বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম – কানে ভাসতে থাকে ‘বল বীর/ বল উন্নত মম শির’ অথবা ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম / ওই জিজ্ঞাসে কোনজন/ কাণ্ডারী বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার’ অথবা ছোটদের জন্য ছড়া, শ্যামা সঙ্গীত – এরকম অসংখ্য ভিন্ন স্বাদের কাব্য উপহার দিয়ে বাংলার কাব্যজগতে অমর হয়ে আছেন কাজী নজরুল ইসলাম। যতদিন বাংলায় কাব্যচর্চা চলবে একইসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের নাম উচ্চারিত হবে। বাচিক শিল্পীরা তাঁর লেখা কবিতা পাঠ করে শ্রোতাদের হাততালি কুড়িয়ে নেবে।
আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা এই মহান কাব্য স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভুলিয়ে দিতে চাই। নবীন প্রজন্মের কাছ থেকে তাকে দূরে রাখতে চাই। কিন্তু মেমারি থেকে প্রকাশিত ‘জিরো পয়েন্ট’ পাক্ষিক পত্রিকার সেটা চায়না। তাইতো পত্রিকা গোষ্ঠীর উদ্যোগে আগামী ২৪ শে সেপ্টেম্বর মেমারির অডিটোরিয়াম হলে বিদ্রোহী কবির ৪৮ তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত হতে চলেছে ‘জিরো পয়েন্ট নজরুল উৎসব ২০২৩’।
‘জিরো পয়েন্ট’ – জনপ্রিয় পাক্ষিক পত্রিকাটি মেমারির সাহিত্যপ্রেমী সাংবাদিক সেখ আনসার আলির হাত ধরে ৩৫ বছর আগে দিনের আলো মুখ দেখে। মাঝে প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য কিছু সমস্যার সৃষ্টি হলেও আজও পত্রিকাটি তার নিজস্বতা বজায় রেখে চলেছে। সেখ আনসার আলি প্রয়াত হওয়ার পর তাঁর পুত্র আনোয়ার আলি আনসারি পত্রিকার অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। এইভাবে অনেক ঝড়ঝাপটা সামলে পত্রিকাটি ৩৫ বছর পূর্ণ করল। সেই বিশেষ মুহূর্তকে স্মরণ করে একইদিনে নজরুল উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকা গোষ্ঠী তার ৩৫ তম পূর্তি দিবস পালন করতে চলেছে।
উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে যেমন সম্মানিত করা হবে তেমনি নজরুল ইসলামের সৃষ্টি সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের কাছে আলোকপাত করা হবে। প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে আজও কিভাবে ‘জিরো পয়েন্ট’ তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে সেই তথ্যও সামনে আনা হবে।
নজরুল উৎসব তথা জিরো পয়েন্ট পত্রিকার সম্পাদক আনোয়ার আলি আনসারি বললেন - তাঁর লেখনির মাধ্যমে নজরুল যে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছিলেন সেটাই আমরা বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে চাই। আশাকরি সবার সহযোগিতায় আমরা সফল হব। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মেমারি ১ ব্লক অফিস অডিয়োটোরিয়াম হলে নজরুল বিশেষজ্ঞ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সমাজসেবী ব্যক্তিদের সম্মানিত করা হবে। এছাড়াও নজরুল উৎসব উপলক্ষে গত ১০ সেপ্টেম্বর আয়োজিত হয়েছিল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য প্রতিযোগিতা। প্রায় ২০০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিল নজরুল বিষয়ক এই প্রতিযোগিতায়।