বিশ্বের সবচেয়ে মুল্যবান ও বিতর্কিত হীরে কোহিনূর। এতদিন ধরে ব্রিটেনের দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাজমুকুটে গাঁথা ছিল এই হীরে। টানা ৭০ বছর সেই মুকুট ছিল তাঁর মাথায়। দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর এবার তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যেতে চলেছে এই হিরে।ইংল্যান্ডের রাজার দায়িত্ব পেয়েছেন চার্লস। ৭২ বছর বয়সে প্রিন্স চার্লস থেকে রাজা তৃতীয় চার্লস হলেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন হল কোহিনূর বসানো মুকুট কি তাঁর মাথায় শোভা পাবে?
সূত্রের খবর, কথিত আছে ভারতের গোলকোণ্ডা থেকে পাওয়া যাওয়া ১০৫.৬ ক্যারাটের এই হিরের সঙ্গে অভিশাপ জড়িয়ে আছে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে কোহিনূর হয় দেবতা, নয়তো নারী পরতে পারেন। পুরুষের কখনোই এই রত্ন সহ্য হয় না । ইতিহাস সাক্ষী আছে, যতবারই কোনও পুরুষ কোহিনূর ধারণ করেছেন, ততবারই জীবনে নিয়ে এসেছে বিপর্যয়। যতই তিনি ইংল্যান্ডের রাজবংশের রাজা হন না কেন, একমাত্র রানিই এই হিরের অধিকারিনী। আর তাই দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর চার্লসের দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যামেলিয়া পার্কার এই হিরেটির অধিকারী হয়েছেন।
পারসিক ভাষায় কোহিনুর কথার অর্থ আলোর পর্বত। দুর্মূল্য এই হীরের প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘যে পুরুষ কোহিনূর ধারণ করবেন, তিনি গোটা বিশ্বকে জয় করবেন, কিন্তু তার সঙ্গে দুর্ভাগ্যের খাঁড়াও তাঁর উপর নেমে আসবে।’
রানি এলিজাবেথের প্ল্যাটিনামের মুকুটে বসানো এই হিরে ১৪ শতকে ভারতের গোলকোণ্ডায় পাওয়া গিয়েছিল।
কটি মন্দিরের দেবতার চোখে এটি খোদিত ছিল। পরে আলাউদ্দিন খিলজি এটি দখল করেন। তারপর নানা হাত ঘুরে এটি এসে পৌঁছয় রণজিত্ সিং-এর কাছে। মৃত্যু পর্যন্ত তার সঙ্গেই ছিল এই মুকুট। নিজের উইলে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে কোহিনূর দান করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলে রণজিত্ সিং। কিন্তু তাঁর ছেলে দলীপ সিং ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির চাপের মুখে রানি ভিক্টোরিয়াকে এটি দিতে বাধ্য হন। ভারতীয়দের মতে ইংরেজরা কোহিনূর চুরি করে নিয়ে গেছে। যদিও ইংরেজদের দাবি যে এটা তারা উপহার পেয়েছিল।