লকাতা, ১৪ এপ্রিল ২০২৫: দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও পালন করতে চলেছে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’। কেন্দ্রের ঘোষিত ২০ জুন নয়, রাজ্যের নির্ধারিত ১লা পৌষ দিনটি এবার থেকে সরকারি দপ্তরেও পালন করা হবে। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে চলছে তুমুল আলোচনা।

কেন এত বিতর্ক ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ নিয়ে?
২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে ২০শে জুন দিনটিকে ঘোষণা করে, যেদিন ১৯৪৭ সালে বঙ্গ বিভাজনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই তারিখে আপত্তি জানিয়ে বরাবরই জানিয়ে এসেছে যে, বিভাজনের দিন নয়, বাংলা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও গৌরব উদযাপনের দিন হওয়া উচিত। সেই জায়গা থেকেই ২০২৩ সালে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করে নির্ধারণ করা হয় ১লা পৌষ (বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী) দিনটি ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করার।

এই বছর থেকে সরকারি স্তরেও উদযাপন:
রাজ্যের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার থেকে সরকারি দপ্তরেও উদযাপিত হবে এই দিনটি। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী। ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে জানানো হয়েছে এই উদ্যোগ সম্পর্কে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসনকেও নির্দেশ:
শুধু সরকারি দপ্তরই নয়, স্কুল-কলেজ ও ব্লক স্তরের প্রশাসনিক কার্যালয়গুলোকেও এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মতে, এই আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলার ইতিহাস ও গৌরবময় ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে উঠবে।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া:
তবে এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর থেমে থাকেনি। বিরোধীরা একে ‘রাজনৈতিক পাল্টা’ বলেই অভিহিত করছেন। বিজেপি নেতাদের একাংশের অভিযোগ, “রাজ্য সরকার বিভাজনের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।”
জনমানসে কেমন প্রভাব?
সাধারণ মানুষ এই সিদ্ধান্তকে মূলত ইতিবাচক চোখেই দেখছেন। অনেকেই বলছেন, “বাংলার নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে, তাই সেই ধারাবাহিকতাকে গুরুত্ব দিয়েই দিবস পালিত হওয়া উচিত।”