পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ নাম দিয়ে কেউ চেনে না তাকে সকলেই পদবী দিয়েই চেনেন মানুষটাকে ‘বোস’। বিমান বাহিনী থেকে মহাকাশচারীদের হেডফোন, রোমের সিস্তিন চ্যাপেল, মক্কার প্রধান মসজিদ, লস এঞ্জেলসের স্টেপলস সেন্টারে ব্যবহৃত সাউন্ড সিস্টেম শব্দ বিজ্ঞানের এই মহান জিনিসগুলির আবিষ্কর্তা এক বাঙালি অমরগোপাল বোস। তার পিতা ননীগোপাল ঘোষ ব্রিটিশদের ভয়ে দেশ ছেড়ে বেআইনি ভাবে পৌঁছে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা এই বাঙালি শব্দ বিজ্ঞানের জগতে এক দিকপাল হয়েই থেকে যাবেন আজীবন। আজ থেকে দশ বছর আগে আজকের দিনেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মানুষটি। তবে শব্দ বিজ্ঞানের ইতিহাসে তিনি থেকে যাবেন।
কিশোর বয়সে রেডিও সারাইয়ের দোকানে কাজ করতেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা আর সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা। পঞ্চাশের দশকে প্রেক্ষাগৃহে গান শুনতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন গায়কের গলার ৮০% শব্দ দর্শকের কানে সরাসরি না এসে দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে প্রতিফলিত হয়েই আসে। সেই ভাবনা থেকেই প্রেক্ষাগৃহের মত শব্দের আমেজ বৈঠকখানায় আনার চেষ্টা শুরু করেন তিনি।
দেওয়ালে টাঙ্গানো ছোট স্পিকার আর প্রেক্ষাগৃহের মত প্রতিফলিত শব্দ দুই নিয়ে গবেষণায় তৈরি হল সাউন্ড সিস্টেম। ১৯৬৪ সালে শুরু হল ‘বোস কর্পোরেশন’। ১৯৬৮ সালে তৈরি হয় ‘বোস ৯০১ ডিরেক্ট স্পিকার সিস্টেম’। যা বেস্ট সেলার হয়ে থাকে প্রায় ২৫ বছর। সেনাবাহিনী থেকে নাসার সায়েন্টিস্ট সকলেই ব্যবহার করে ‘বোস’এর যন্ত্র। তবে জিনিস গুলোর দাম এতটাই বেশি যে সেগুলি সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে ‘পোর্শে’ এবং ‘মার্সিডিজ’ গাড়িতে বোসের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।