কেষ্ট মুখার্জী একজন প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। তিনি ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে ১৯০৫ সালের ৭ই আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে মূলত মাতাল চরিত্রে কৌতুক অভিনয় করার জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। তার সাথে পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের খুব ভাল সম্পর্ক ছিল এবং ঋত্বিক বাবু কেষ্ট মুখার্জির অভিনয়ের দক্ষতার জন্য তাকে ‘অযান্ত্রিক’ এ পাগল এবং “যুক্তি তক্কো আর গপ্পো” তে খুব ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সুযোগ দিয়েছিলেন।
জাঞ্জির (১৯৭৩), আপ কি কসম (১৯৭৪) এবং শোলে (১৯৭৫) চলচ্চিত্রগুলিতে কেষ্ট মুখার্জীর অভিনয়ের দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে গেছে। মজার ব্যাপার হলো ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কোনদিনই মদ্য পান করতেন না।
“তিসরি কসম” (১৯৬৬) ছবিতে কেষ্ট মুখার্জী, রাজ কাপুরের সাথে অভিনয় করেছিলেন। “সাধু অর শৈয়তান” এবং পড়োশন (১৯৬৮) চলচ্চিত্রে তিনি কিশোর কুমারের অন্তরঙ্গ বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। মেহমুদের ছবি, “বোম্বে টু গোয়া” তে তার যাত্রীর ভূমিকাটি খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র, ‘মুসাফির'(১৯৫৭)-এ কেষ্ট মুখার্জী এক স্ট্রিট ডান্সার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে পরিচালক অসিত সেন তাকে “মা অর মমতা” – ছবিতে (১৯৭০) প্রথমবার একজন মাতালের চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
কেষ্ট মুখার্জীর ছেলে বাবলু মুখার্জিও কৌতুক অভিনেতা এবং তিনি বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ও করেছেন যেমন দিল। তবে শুষ্মিতা মুখোপাধ্যায় তার কন্যা ছিলেন না এটি একটি ভুল ধারণা রয়েছে অনেকের মধ্যে।
যদিও কেষ্ট মুখার্জী অনেকগুলি চলচ্চিত্র করেছিলেন তবে শোলে (১৯৭৫), জাঞ্জির (১৯৭৩) এবং চুপকে চুপকে (১৯৭৫) তে অভিনয় করার জন্য সবচেয়ে বেশি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
তার অন্যান্য সিনেমা গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো,
মুসাফির (১৯৫৭) খাজানচি (১৯৫৮) রাখি অর রাইফেল (১৯৫৯) মাসুম (১৯৬০) পারখ (১৯৬১) আরতি (১৯৬২) আশিক (১৯৬২) প্রেম পত্র (১৯৬২) আসলি নাকলি (১৯৬৩) রাহু কেতু (১৯৬৪) বিবি আউর মাকান (১৯৬৬) মাঝলি দিদি (১৯৬৭) অপনী ঘর অপনী কাহানী (১৯৬৮) পরসান (১৯৬৮) পিনজরে কা পানচি (১৯৬৮) আনোখি রাত (১৯৬৯) মা অর মমতা (১৯৭০) মেরে হামসফার (১৯৭০) গুড্ডি (১৯৭১) লখন মে এক (১৯৭১) মেরে আপনে (১৯৭১) আনোখা মিলন (১৯৭২) বোম্বে টু গোয়া (১৯৭২) কোশিশ (১৯৭২) লালকার (১৯৭২) মেম সাহিব (১৯৭২) পিয়া কা ঘর (১৯৭২) সবসে বড় সুখ (১৯৭২) সনযোগ (১৯৭২) ইয়ে গুলিস্তান হামারা (১৯৭২) অচাণক (১৯৭৩) বারা কবুতর (১৯৭৩) চালাক (১৯৭৩) লফার (১৯৭৩) জঞ্জীর (১৯৭৩) আপ কি কসম (১৯৭৪) অপরাধী (১৯৭৪) কল গার্ল (১৯৭৪) চোর চোর (১৯৭৪) হামরাহি (১৯৭৪) ইমান (১৯৭৪) জীবন রেখা(১৯৭৪) ত্রিমূর্তি(১৯৭৪) আক্রমণ (১৯৭৫) চুপকে চুপকে (১৯৭৫) ধুতি লোটা অর চৌপাতি (১৯৭৫) দো ঠাগ (১৯৭৫) ক্যায়তে হ্যায় মুঝকো রাজা (১৯৭৫) কালা সোনা (১৯৭৫) মাজাঁক (১৯৭৫) প্রতিজ্ঞা (১৯৭৫) ক্যায়দ (১৯৭৫) শোলে (১৯৭৫) আজ কা মহাত্মা(১৯৭৬) আমানাত (১৯৭৬) অর্জুন পণ্ডিত (১৯৭৬) চরস(১৯৭৬) মিরা শ্যাম (১৯৭৬) আফাথ(১৯৭৭) চাচা ভাতিজা (১৯৭৭) চালা মুরারি হিরো বাননে (১৯৭৭) দিলদার (১৯৭৭) গুমরাহ(১৯৭৭) কিনারা (১৯৭৭) কিতাব (১৯৭৭) নামী চোর (১৯৭৭) নিয়াজ অর নামাজ (১৯৭৭) রাম ভরসে (১৯৭৭) আখ্রি ডাকু (১৯৭৮) আজাদ (১৯৭৮) দামাদ (১৯৭৮) দেবতা (১৯৭৮) প্রেম বন্ধন (১৯৭৮) দো লাড়কে দোনো কড়কে (১৯৭৯) দো শিকারি (১৯৭৯) দুনিয়া মেরি জেব মেইন (১৯৭৯) গোলমাল (১৯৭৯) হাম তেরে আশিক হ্যায় (১৯৭৯) সালাম মেমসাব(১৯৭৯) সারগাম (১৯৭৯) আপ কে দিওয়ানে(১৯৮০) দেশ দ্রোহী (১৯৮০) গঙ্গা অর সূর্য(১৯৮০) হাম নেহি সুধরেঙ্গে(১৯৮০) খুবসুরাত(১৯৮০) রেড রোজ (১৯৮০) দ্যা বারনিং ট্রেন (১৯৮০) কুদরাত (১৯৮১) ম্যায় অর মেরা হাতি (১৯৮১) মঙ্গলসুত্র (১৯৮১) নাসিব (১৯৮১) সানসানি: দ্যা সেনসেশন (১৯৮১) রকি (১৯৮১) জিনেকি কি আরজু (১৯৮১) ওয়ারদাত (১৯৮১) ডায়য়েল ১০০ (১৯৮২) দিল-ই-নাদান(১৯৮২) ঘাযাব(১৯৮২) ইত্যাদি।
তার অভিনয় জীবনে তিনি ১০০ টির ও বেশি চলচিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৯৮২ সালের ২ রা মার্চ মুম্বাইতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।