নানা কারণে জেলায় জেলায় একাধিক সরকার পোষিত স্কুলের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সব আছে স্কুলে শুধু পড়ুয়ার দেখা নেই। কিন্ত সরকারি স্কুলে চাকরির জন্য অনশন হয়েই চলেছে। প্রশ্ন উঠছে কেন সব পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও সরকারি স্কুলের দিক থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন অভিভাবকরা? তবে কি সরকারি স্কুলে শিক্ষার মান দ্রুত নামছে? তার জেরেই সেখানে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছেন না অভিভাবকরা?
অনেকেই চাইছেন বেসরকারি স্কুলে তাঁদের সন্তানদের ভর্তি করতে। একটু সামর্থ্য থাকলেই অভিভাবকরা সন্তানদের ভর্তি করে দিচ্ছেন বেসরকারি স্কুলে। আর বিশেষত সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে বহু ক্ষেত্রে হু হু করে কমছে ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা। স্কুল বিল্ডিং, শিক্ষক, পরিকাঠামো সবই রয়েছে, শুধু ছাত্রছাত্রীর দেখা নেই। শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, কোথায় কত শূন্যপদ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির কাছ থেকে সেব্যাপারে তালিকা চাওয়া হয়েছে।
সরকারি এবং সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে নবান্ন এবং বিকাশ ভবনে। তবে পুরোপুরি বেসরকারি হাতে না দিয়ে আপাতত যৌথ উদ্যোগের পথে হাঁটার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকারি শিক্ষামহল। এই কারণে একটি নীতি তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের মতামত চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি খুবই গোপন রাখতে চাইছে নবান্ন ও বিকাশ ভবন। সেই কারণে কেউ এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। জানা গিয়েছে, নীতি তৈরি হলে সেটি মন্ত্রিসভার বিবেচনার জন্য পেশ করবে শিক্ষা দফতর।
শিক্ষাখাতে বিপুল খরচ সরকারের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর্থিক কারণেই শিক্ষকের কয়েক হাজার শূন্য পদ পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণে এমন ভাবনাও আছে, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ থেকে আরও বছর পাঁচেক বাড়িয়ে দেওয়া। তাতে সরকারের সুবিধা হল, আগামী বছর পাঁচেক অবসরকালীন অর্থ মেটাতে হবে না। তাতে খরচের বোঝা কিছুটা অন্তত কমবে।
বেতনের বোঝার পাশাপাশি স্কুলে, কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। গত দশ বছরে বর্তমান সরকার হাজারের বেশি সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল চালু করেছে। সেগুলির পরিকাঠামো বৃদ্ধি, শিক্ষক অশিক্ষক নিয়োগে বিপুল ব্যয় হয়েছে। তার ফলে প্রায় লক্ষাধিক শূন্য পদ পূরণ করা নিয়ে সরকার উচ্চবাচ্য করছে না।