এই গল্পো দক্ষিণ কলিকাতা নিবাসী এক প্রবীন দম্পতি শ্রীযুক্ত আশুতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার স্ত্রী উমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে। এই পরিবারের আরো একজন সদস্য হল বাড়ির পুরাতন ভৃত্য মাধব হালদার। আর্থিক যথেষ্ট স্বাচ্ছলতা থাকলেও এই প্রবীন দম্পতির জীবন যেনো এক অন্তহীন অন্ধকারে ঢেকে থাকে। নিঃসঙ্গতার অন্ধকার দুটি মানুষকে যেনো দিনের পর দিন গ্রাস করতে থাকে , কারণ কিছুদিন আগেই আশুবাবুর জোড়াজুড়িতেই একমাত্র পুত্র শাশ্বত ও বৌমা মধুরিমা এক রিসেপ্শনে যাওয়ার পথে মোটর দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যু।
এরফলে আশুবাবুর মনে হতে থাকে যে তার ছেলে ও বৌমার মৃত্যুর জন্যে তিনিই দায়ী। স্ত্রী উমার শত বোঝানো সত্ত্বেও এই বৃদ্ধ মানুষটিকে তাঁর এই ভুল ধারনা থেকে বের করে আনা সম্ভব হয় না। আর এই যন্ত্রনাময় জীবন থেকে কিছুটা সময়ের জন্যে হলেও নিস্তার পেতে দুজনে বেড়িয়ে পড়েন চৈতন্যপুরের উদ্দেশ্যে, আর এখানেই যেনো অপেক্ষা করছিল তাঁদের বেঁচে থাকার উৎস। পান্থনিবাস গেস্টহাউসের ম্যানেজার কাশীনাথবাবু সহ রাধুনী ভোলা ও তার দোসর পূর্ণিমা দম্পতির আতিথেয়তার কোনো ত্রুটি রাখে না। আর এখানেই একটি স্থানীয় অনাথ বাচ্চা মেয়ে পান্তুয়া এই বৃদ্ধ দম্পতির জীবনে যেনো এক পরিবর্তন নিয়ে আসে। উমার ভালোবাসার টানে পান্তুয়া বারবার ছুটে আসে পান্থনিবাসে, আর সেটা আশুবাবুর একদম পছন্দ হয় না।
পান্তুয়ার কাছে দম্পতির নতুন নাম হয় ঝাল দাদু ও মিষ্টি দিদুন। ম্যানেজারের থেকে উমা জানতে পারেন খুব ছোটো বেলায় পান্তুয়া তার বাবা-মাকে হারায়। দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জন্যে প্রতিনিয়ত কাকা-কাকিমার অত্যাচারের শিকার হতে হয় বাবা-মা মরা এই মেয়েটিকে। যদিও স্থানীয় ডাক্তার বীধান ঘোষ পান্তুয়াকে খুব স্নেহ করতেন, কিন্তু নিজের কোনো চালচুলো না থাকার জন্যে তিনি যে নিজের কাছে পান্তুয়াকে এনে রাখবেন তার কোনো উপায় ছিল না। আর এদিকে উমা ঠিক করেন পান্তুয়াকে তারা তাদের সাথে কোলকাতায় নিয়ে যাবেন। কিন্তু বাধ সাধেন আশুবাবু।
আর এরজন্যে উমার সাথে চরম ঝগড়া-অশান্তির ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন আশুবাবু। সেই মূহুর্তে পান্তুয়া তার ডাক্তারকাকুকে নিয়ে এসে আশুবাবুকে সুস্থ করে তুললেও পান্তুয়ার সব স্বপ্ন যেনো দুরস্ত থেকে যায়। ছোটো মেয়েটির সব আশার আলো যেনো নিমেশে নিভে যায়। এদিকে উমা পান্তুয়া ও আশুবাবুর কথা ভেবে দিশেহারা হতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত কি আছে পান্তুয়ার অদৃষ্টে ? উমা কি পারবে আশুবাবুকে বুঝিয়ে পান্তুয়াকে তাদের সাথে কোলকাতায় নিয়ে যেতে ?
ছবিটি তে অভিনয় করেছেন ঃ পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তী, রজতাভ দত্ত, সোমা ব্যানার্জি, খরাজ মুখোপাধ্যায়, মেঘনা হালদার, সুমিত সমাদ্দার, শুভাশিস, সঞ্জয় ব্যানার্জি এবং নাম ভুমিকায় নবাগতা আরাত্রিকা ব্যানার্জি।
পরিচালনা করেছেন – রাজা ব্যানার্জী
চিত্রগ্রহণঃ সুশান্ত ঘোষ ও গৌরাঙ্গ মিত্র
সঙ্গীত পরিচালকঃ এম তীর্থ
গীতিকারঃ রাজা ব্যানার্জী
সঙ্গীতঃ ইন্দ্রানী সেন, নচিকেতা, পটা, রূপঙ্কর বাগচি, অঙ্কিতা, খরাজ মুখার্জী ও এম তীর্থ
প্রযোজকঃ আরা’স ভীশন ও মাত্রা প্রোডাকশন
গতকাল হয়েগেল ”পান্তুয়া”র পোস্টার লঞ্চ অনুষ্ঠান । খুব তাড়াতাড়ি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে বলেই পরিচালক জানিয়েছেন।