পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ অনিমেষ অর্ক অর্জুন দীপাবলি আজ থেকে অনাথ হয়ে গেল। গতকাল বিকেল ৫:৪৫ এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৭৯ বছর। গত ২৫ শে এপ্রিল থেকে তিনি হসপিটালে ভর্তি ছিলেন। ব্রেনে রক্ত জমাট বেধে যাওয়ার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। তবে দিন দিন অবস্থার অবনতি হচ্ছিল বলেই জানা যায়। তবে তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তবে গতকাল সেই লড়াইয়ের অবসান ঘটে। তার বাড়ীর লোকেরা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানায় তার মৃত্যু সংবাদ।
১৯৪৪ সালের ১০ই মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
তার ছোট বেলা কেটেছিল পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা ডুয়ার্সে। ১৯৬৭ সালে তার প্রথম গল্প দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ প্রকাশিত হয়েছিল দেশ পত্রিকায়। অর্জুন সমগ্র তার গোয়েন্দা ও রোমাঞ্চে ভরপুর অভিনব সৃষ্টি। তবে তাকে মানুষ সবচেয়ে বেশি মনে রাখে ‘অনিমেষ সিরিজ’-এর জন্য। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ, মৌষলকাল পড়েননি এমন বাংলা সাহিত্যপ্রেমী খুজে পাওয়া বিরল। সাতকাহন, সিংহবাহিনী, গর্ভধারিণী তার অন্যতম উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি। ২০১৩ সালে তার অর্জুন কাহিনী ‘কালিম্পং-এ সীতাহরণ’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র। ২০০৯ সালে তার সবথেকে বিখ্যাত উপন্যাস কালবেলা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র।
১৯৮৪ সালে তিনি ‘কালবেলা’ উপন্যাসের জন্য সাহিত্য একাডেমী পুরষ্কার পান। এছাড়াও তিনি আনন্দ পুরষ্কার ও বঙ্কিম পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে ‘বঙ্গ বিভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত করেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং সাহিত্য জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা পিটিআই
কে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করে তার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি শোক ও সান্ত্বনা প্রদান করেছেন।
কাল তিনি চলে গেছেন। কিন্তু এই সব মানুষ যে মৃত্যুর উর্দ্ধে। তিনি বেঁচে থাকবেন আজীবন। তিনি বেঁচে থাকবেন অনিমেষ অর্ক অর্জুনের হাত ধরে। যতদিন বাংলা সাহিত্য থাকবে যতদিন বাংলা সাহিত্যপ্রেমী থাকবে ততদিন তিনিও থাকবেন, তার সৃষ্টিতে এবং পাঠকের মনে।