ছোট বেলায় মনীষীদের জীবন ও কর্মকাণ্ড গুলি জানতে এবং অনুপ্রাণিত হতে তাদের জীবনী আমরা পাঠ্য পুস্তকে পড়তাম, এখন দিন বদলেছে। সরকারি মুদ্রনে আর সে সব দেখা যায় না। এখন রামায়ন মহাভারত থেকে শুরু করে কিংবদন্তিদের জীবনী দেখতে হয় সেলুলয়েডের পর্দায়, থুড়ি….. মোবাইলের স্ক্রীনে।
চলচ্চিত্র প্রেমী বাবু বাঙালির চিরন্তন স্বভাবসুলভ অভ্যাস অনুযায়ী মুখে কুরোসাওয়া, বার্গম্যন ইত্যাদির পরিবর্তে আলোচিত হবে মৃনাল। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা না দিতে জানা আধুনিক চলচ্চিত্র সমালোচকের মুখে থাকবে সৃজিতের সৃজনের সমালোচনা। বাড়বে চা’য়ের দোকানের বেচাকেনা।
যাইহোক শুরু হল পদাতিকের যাত্রা সৃজিতের হাতধরে। একেবারে সঠিক সময়ে ঝোপ বুঝে কোপ যাকে বলে। কারন বরেন্য চিত্র পরিচালক স্বর্গীয় মৃনাল সেনের চেহারার মিল তিনি খুঁজে পেলেন বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর মধ্যে। সত্যিই কি কলকাতার কোন অভিনেতা এই চরিত্র করতে সক্ষম ছিলেন না?
তবুও মনামী ঘোষ কে পেয়েছেন এটাই বা কম কিসে ?
প্রশ্ন তো অনেক ওঠে !!!! উত্তরের ঠিকানা আজ বড়ই ঘুরপথের গন্তব্য। এ পথের পথিক পাওয়া বড় দায়। সব টাই আজ শুধু “প্রচারে থাকার ষড়যন্ত্র ” অভিসন্ধি বর্তমান বাবু সমালোচকদের সমালোচনায় থেকে শুধুমাত্র কর্তা হিসাবে থেকে যাওয়া। তারসাথে সৃজিতের ইংরেজিতে A থেকে Z অবধি প্রতিটি অ্যালফাবেট দিয়ে তৈরী সিরিজের সিনেমায় যুক্ত হল P দিয়ে পদাতিক।
অবাক করা বিষয় হল যারা সমাজের প্রান্তিক মানুষ বা একেবারে নিম্ন শ্রেনীর শ্রমীকদের কথা বলতেন জাঁকজমকহীন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আজ তাঁদেরই জীবন কে বিষয়বস্তু করে তৈরী হচ্ছে তাঁদেরই গ্লামারাস বায়োগ্রাফি। স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হবে দেশ জুড়ে তাঁবেদারী প্রশংসা যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলিউডে বিগ বি দিয়ে, শেষ টা কিন্তু কলকাতার বিগ পি’ই করবেন।
আসলে আমরা তো বাঘ কে খাঁচাতেই আর পদ্ম কে পাঁকেতে দেখতেই অভ্যস্ত। তাই প্রকৃত প্রাকৃতিক বিষয়ে ভাবতে পারিনা। বহুজাতিক সংস্থার কাছে টাইটেল কার্ডে বিক্রি হবে একদিন প্রতিদিন। জমকালো বাংলা চলচ্চিত্র জগতে আকালের সন্ধানে পরিচালক সৃজিত ঠিক খুজে পাবেন প্রশংসা এবং শিরোনামে থাকার অধিকার, বঞ্চিত থাকবে সমাজের দিন আনা দিন খাওয়া সেই সব মানুষরা যাদের জন্য শহরে তৈরী হয়েছিল সিনেমাহল।