Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

ফরিদ তানাশাহ, গ্যাংস্টার হয়েও প্রায় ৮ বার পাকিস্তান গিয়েছিলেন দাউদ কে মারার জন্য

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

ফরিদ তানাশাহ, এই নাম টা হয়তো আপনাদের অনেকেরই অজানা। আজ বলবো আপনাদের এই ফরিদ তানাশাহের কাহিনি। যিনি আন্ডার ওয়াল্ডে ছোটা রাজনের অন্যতম কাছের ব্যাক্তি হয়েও ভারতের গুপ্ত এজেন্সি র এর হয়ে প্রায় ৮ বার পাকিস্তান গিয়েছিলেন ভারতের তথা পৃথিবীর অন্যতম বড় ডন দাউদ ইব্রাহিম কে মারার জন্য।

ফরিদ তানাশাহ

দাউদ ইব্রাহিম যার কথা শুনলে আজও মুম্বাই তথা ভারতের বহু বিত্তশালী ব্যাক্তিদের রাতের ঘুম উধাও হয়েযায় । এখনো পর্যন্ত পাকিস্থান থেকেই দাউদের তোলা বাজি চলছে যাকে বলা হয় extortion.  এমনকি কলকাতার ব্যাবসায়িরা পর্যন্ত দাউদের হাত থেকে রেহাই পাননা। তবে কেউ আর সাহস করে পুলিশের সাহায্য খুব বেশি নিতে চান না । চুপচাপ হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাঁঠিয়ে দিয়ে নিজেদের কে মুক্ত করে নেন। কারন দাউদ কে না বলার খমতা কারো নেই। কোন ব্যাবসায়ি দাউদ কে না বললে তার মৃত্যু নিশ্চিত সেটা সকলেরই জানা।

দাউদ ইব্রাহিম

১৯৯৩ সালে মুম্বাই সিরিয়াল ব্লাস্ট কাণ্ডের পর থেকেই দাউদ ভারত থেকে পালিয়ে পাকিস্থানের শরনাপন্ন হন। তারপর থেকে ভারত সরকার বার বার পাকিস্থান সরকার কে অনুরোধ করা সত্ত্বেও পাকিস্থান সরকার অস্বীকার করে। এদিকে পাকিস্থানে গা ঢাকা দেবার পর থেকেই দাউদের একদা ঘনিস্ট ছোটা রাজনের সাথে দাউদের মতানৈক্য শুরু হয় যা খুব তারতারি শত্রুতায় রূপান্তরিত হয়।

ছোটা রাজনের নিজের বক্তব্য অনুযায়ী – ছোটা রাজন দেশ বিরোধী কাজ করতে ইচ্ছুক ছিলেন না । ফলত দাউদ আর ছোটা রাজন একে অপরের শত্রু তে পরিনত হন। ছোটা রাজন পাকিস্থান ত্যাগ করে ব্যাংককে থাকতে শুরু করেন। অন্যদিকে ঘরের শত্রু কে শেষ করার জন্য দাউদ তার ডান হাত ছোটা শাকিল কে দায়িত্ব দেন ছোটা রাজন কে শেষ করার জন্য। ছোটা শাকিল ব্যাংককে পৌঁছে যায় এবং কিছু শার্প শুটার কে নিয়োগ করে ছোটা শাকিল কে হত্যা করার জন্য। শার্প শুটাররা ছোটা রাজনের গুপ্ত ঠিকানায় পৌঁছে গিয়ে গুলি চালালেও আহত অবস্থায় ছোটা রাজন পালিয়ে জেতে সক্ষম হন। তারপর থেকেই ছোটা রাজন দাউদ কে হত্যা করার চক্রান্ত করতে থাকে।

ছোটা রাজনের অতন্ত ঘনিস্ট ছিল এই ফরিদ তানাশাহ। থাকতেন মুম্বাইয়ের তিলক নগর এলাকায়। আর এই সময়েই ফরিদ তানাশাহ অন্য একটি মামলায় জেল থেকে মুক্তি পান। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই ফরিদ তানাশাহ যোগাযোগ শুরু করে ছোটা রাজনের সাথে । ছোটা রাজনের কথা অনুযায়ী সেই সময় মুম্বাইয়ের বেশ কিছু বিল্ডার দের থেকে তোলা বাজি শুরু করে ফরিদ তানাশাহ। প্রত্যকে বিল্ডার কে প্রতিটা বিল্ডিং এর জন্য এক কোটি টাকা তোলা দিতে হত সেই সময়ে। অন্যদিকে সেই টাকার বলেই ছোটা রাজনের কথায়, দাউদ কে হত্যা করার জন্য বেশ কয়েক বার পাকিস্থানে গিয়েছিল এই ফরিদ তানাশাহ। কিন্তু প্রত্যেক বারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল ফরিদ তানাশাহ কে।

