পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার, সেনা-আসামরিক যৌথ মহড়া, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা।
বিস্তারিত প্রতিবেদন:
পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার আবহে গোটা ভারতে বুধবার ২৫৯টি স্থানে একযোগে নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে আয়োজিত এই সমন্বিত নিরাপত্তা মহড়ায় অংশ নিয়েছে সেনা, আধাসেনা, রাজ্য পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগসমূহ। পশ্চিমবঙ্গও এই মহড়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল, যেখানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক স্পটে নজিরবিহীন তৎপরতা দেখা গেছে।

মহড়ার মূল উদ্দেশ্য কী?
সূত্রের খবর, এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদী হুমকির মুখে ভারতের প্রতিরক্ষা কাঠামোর প্রস্তুতি যাচাই করা। বায়ুসেনা ঘাঁটি, পারমাণবিক কেন্দ্র, গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবন, রেল স্টেশন, বিমানবন্দর, জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র—সব ক্ষেত্রেই করা হয় জরুরি পরিস্থিতির মহড়া।

পশ্চিমবঙ্গেও কঠোর নিরাপত্তা:
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর, খড়গপুর, এবং হাওড়ায় এই মহড়ার অংশ হিসেবে বিশেষ পুলিশ ও এনএসজি (ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড) ইউনিট মোতায়েন করা হয়। কলকাতা বিমানবন্দর, মেট্রো রেলপথ এবং রাজ্য সচিবালয়ের আশপাশের এলাকায় চূড়ান্ত নজরদারি বজায় রাখা হয়। সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক করা হয়, তবে আতঙ্কিত না হওয়ার আবেদনও জানানো হয় প্রশাসনের তরফে।

কেন এই মুহূর্তে মহড়া?
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানের তরফে সীমান্তে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত। সেইসঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, কিছু নির্দিষ্ট স্থানে নাশকতার ছক কষা হয়েছিল—তাই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই মহড়ার আয়োজন।

সেনা-প্রশাসনের বার্তা:
একটি উচ্চপদস্থ সরকারি সূত্র জানিয়েছে, “এটি নিছক মহড়া নয়, এটা প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির বাস্তবায়ন। আমরা চাই প্রতিটি স্তরে তৎপরতা ও সমন্বয় থাকুক যাতে হঠাৎ কোনো আঘাত এলে তার মোকাবিলা করা যায়।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীও জানিয়েছেন, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া:
নিরাপত্তা মহড়ার কারণে কিছু এলাকায় যানজট ও সাময়িক অসুবিধা দেখা দিলেও অধিকাংশ নাগরিক এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, বর্তমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই সতর্কতা খুবই জরুরি।