পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ দ্য কেরালা স্টোরি ব্যান হওয়া নিয়ে সরব হয়ে আছে নেট দুনিয়া। কিছুদিন আগে দেবের প্রজাপতি সিনেমাটি নন্দনে কেন চলল না তাই নিয়েও অনেক লেখালেখি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বড় সংবাদ মাধ্যম কেউই চুপ ছিল না সেই ব্যাপারে। কিন্তু এখন বাংলায় সদ্য মুক্তি পাওয়া দুই সিনেমা নন্টে ফন্টে এবং টেনিদা নন্দনে জায়গা পেল না সেই বিষয় নিয়ে নীরব সকলেই। কোন সংবাদ মাধ্যম বা সাধারণ মানুষ কেউই এই বিষয়ে মুখ খোলেননি। নারায়ণ দেবনাথ এবং নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় যাদের লেখা পড়ে বড় হয়েছে বাঙালি সেই দুই লেখকের দুই অমর সৃষ্টি নন্দন থেকে বাদ পড়ল তাই নিয়ে চুপ কেন সকলে? তাহলে কি ধরে নিতে হবে বাঙালি আর আবেগকে গুরুত্ব দেয়না গুরুত্ব দেয় শুধু বাজেটকে ?
১৯শে মে একই দিনে মুক্তি পেয়েছে দুটি ছোটদের ছবি নন্টে ফন্টে এবং টেনিদা। নন্টে ফন্টে ইতিমধ্যেই সারা ফেলে দিয়েছে দর্শকমহলে। টেনিদার রেটিং সেই তুলনায় একটু পিছিয়ে। কিন্তু এই দুটি ছবিই শহরের অনেক প্রেক্ষাগৃহে চললেও শহরে সিনেমার প্রাণকেন্দ্র নন্দনে জায়গা পায়নি একটি ছবিও। নন্দনে লাভ ম্যারেজ, ফাটাফাটি, একেন বাবু সগৌরবে চলছে। কিন্তু মুলত ছোটদের জন্য বা বলা যায় সব বয়সের মানুষের জন্য তৈরি এই দুটি সিনেমা সেখানে জায়গা পেল না কেন? এই প্রসঙ্গে আমরা কথা বলেছিলাম নন্টে ফন্টে ছবির পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী এবং টেনিদা ছবির পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের সঙ্গে।
পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী জানান নন্দনে ছবিটি প্রদর্শনের জন্য তারা নন্দন কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করলেও কোন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তারা পায়নি। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘’হয়তো তারা যোগ্য মনে করেনি নন্টে ফন্টেকে বা নারায়ণ দেবনাথকে নন্দনে চালানোর মত।‘’ অনির্বাণ চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘’ যদি নন্দনে প্রদর্শিত হত তাহলে হয়তো আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাত নন্টে ফন্টে। তার কারণ নন্দনে কমদামে ভালোভাবে সিনেমা দেখা যায়।‘’ তিনি জানান নন্টে ফন্টে কে নন্দনে প্রদর্শনের জন্য তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করেছিলেন কিন্তু সেখান থেকেও কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল এ বিষয়ে তেমন কিছু বলেননি। তিনি শুধু আক্ষেপ করে বলেন, ‘’এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা নন্দন ছাড়া সিনেমা দেখেননা। তারা তাহলে কীভাবে সিনেমাটা দেখবে?’’ নন্দনে সিনেমাটি প্রদর্শিত হলে আরও বেশি মানুষ সিনেমাটি দেখতে পেত বলে মনে করছেন তিনি। তবে পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল এই বিষয়ে আশাবাদী তিনি আশা করছেন, ‘’এখন যে সব সিনেমা নন্দনে চলছে সেগুলি নেমে গেলে হয়তো টেনিদা নন্দন পাবে।‘’ নন্দন কলকাতায় সিনেমার প্রাণকেন্দ্র। নন্দনে বহু মানুষ সিনেমা দেখতে আসেন। নন্দনের টিকিটের দাম এত কম হওয়ায় যেকোনো মানুষের পক্ষেই নন্দনে সিনেমা দেখা সম্ভব। তাছাড়া নন্দনে অডিও ভিসুয়াল কোয়ালিটি খুব ভালো। আর বাচ্চাদের জন্য নন্দন খুবই আনন্দের এবং পছন্দের একটি জায়গা। সেই জায়গায় বাচ্চাদের সিনেমা সুযোগ না পাওয়া এক চরম মর্মান্তিক ঘটনা।
দুই পরিচালকই মনে করছেন নন্দনে ছবিদুটি প্রদর্শিত হলে দর্শকদের কাছে ছবিদুটির গ্রহণযোগ্যতা আরও বেশি হত।