Home » শুভ জন্মদিন প্রাণের ঠাকুর – প্রাণের মানুষ

শুভ জন্মদিন প্রাণের ঠাকুর – প্রাণের মানুষ

পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ রবিঠাকুর ছাড়া বাঙালি জীবন অসম্ভব। বাঙালির আত্মার সাথে মিশে আছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সুখ, দুঃখ, বেদনা, ভালোবাসা, আনন্দ, অভিমানের শেষ আশ্রয়স্থল রবিঠাকুর। আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক নির্ভরতার প্রতীক বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষ রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের হাত ধরেই। মানবজীবনের এমন কোন অনুভুতি বোধহয় নেই যেখানে রবি ঠাকুরের কলম পৌঁছায়নি। রবি ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মদিন আজ। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ শে বৈশাখ জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নানা আয়োজনে বিশ্ব কবিকে স্মরণ করছে অগণিত ভক্ত। শুধু বাঙালি নয় বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষরা কবির জন্মদিন পালন করছে হৃদয় উচ্ছসিত আবেগ ও শ্রদ্ধায়।

বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেননি। গৃহ শিক্ষক রেখে বাড়িতে তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ৮ বছর বয়েসে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধনী পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। এরপরের কথা সবার জানা। সাহিত্যের সব অঙ্গনেই তার অবাধ গতি অবারিত দ্বার। গান কবিতা গল্প উপন্যাস নাটক প্রবন্ধ গীতিনাট্য নৃত্যনাট্য কি সৃষ্টি হয়নি তার কলমে? তার লেখা প্রায় ২৫০০ গান বাঙালি সুখ দুঃখ কষ্ট আনন্দ ভালোবাসা অভিমান বাঙালির প্রতিটা আবেগে বাঙালিকে জড়িয়ে রেখেছে। রবিঠাকুর ই একমাত্র লেখক তার লেখা দুটি গান দুটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত। এছাড়াও তার অসংখ্য দেশাত্মবোধক গান স্বাধীনতা আন্দোলনে মানুষকে সীমাহীন প্রেরণা জুগিয়েছে।

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থ ইংরেজিতে অনুবাদ করার জন্য নোবেল পুরস্কার পান তিনি। যা এশিয়া মহাদেশের প্রথম সাহিত্যে পাওয়া নোবেল পুরষ্কার। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন কিন্তু ১৯১৯সালে জালিয়নওয়ালাবাগের হত্যার প্রতিবাদে সে উপাধি ত্যাগ করেন।

১৯০১ সালে শান্তি নিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এরপর থেকে সেখানেই পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি। সেখানে মুক্ত বাতাসে পড়াশোনা করার জন্য তিনি পাঠভবন তৈরি করেন। এছাড়াও শান্তি নিকেতনের গরীব মানুষদের জীবীকার কথা ভাবতে গিয়ে তাদের জন্য হাতের কাজ করে উপার্জন করার জন্য শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৩৭ সালে একবার হঠাৎ করে অচৈতন্য হয়ে গিয়ে আশঙ্কা জনক অবস্থা হয়েছিল কবির। সেবার সেরে উঠলেও ১৯৪০ সালে অসুস্থ হয়ার পর আর তিনি সেরে উঠতে পারেননি। এই সময়ের লেখা ছিল মৃত্যু চেতনাকে কেন্দ্র করে। মৃত্যুর ৭দিন আগে পর্যন্ত তিনি সৃষ্টিশীল মনের অধিকারী ছিলেন। ১৯৪১ সালের ২২ সে শ্রাবণ জোড়াসাঁকোয় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!