Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

পরিচালক মৃণাল সেনের সংসার টেনে ছিলেন অনুপ কুমার – বিশেষ প্রতিবেদন ।

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

আজ বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা স্বর্গীয় আনুপ কুমারের জন্ম বার্ষিকী। দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলসের তরফ থেকে রইল একটি বিশেষ প্রতিবেদন ।

অনুপ কুমার , বাংলার বিখ্যাত কমেডি বা কৌতুক অভিনেতা হিসাবে আমরা যাকে জানি তাকে আমরা অনেকেই প্রায় ভুলতে বসেছি। আজকের প্রজন্ম কি আদৌ চেনেন ? জানেন এই শিল্পি সম্পর্কে ? আজকে যারা বাংলা চলচ্চিত্রের মূল কাণ্ডারি হয়ে বাংলা ”ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি” চালাচ্ছেন তারা বাংলা চলচ্চিত্রের সেই সাদা কালো পর্দার সোনালি দিনের অমুল্য অভিনেতা অভিনেত্রী দের জন্য কততুকুই বা করেন এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা আজ খুব স্বাভাবিক তবে আজ থাক সেই বিতর্ক।

পরাধীন ভারতে ১৯৩০ সালের ১৭ই জুন জন্ম গ্রহন করেন অনুপ কুমার। আসল নাম  সত্যেন দাস । মূল নিবাস ছিল হুগলীর পান্ডূয়ায়।মা বিজয়া দেবী ও পিতা ধিরেন্দ্র নাথ দাস ছিলেন নজ্রুল গীতি শিল্পি ও সুরকার । পিতা বেতারে কর্মরত হওয়ায় তাদের চলে আসতে হয় উত্তর কলকাতায়। সেই সময় অনুপ কুমার পরতেন কলকাতার ডাফ স্কুলে । বর্তমানে এই স্কুল এখন শুধুমাত্র নারী শিক্ষা কেন্দ্র হয়ে গেছে।

বাড়িতে সঙ্গীত চর্চার সাথে সাথে যাতায়াত ছিল বিভিন্ন নাট্য ব্যাক্তিত্তের। সেখান থেকেই অভিনয় জগতের দিকে মন যায় ছোট্ট অনুপ কুমারের। ১৯৩৮ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সে, ধীরেন্দ্র নাথ গাঙ্গুলির পরিচালনায় ”হাল বাংলা” চলচ্চিত্রে তার প্রথম অভিনয় শুরু তার পর সেখান থেকেই তিনি অভিনয়ের শিক্ষা গুরু হিসাবে পেয়ে যান শিশির কুমার ভাদুড়ি কে।

এরপর হঠাৎ করেই  পিতা ধীরেন্দ্র নাথ দাসের বেতারে চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়ে যাওয়ায় সংসারে নেমে আসে চরম আর্থিক সঙ্কট। ৫ ভাই বোন এর সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মাত্র ১৪ বছর বয়সে। মাট্রিকুলেশন পাশ করার পরেই পেশাদারি অভিনয় করতে শুরু করেন অনুপ কুমার। অভিনয় করার স্বার্থেই নিজের নাম বদলে সত্যেন দাস থেকে করেছিলেন অনুপ কুমার। ১৯৪১ সালে পেশাদারি মঞ্চে ” টিপু সুলতান” নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। এর পর থেকে শ্রী রঙ্গম, বিশ্বরুপা , কাশীবিশ্ব নাথ মঞ্চে শুরু হয় নিয়মিত অভিনয় করা। অনুপ কুমার খুব কম করে ৫০ টি নাটকে পেশাদারি অভিনয় করেছিলেন তার মধ্যেয় উল্লেখযোগ্য হল – শ্যামলী, নুরজাহান, কনে বিভ্রাট, অঘটন, হটাত নবাব, জয় মা কালী বোর্ডিং, রাম শ্যাম জদু ও চন্দন পুরের চোর । নাটকে অভিনয় করতে করতেই তিনি তার বাকি ৪ ভাই বোনের পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে দেন। শুধু মাত্র অর্থনৈতিক কারনেই তিনি নাটক বা চলচ্চিত্রের কাহিনি খুব বেশি বাছাই করতে পারতেন না যে যেমন কাজের সুযোগ দিতেন তেমনই করতেন । অভিনেতা অনুপ কুমার দরদী মানুষ হিসাবেও ছিলেন এক অনন্য ব্যাক্তি। ছোট থেকেই নিজের সন্সারে অর্থনৈতিক অনটন দেখেছিলেন বলে নিজের সহকর্মী থেকে সাধারন মানুষের পাশে আপদে বিপদে সব সময় পাশে থাকতে চেষ্টা করতেন। সেই সময় বন্যা ত্রানের জন্যও বেশ কয়েকবার পথে নেমে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন অনুপ কুমার। এছারাও স্বর্গীয় পরিচলাক মৃণাল সেনের স্ত্রী ছিলেন অনুপ কুমারের মামাতো বোন, মৃণাল সেন তখন সদ্য চাকরি ছেড়ে পরিচালক হিসাবে নানান জায়গায় চেষ্টা করছিলেন তখন বেশ কিছু বছর মৃণাল সেনের সংসার টেনে ছিলেন অনুপ কুমার । যদিও মৃণাল সেনের কোন ছবি তেই অনুপ কুমার কে কোন দিন দেখা যায়নি। অনুপ কুমারের এই দরদি মন হওয়ার কারনে অনেকেই সেই সময় তাকে নানা ভাবে ব্যাবহার করলেও অনুপ কুমার কোন দিন তার প্রতিবাদ করেননি।

