু অভিনেতা ও পরিচালক দের সম্মানিত করা হয়। সেই দলে ছিলেন সন্দীপ জসয়াল, ফাহিম ইসলাম, অভিনেতা অরিজিৎ গুহ, অভিনেত্রী সোহাগ সেন এবং পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী। জীবন কৃতি সম্মান (life time achievement)-এ সম্মানিত করা হয় বাংলাদেশী অভিনেতা আব্জাল হুসেন এবং ভারতীয় অভিনেতা দীপঙ্কর দে কে।
এরপর বিভিন্ন বিভাগে পুরষ্কার দেওয়া হয়। সঙ্গীত বিভাগে সেরা সঙ্গীত পরিচালক পুরষ্কার পান অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বেলাশুরু সিনেমার জন্য। সেরা গায়ক ও গায়িকার পুরষ্কার পান যথাক্রমে অনুপম রায় এবং ইমন চক্রবর্তী। সেরা প্রমিসিং গায়কের পুরষ্কার পান গায়িকা অমৃতা দাস। সঙ্গীত বিভাগে গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সেরা গীতিকারের পুরষ্কার(Pulak Bandhopadhyay Memorial Award) পান হৃৎপিণ্ড ছবির জন্য রণজয় ভট্টাচার্য।
সঙ্গীতের পর এবার আসে চলচ্চিত্র জগত। দর্শকদের বিচারে সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয় প্রজাপতি সিনেমাটি এবং বিচারকদের বিচারে সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয় অপরাজিত চলচ্চিত্রটি। সেরা পরিচালক অপরাজিত ছবির জন্য অনিক দত্ত এবং সেরা প্রমিসিং পরিচালক প্রজাপতি ছবির জন্য অভিজিৎ সেন পুরস্কৃত হন। সেরা সহ অভিনেত্রী এবং সহ অভিনেতার পুরষ্কার পান যথাক্রমে কিশমিশ ছবির জন্য অঞ্জনা বসু এবং প্রজাপতি ছবির জন্য খরাজ মুখোপাধ্যায়। সেরা প্রমিসিং অভিনেত্রীর পুরষ্কার পান রাবন সিনেমার জন্য লহমা ভট্টাচার্য। এছাড়া একটি বিশেষ পুরষ্কার ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সেরা কৌতুক অভিনেতার পুরষ্কার পান অভিনেতা অনির্বাণ চক্রবর্তী একেন বাবু ছবির জন্য। চলচ্চিত্রের সেরা শিশু শিল্পীর পুরষ্কার পায় হাবজি গাবজি ছবির জন্য সামন্তক দ্যুতি মৈত্র।
ছোটপর্দার সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয় মিঠাই ধারাবাহিকের আদৃত রায় এবং সেরা অভিনেত্রী নির্বাচিত হন গাঁটছড়া ধারাবাহিকের সোলাঙ্কি রায়। ওয়েব সিরিজের সেরা অভিনেতা এবং অভিনেত্রী নির্বাচিত হন শিকারপুর ওয়েব সিরিজের জন্য অঙ্কুশ হাজরা এবং বারানসি জংশন ওয়েব সিরিজের জন্য অমৃতা চ্যাটার্জী। সেরা ওয়েব সিরিজ নির্বাচিত হয় ইন্দুবালা ভাতের হোটেল।
বাংলাদেশী অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী গায়ক গায়িকা পুরস্কৃত হন বাংলাদেশ বিভাগে। বাংলাদেশ বিভাগের বিশেষ পুরষ্কার পান গায়ক বাপ্পা মজুমদার, গায়িকা সামিনা চৌধুরী এবং অভিনেতা বাপ্পি চৌধুরী। এছাড়াও বাংলাদেশ বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরষ্কার পান বিদ্যা সিনহা সাহা মিম। সেরা অভিনেতার পুরষ্কার পান হাওয়া ছবির জন্য অন্যতম সেরা বাংলাদেশী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের কর্ণধার মৃণ্ময় কাঞ্জিলাল বলেন, ‘’ এই কুড়ি বছরে বহু মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। সবাইকে সাথে পেয়েছি এই পথ চলায়। আজ দেখতে দেখতে কুড়ি বছরে পা দিলাম। যারা ভোট দিয়েছেন এবং যারা পুরষ্কার পেয়েছেন সকলকে ধন্যবাদ। অনেক ভালোবাসা সবার জন্য।‘’ পুরষ্কার গ্রহিতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র জগতের অনেক কলাকুশলীরা। সঙ্গীত শিল্পী অমিত গাঙ্গুলি এবং জোজোর গান দর্শকদের মাতিয়ে দিয়েছে। অভিনেতা ওম এবং অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়ের অসাধারণ নাচের পারফর্মেন্স দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। সব মিলিয়ে একটি সুন্দর মনোরম সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে এদিন নজরুল মঞ্চে।