বিষয় টা সব মিলিয়ে কেমন যেন একটু গোলমেলে। সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে নিঃসন্দেহে মুম্বাই পুলিশ কে বাহবা দিতেই হয় কিন্তু অন্যদিকে ভারতীয় নাগরিক, যারা ইন্টারনেট ব্যাবহার করছেন তাদের যাবতীয় ব্যাক্তিগত নথি ও কাজ কর্মের ওপর নজরদারী চালাচ্ছে ইন্টারপোল।
গতকাল আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা ইন্টারপোলের অফিস থেকে একটি মেসেজ পাঠানো হয় মুম্বাই পুলিশের হেড অফিসে। মেসেজে জানানো হয় মুম্বাইয়ের মালাড অঞ্চলের এক ব্যাক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। মেসেজটি পড়ার দুই ঘন্টার মধ্যেই মুম্বাই পুলিশের তৎপর টিম সেই ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করে ফেলে। মুম্বাই পুলিশ সংবাদ মাধ্যম কে জানায় যে মূলত রাজস্থানের বাসিন্দা ঐ ২৬ বছরের যুবক তার পড়াশোনা শেষ করে একটি চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু মাস ছয়েক আগেই সেই চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে তার মা অন্য একটি অপরাধিক মামলায় জেলে রয়েছেন। আর্থিক অনটনের জেরে দৈনন্দিন জীবন আর মামলা লড়ার খরচ কোনটাই জোগান দিয়ে উঠতে পারছিলেন না। নতুন চাকরির জন্য চেষ্টা করলেও এখনো নতুন চাকরি তিনি পাননি। তাই অবসাদ গ্রস্থ হয়ে নিজেকে শেষ করে ফেলার চিন্তা মাথায় আসে। আত্মহত্যা করার কথা ভাবা আর করার মধ্যে থাকে বিস্তর ফারাক। সহজে আত্মহত্যার পদ্ধতি জানতে গুগলে ঐ যুবক সার্চ করতে শুরু করেন। যা নজরে আসে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা ইন্টারপোলের। তারা জানার সাথে সাথেই মুম্বাই পুলিশ কে এ বিষয়ে সতর্ক করেন। এবং এর পরেই মুম্বাই পুলিশ যথা সময়ে উপস্থিত হয়ে যুবকটিকে আত্মহত্যা থেকে বিরত করেন। মুম্বাই পুলিশ যুবকটির সব কিছু জেনে তাকে একটি কাজের ব্যাবস্থা করে দেবারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এত অবধি সব টাই ছিল খুব ভালো সংবাদ। কিন্তু এখানেই উঠছে প্রশ্ন। মুম্বাইয়ের মালাডে কেউ গুগলে সার্চ কি সার্চ করছে তা ইন্টারপোল জানতে পারছে কিভাবে? তারমানে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক যারা গুগল ব্যাবহার করছেন তাদের প্রত্যেকের ওপরেই নজরদারী চালানো হচ্ছে। সকল ভারতীয় নাগরিকদের যাবতীয় ব্যাক্তিগত তথ্য তাদের অজান্তেই চলে যাচ্ছে বৈদেশিক তদন্তকারী সংস্থা সহ হয়তো অন্য অনেক জায়গাতেই।
এ বিষয়ে আমরা ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ দের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়ায় তারা আমাদের জানান – যে বর্তমানে বিভিন্ন স্মার্টফোন ও অনান্য তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় যেসব কিছু আমরা ব্যাবহার করছি, যেমন গুগল, ফেসবুক ইউটিউব আবার অন্যদিকে বিভিন্ন অনলাইন সফটওয়্যার তাদের সব কটিই প্রথম রেজিষ্ট্রেশনের সময়েই ব্যাক্তিগত তথ্য সম্পর্কিত একটি নিয়মাবলী দেওয়া হয়। যেখানে সেই কতৃপক্ষ আগে থেকেই ব্যাবহারকারীর ব্যাক্তিগত নথি তাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন কাজে লাগানোর কথা বললেও ব্যাবহার কারী কখনই সেগুলি মনদিয়ে পড়েনেন না বা না দেখেই সেগুলি কে “অ্যাকসেপ্ট” করে ব্যাবহার করতে শুরু করে দিচ্ছেন। এছাড়াও ফেসবুক ও গুগলে অসংখ্য ছোট ছোট এপ্লিকেশন আছে যেখানে নিজেকে বৃদ্ধ বা লিঙ্গ রুপান্তর করা বা ভবিষ্যৎ জানার মতো মজা করা যায়। এই এপ্লিকেশন গুলিই আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা কে দিয়েই ব্যাবসা চালায়।