এদিকে সরকার পরিবর্তন হয়। স্বাভাবিক ভাবেই সরকার বদলের সাথে সাথে প্রশাসনিক রদ বদলও অহ্যে যায়। আর সেই সময় মুম্বাই পুলিশ অন্য একটি মামলায় ফরিদ তানাশাহ কে খুঁজছিল। সেই সময় মুম্বাই পুলিশ জানতে পারে ফরিদ তানাশাহ দিল্লিতে ছোটা রাজনের অন্যতম ঘনিস্ট ভিকি মালহত্রার কাছে লুকিয়ে আছে। সেই সময় মুম্বাই পুলিশের ডি সি পি ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার ধনঞ্জয় কামলাকার তার টিম নিয়ে ফলো করতে করতে দিল্লির ইন্তেলিজেন্স কলোনির গেটের কাছেই একটি লাল মারুতি ৮০০ গাড়ী থেকে গ্রেফতার করেন ফরিদ তানাশাহ আর ভিকি মালহত্রা কে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন সেই সময় ওই মারুতি গাড়ীর ড্রাইভার সীটে ছিলেন যিনি তিনি আর কেউ নন , এই মুহূর্তে ন্যাশানাল সিকিউরিটি চিফ আই পি এস অজিত দোভাল।

অজিত দোভাল

অজিত দোভালের হাজার অনুরধেও সেদিন ভিকি মালহত্রা আর ফরিদ তানশাহ কে মুম্বাই পুলিশ গ্রেফতার করে । শোনা যায় অজিত দোভাল এবারেও ফরিদ তানাশাহ আর ভিকি মালহত্রা কে করাচি পাঠানোর কোন বড় ষড়যন্ত্র করছিলেন। যদিও এর আগেও বেশ কয়েকবার ফরিদ তানাশাহ আর ভিকি মালহত্রা পাকিস্থান গিয়েছিলেন তার মধেয় দাউদের মেয়ের বিয়ের অনুস্থানেও এরা পৌঁছে গেছিল কিন্তু শেষ মুহূর্তে পাকিস্থানে জাদের অস্ত্র সরবরাহ করার কথা ছিল তারা সেই মুহূর্তে অস্ত্র সরবরাহ না করায় তাদের বিফল হয়। যদিও শেষ মুহূর্তে দাউদ ইব্রাহিমও এই ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে সেই বিয়েতে হাজির হননি। কিন্তু কোন ভাবেই মুম্বাই ইন্টেলিজেন্স এই সব কথা স্বীকার করতে চান না।

 

যাইহোক, মুম্বাই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হবার পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে মুম্বাই তে নিজের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন ফরিদ তানাশাহ । ফরিদের ওপর হামলা হতে পারে জেনে মুম্বাই পুলিশ সর্বক্ষণের জন্য দুইজন মেশিনগান ধারী পুলিশ মোতায়েন করেছিল বেশ কিছু বছর ধরে। ফরিদ নিজেও নিজের জন্য ৮/১০ জন নিরাপত্তা রক্ষী রাখতেন সর্বক্ষণের জন্য । অন্যদিকে ফরিদ সেই সময় তার দ্বিতীয় স্ত্রী কে ছেড়ে বেশিক্ষণের জন্য থাকতেন তার প্রথম স্ত্রীর কাছে। ফরিদ তার দুটি বারিতেই নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়াও রেখেছিলান ১০ টি করে হিংস্র ডোভারম্যান কুকুর। বিল্ডার দের থেকে কোটি কোটি টাকা তোলা বাজি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। এবার এই বিল্ডার দের মধেয় এই নিয়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তারা এক সময়ের ছোটা রাজন ঘনিস্ট ভরত নেপালি ও বিজয় শেট্টির কাছে শরনাপন্ন হন। বিল্ডার দের মধেয় একজন দত্তা বাখড়ে ভরত নেপালি ও বিজয় শেট্টি কে কাজ হবার পরে অর্থাৎ ফরিদ তানাশাহ কে মারার পরে ৯৫ লাখ টাকা দেবার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ফরিদ কে হত্যা করার পর দত্তা বাখড়ে সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাঙ্কে ৯৫ লাখ টাকা ট্রান্সফার করেছিলেন সেটিও পরবর্তী কালে তদন্তে ধরা পরে।

