পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ কথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালি। বাঙালি মাছ ভালবাসলেও মাছের আঁশ তাদের একদম পছন্দ নয়। বাজারে গিয়ে বেশ কড়া সুরে বিক্রেতাকে ধমক দিয়ে সবাই বলে ভালো করে আঁশ ছাড়াতে। মাছে আঁশ লেগে থাকলে স্বাদ ভালো হয়না। অথচ এই মাছের আঁশেই রয়েছে ত্বকের বয়স ধরে রাখার রহস্য।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকেরও বয়স বাড়ে, যাকে আমরা বলি স্কিন এজিং। বলিরেখা, ত্বক কুঁচকে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ত্বকের উজ্জ্বল্য কমে যাওয়া স্কিন এজিং এর লক্ষণ। বয়স বাড়ার সাথে ত্বকের উপরের এপিডার্মিস স্তর পাতলা হয়ে যায় এবং মেলানিন কমে যেতে শুরু করে যার জন্য ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে। অন্যদিকে সংযোগকারী টিস্যুর ইলাস্টিসিটি ক্ষয় হতে থাকে যার জন্য চামড়া ঝুলে যেতে থাকে। শরীরে কোলাজেনের অভাবের জন্যই দেখা যায় এই সব সমস্যা গুলি। শরীরে যদি কোলাজেন ধরে রাখা যায় তবে বয়স বাড়লেও ত্বকের বয়স বাড়ে না। সেই সঙ্গে কোলাজেন চুল পড়ে যাওয়াও আটকাতে সক্ষম। কিন্তু বয়সের সঙ্গে কোলাজেনর ঘারতি ঘটে শরীরে। বিজ্ঞানীরা বলছেন কোলাজেন পাওয়া যায় মাছের আঁশে।
১০ কেজি মাছের আঁশ শুকিয়ে ৪ কেজি শুকনো আঁশ পাওয়া যায়। তারপর কিছু বিশেষ পদ্ধতিতে তার থেকে খনিজ পদার্থ বাদ দিয়ে তা ২ কেজিতে এসে দাঁড়ায়। এই ২ কেজি আঁশ থেকেই ৬০০ গ্রাম কোলাজেন পাওয়া যায়। অর্থাৎ ১০ কেজি আঁশ থেকে ৬০০ গ্রাম কোলাজেন পাওয়া যায়। সেই কোলাজেন দিয়েই তৈরি পাউডার বয়স ধরে রাখতে পারে। কলকাতায় এই কোলাজেন তৈরি হয়না। মাছের আঁশকে দিল্লীতে এবং গুজরাটে পাঠানো হয় কোলাজেন তৈরির জন্য।
কোলাজেন পাউডার ভারতে তৈরি হলেও তা বেশিরভাগ সময় পাড়ি দেয় বিদেশে। এদেশের মানুষ এখনও কোলাজেন পাউডারের ব্যবহার তেমন ভাবে জানে না। ভারতে তৈরি কোলাজেন পাউডার বেশিরভাগটাই যায় জাপানে। মাছ বাঙালির খাদ্য হলেও তার থেকে পাওয়া সুবিধা বাঙালি জানে না, জানে বিশ্ববাসী।