গত ১৪- ২১ জুন মাসে হয়ে গেলো ৫০৮ বছরের পুরনো মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য দেবের আগমনের স্মরণে মালদার গৌড়ের রামকেলি মেলা। গত দু’বছর করোনা আবহে এই মেলা হয়নি। দেশ বিদেশ থেকেও নানা ধর্মের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মেলায় আসেন। এই মেলা বৈষ্ণবদের কাছে প্রায় জাতীয় উৎসব।
১৫১৫ সালের ১৫ ই জুন মাসে, প্রায় ৫০৮ বছর আগে বৃন্দাবন যাওয়ার পথে মালদা জেলায় আসেন মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেব। গৌড়ের সুলতান হুসেন শাহের মন্ত্রী সাকর মল্লিক ও প্রধান মুনশি দবীর খাস এর ডাকে তিনি রামকেলি তে পদার্পণ করেন, পরে এরা বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হন। পরবর্তী কালে এর দু’জন রূপ গোস্বামী ও সনাতন গোস্বামী নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। বৈষ্ণব ধর্মের বিখ্যাত ছয় গোস্বামীদের মধ্যে তিনজনই এই গ্রামের মানুষ ( রূপ গোস্বামী, সনাতন গোস্বামী ও জীব গোস্বামী)।
রামকেলি গ্রামে শ্রীচৈতন্যের সেই পদার্পণের স্মরণে প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের সংক্রান্তিতে এক মহামেলার আয়োজন করা হয়, যা রামকেলির মেলা
নামে পরিচিত। এটাই মালদা জেলার সব চেয়ে বড় ও প্রাচীন মেলা। বর্তমানে একই সঙ্গে শ্রীশ্রী মদনমোহন জিউ-এর বার্ষিক উৎসবও পালিত হয়। পঞ্চরত্ন মন্দিরে মহা ধূমধামে মদনমোহন ও রাধারানির পুজো হয়। মদনমোহন মন্দির ছাড়াও বেশ কিছু স্থায়ী ও অস্থায়ী আখড়া ঘিরে জমে ওঠে পনেরো দিনের মেলা। সেখানে পূজার্চনার পাশাপাশি চব্বিশ প্রহর কীর্তনের আসর বসে, কোথাও বা বাউল। এই কীর্তন যেমন বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সাধন ভজনের মাধ্যম, তেমনি পদাবলি সাহিত্য ও কীর্তন বঙ্গে সংস্কৃতির এক ঐতিহ্যশালী উপাদান। শহরে আজ ব্রাত্য হলেও গ্রামবাংলার সংস্কৃতিতে যাত্রাপালার সঙ্গে আজও টিকে আছে কীর্তন। আর কীর্তন এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ।
আর এই মেলায় ছিল SRMB এর সামাজিক দায়বদ্ধতা বিভাগের সহযোগিতায় এবং ব্যাবসায়ী বিমল চন্দ্র দাসের উদ্যোগে দর্শনার্থী সহায়তা শিবির । এই বিভাগের আধিকারিক রঘুমণি চাটার্জী জানান “আমরা পৌছে গেছিলাম এই মেলা চলাকালিন দিন গুলোতে আগত দর্শনার্থীদের জন্য জল, কিছু শুকনো খাবার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা নিয়ে। তার সঙ্গে চৈতন্যদেব পদধূলি ধন্য ঐতিহাসিক গৌড় টাও ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। ”