পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ শিবরাম চক্রবর্তী বাংলা সাহিত্যের এক অমোঘ শক্তিশালী মানুষ। মানুষের যত কষ্টই থাক না কেন, তার সাথে কথা বলে বা তার লেখা পড়ে হাসতে বাধ্য হবেন সবাই। মানুষকে আনন্দ দেওয়ার যে এক ক্ষমতা সেই ক্ষমতার দিক থেকে পৃথিবীতে অন্যতম শক্তিশালী মানুষ ছিলেন তিনি। কিছু ক্ষণের জন্য হলেও মানুষকে তাদের দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দিয়ে আনন্দে মাতিয়ে তোলা খুব সহজ কথা ছিল না, কিন্তু সেটা যদি একটা শিল্প হয় তিনি তবে সবথেকে নামকরা শিল্পী। আজ থেকে ৪৩ বছর আগে আজকের দিনেই সকলে কাঁদিয়ে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধা।
আজ থেকে ১২০ বছর আগে জন্ম হলেও আজকের দিনেও তিনি সমান প্রাসঙ্গিক। ব্যঙ্গছলে সত্যি কথা বলা, বা সমাজের উচ্চ-নিচ সমস্ত দিক তুলে ধরা, বা কখনও নিপাট আনন্দ দেওয়া সবটাই তার লেখনীর জোরে হয়েছে। তার লেখনী আর ক্ষুরধার মস্তিষ্ক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আর নেই। আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার যুগেও প্রতিনিয়ত নিউজফিড স্ক্রল করলে একটা না একটা শিবরাম চক্রবর্তীর লেখা পাওয়া যাবেই।
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগের একজন মানুষ যিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন ৪৩ বছর আগে, সোশ্যাল মিডিয়া বলে যে কিছু হতে পারে তাই যার ধারনার অতীত, সেই মানুষের লেখা প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়া ভরাচ্ছে। এবং শুধু আজ – কাল বা পরশু নয় বাঙালি যতদিন হাসতে চাইবে ততদিন শিবরাম চক্রবর্তী প্রাসঙ্গিক থাকবেন। মানুষ যেদিন হাসতে ভুলে যাবে সেদিনও যদি ইতিহাস ঘেঁটে তার একটা লেখা পড়া হয়, মানুষ আবার খুশির সাগরে ভাসবেন। সে কি বই বা উপন্যাস লিখছেন সেই নামের তালিকায় যাওয়ার হয়তো প্রয়োজন নেই। কারণ সেই গল্প বা উপন্যাসগুলি একেকটি হাসির মোড়কে সমাজে জীবন্ত দলিল। মানুষ যদি যন্ত্রে পরিণত না হয় তাহলে শিবরাম চক্রবর্তীও থেকে যাবেন। বাংলা সাহিত্যে আর একটা শিবরাম কখনও আসবে না, তার কোনও বিকল্প কখনও হবেনা।