কালক্রমে তিনি নিজেকে একজন অন্যতম বিশিষ্ট কৌতুকশিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। অভিনয়ে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি হিন্দি সিনেমা ও ‘যাত্রাপালা’য় অভিনয় করেন। ১৯৪৮ – ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সাথেও যুক্ত ছিলেন “নিমন্ত্রণ” ছায়াছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ আঞ্চলিক ছবির অভিনেতা হিসাবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা ছায়াছবিতে মূলতঃ পার্শ্বচরিত্রে তার অভিনয় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কয়েকটি ছবিতে অবশ্য নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি কমেডি চরিত্রে অভিনয় করে বহু ছায়াছবিকে ইতিহাসেরপাতায় স্থান করে দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সেই সমস্ত ছায়াছবিগুলি হল

বসন্তবিলাপ‘,’মৌচাক‘,’দাদারকীর্তি‘,’প্রতিশোধ্‌,’বরযাত্রী্‌’কানামাছি’,’পলাতক’ ,’বালিকাবধূ’,’নিমন্ত্রণ’,’অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’

‘শহর থেকে দূরে’

হিন্দি সিনেমা-‘চন্দ্রশেখর’,’কিতনে পাস কিতনে দূর’, পরিবর্তন’

অনুপকুমার ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে “পলাতকা” ছায়াছবিতে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসাবে ‘বিএফজেএ’পুরস্কার পান। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে স্টার থিয়েটার থেকে পান রূপার পদক। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে। শিরোমণি পুরস্কারের ভূষিত হন ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে। ‘দীনবন্ধু পুরস্কার’ পান ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে শ্রেষ্ঠ পরিচালকের স্বীকৃতি পান।

দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলসের তরফ থেকে রইল স্বর্গীয় অনুপ কুমারের প্রতি শ্রধাঞ্জলি ।

More Related Articles

বিনোদন জগত

প্রয়াত বরিষ্ঠ বলিউড অভিনেতা দেব মুখার্জী: কাজল ও রানী মুখার্জীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছিলেন তিনি

বলিউড ইন্ডাস্ট্রি এক কিংবদন্তি অভিনেতাকে হারালো। প্রয়াত হলেন বরিষ্ঠ অভিনেতা দেব মুখার্জী (Deb Mukherjee)। তিনি ১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে একাধিক জনপ্রিয় হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তবে শুধু একজন সফল অভিনেতাই নন, দেব মুখার্জী ছিলেন বলিউডের অন্যতম সম্মানিত মুখার্জী পরিবারের সদস্য। তাঁর প্রয়াণে সিনে দুনিয়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

Read More »
রাজ‍্য ও রাজনীতি

১৫ মার্চ অভিষেকের মেগা ভার্চুয়াল সভা: ভোট কৌশল না বিরোধীদের জবাব ? জানুন সম্ভাব্য ৪ কারণ !

১৫ মার্চ শনিবার, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি মেগা ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করতে চলেছেন। এই সভা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তুঙ্গে। নেতৃত্বের এই পদক্ষেপের পেছনে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ উঠে আসছে।

Read More »
রাজ‍্য ও রাজনীতি

শোকজ তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ! দলের বিরুদ্ধে মন্তব্যে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা

তৃণমূল কংগ্রেসের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সম্প্রতি শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফে এই নোটিস জারি করা হয়, যেখানে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে হুমায়ুন কবীরের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গণ্য হয়েছে।

Read More »
রাজ‍্য ও রাজনীতি

বীরভূম জেলা পুলিশের পাল্টা জবাব: শুভেন্দু অধিকারীর হোলি সময়সীমা বিতর্ক ভিত্তিহীন !

বীরভূম: হোলি উদযাপন নিয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা অভিযোগ উড়িয়ে দিল বীরভূম জেলা পুলিশ। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন যে, বীরভূমে হোলি খেলা নিয়ে পুলিশের তরফে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় মানুষদের জন্য একপ্রকার বিধিনিষেধ। তবে, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

Read More »
বিনোদন জগত

দোল উৎসবে রঙ ও সুরের মেলা: ১৬ই মার্চ জমবে মহামিলনের দোল !

কলকাতা, ১৩ মার্চ: দোল পূর্ণিমার আনন্দে রাঙিয়ে তুলতে চলেছে জি বাংলা! রঙের উৎসবের এই বিশেষ দিনে নাচ, গান এবং চমকপ্রদ মুহূর্তে ভরে উঠবে সন্ধ্যা। ১৬ই

Read More »
বিনোদন জগত

আতঙ্কে ফিরে এলেন ‘আনন্দ কর’! শ্রীজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘Killbill Society’-তে নতুন মোড়

কলকাতা: বাংলা সিনেমার জগতে এক নতুন রহস্যময় অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। শ্রীজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত Killbill Society সিনেমার প্রথম ঝলক প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় অভিনীত

Read More »
error: Content is protected !!