ফরিদ তানাশাহের নিরাপত্তা রক্ষীরা তাদের পোষা সারমেয় দের নিয়ে রাত সারে নটা নাগাদ বাড়ির থেকে একটু দূরে ঘোরাতে নিয়ে যেতেন এবং ওই সময়টাই ফরিদ তানাশাহ একে বারেই নিরাপত্তাহীন থাকতেন। সেদিন ফরিদের দ্বিতীয় স্ত্রী রেশমা ফরিদ কে ডেকে পাঠান তার ছোট মেয়ের বাহানা দিয়ে। আর সেই সময়েই বিজয় শেট্টি ১২ জন সশস্ত্র লোক কে পাঠান ফরিদ কে হত্যা করার জন্য। ১২ জনের মধেয় ৪জন অস্ত্র নিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন এবং ফরিদ তার নিজস্ব অস্ত্র হাতে নেবার আগেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ রেকর্ড অনুযায়ী ফরিদের মাথায় ৭ টি , পেটে ৩ টি ও হাতে ১ টি গুলি করা হয়েছিল । অবাক করা বিষয় হল হত্যার পরে আততায়ীরা রেশমা ও তার ৩ বছরের বাচ্ছা কে কিছু না করেই স্থান ত্যাগ করেন। পরবর্তী কালে তদন্তে শোনা গেছিল এই হত্যার পিছনে রেশমার সহযোগিতা রয়েছে। নাহলে ওই সময়ের কথা আততায়ীরা জানতে পারতো না । এছারা পরবর্তী কালে মুম্বাই পুলিশ ১০জন কে গ্রেফতার করা হয় তানাশাহ কে হত্যা করার জন্য। মুম্বাই সেশন কোর্ট তাদের , মধ্যে ৪ জন কে আজীবন কারাবাস ও বাকি দের ১০ বছরের হাজত বাসের আদেশ দিলেও কোন এক জাদু বলে বিল্ডার দত্তা বাখরে নির্দোষ প্রমান হয়ে ছাড়া পেয়ে যান। বিদেশে টাকা ট্রান্সফার করার প্রমান থাকা সত্ত্বেও দত্তা বাখরে কোর্টে বলেছিলেন ওনার সাথে এই সব অপরাধীর কোন যোগাযোগ নেই উনি সাধারন একজন বিল্ডার , ব্যাবসা করে দিন যাপন করেন।

 

সুত্র – বলজিত পারমার

বরিষ্ঠ সাংবাদিক, অপরাধ জগত।

 

 

 

More Related Articles

Breaking News

হাই অ্যালার্টে কলকাতা বিমানবন্দর! CISF জওয়ানদের ছুটি বাতিল, বাড়ছে নজরদারি

গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের গুরুত্বপূর্ণ হাবগুলির মধ্যে অন্যতম কলকাতা বিমানবন্দর এখন হাই রিস্ক জোনে। সাম্প্রতিক কিছু আন্তর্জাতিক গতিবিধি ও অনলাইন বার্তালাপ থেকে এই ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

Read More »
নারীর সাহস ও আত্মপরিচয়ের গল্প নিয়ে পরিচালক পদ্মিনী দত্ত শর্মার 'ব্ল্যাক কোট' এর প্রিমিয়ার সুজাতা সদনে
বিনোদন জগত

নারীর সাহস ও আত্মপরিচয়ের গল্প নিয়ে পরিচালক পদ্মিনী দত্ত শর্মার ‘ব্ল্যাক কোট’ এর প্রিমিয়ার সুজাতা সদনে

পরিচালক পদ্মিনী দত্ত শর্মার শর্ট ফিল্ম ‘ব্ল্যাক কোট’ এর প্রিমিয়ার হল সুজাতা সদনে। নারীর আত্মপরিচয় ও ন্যায়বিচারের বার্তা নিয়ে তৈরি এই চলচ্চিত্র শীঘ্রই মুক্তি পাবে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে।

Read More »
অপারেশন সিঁদুর' ট্রেডমার্কের দৌড়ে নামল একাধিক কোম্পানি, সেনা অভিযানের পর বাড়ছে বাণিজ্যিক লড়াই
Featured News

অপারেশন সিঁদুর’ ট্রেডমার্কের দৌড়ে নামল একাধিক কোম্পানি, সেনা অভিযানের পর বাড়ছে বাণিজ্যিক লড়াই

সাম্প্রতিক সামরিক সাফল্যের পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম ঘিরে তৈরি হয়েছে জাতীয় আবেগ। সেই আবেগকে পুঁজি করে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের দৌড়ে নেমেছে একাধিক সংস্থা। শুরু হয়েছে আইনি ও বাণিজ্যিক লড়াই।

Read More »
অপারেশন সিঁদুর: মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত, ভারতীয় প্রত্যাঘাতে কেঁপে উঠল বহওয়ালপুর!
Breaking News

অপারেশন সিঁদুর: মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত, ভারতীয় প্রত্যাঘাতে কেঁপে উঠল বহওয়ালপুর!

ভারতের অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ২১টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস। জইশ প্রধান মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত। বহওয়ালপুরে চালানো এই হামলায় আজ়হার বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা।

Read More »
‘অপারেশন সিঁদুর’: গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত, সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন দুই ‘অগ্নিকন্যা’
Breaking News

‘অপারেশন সিঁদুর’: গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত, সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন দুই ‘অগ্নিকন্যা’

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত চালালো ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নিখুঁত স্ট্রাইক। সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

Read More »
দেশ

ভারতজুড়ে ২৫৯টি স্থানে নিরাপত্তা মহড়া, পশ্চিমবঙ্গেও তৎপরতা চরমে—পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জোরদার প্রস্তুতি

পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার, সেনা-আসামরিক যৌথ মহড়া, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা।

Read More »
error: Content is protected !!