Home » ভুলে যাওয়া বাঙালি রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মভূমিতেই ব্রাত্য

ভুলে যাওয়া বাঙালি রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মভূমিতেই ব্রাত্য

পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ ছোটবেলায় ইতিহাস বইতে মহেঞ্জোদারোর আবিষ্কর্তা রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আমরা সকলেই পড়েছি, কিন্তু তাকে মনে রেখেছি কি? এত বছর আগের একজন মহান আবিষ্কারক প্রত্নতত্ত্ববিদ তাকে বাঙালি ভুলেই গেছেন। বাঙালি তো অনেক বড় একটা পরিসর তার জন্মস্থান মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর সেখানকার বাসিন্দাও কি তাকে মনে রেখেছে? না মনে রাখেনি তাকে।

ভুলে যাওয়া বাঙালি রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মভূমিতেই ব্রাত্য

যে মহান মানুষ জন্মভূমি থেকেই ব্রাত্য সে আর বাঙালির কাছে কি প্রত্যাশা রাখবে? কখনও বহরমপুর ষ্টেশনে নেমে কোন মানুষকে জিজ্ঞেস করবেন তো রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িটা কোথায়? সংরক্ষণ তো দুরের কথা বাড়িটার হদিশই কেউ দিতে পারবে না। বহরমপুরের ভাগীরথী নদীর ওপর যে সেতু রয়েছে তার নাম বিখ্যাত প্রবন্ধকার রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদীর নামে। তিনিও মুর্শিদাবাদের গর্ব। কিন্তু তিনি বহরমপুরের বাসিন্দা নন। তাহলে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাকে মনে রেখেছে আর খোদ শহরের নিজের ছেলের ওপর এত অবহেলা ?

ভুলে যাওয়া বাঙালি রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মভূমিতেই ব্রাত্য

বাঙালির কাছে মহেঞ্জোদারোর আবিষ্কারক রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায় হলেও সাড়া পৃথিবীর কাছে মহেঞ্জোদারো সভ্যতার আবিষ্কারক ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ জন মার্শালের। শোনা যাচ্ছে জন মার্শাল নাকি তার এই আবিস্কার চুরি করে নিজেই কৃতিত্ব নিয়েছিলেন। লেখক পি কে মিশ্র তার সদ্য প্রকাশিত বই ‘রাখাল দাস ব্যানার্জী- দ্য ফরগটন আর্কিওলজিস্ট’ বই টিতে এমনই অভিযোগ করেছেন জন মার্শালের নামে। ১৯২২ সালে জন মার্শাল মহেঞ্জোদারোর আবিস্কারের রিপোর্ট নিজের নামে প্রকাশ করেন। অথচ শোনা যায় তিনি ওই জায়গায় ১৯২৫ সালে প্রথম যান। আর রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯১৮ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত সেখানে থেকে রিপোর্টটি তৈরি করেন। কিন্তু জন মার্শাল রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঊর্ধ্বতন হওয়ায় সেই রিপোর্টের কৃতিত্ব হস্তগত করে নেন।

ভুলে যাওয়া বাঙালি রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মভূমিতেই ব্রাত্য

মহেঞ্জোদারো আবিস্কারের আগে তিনি অনেক গুলি ইতিহাস ভিত্তিক বই লিখেছিলেন। ‘পাষাণের কথা’, ‘শশাঙ্ক, ধ্রুব এবং করুণা’, ‘ধর্মপাল’, ‘ময়ূখ’ প্রভৃতি তার লেখা যুগান্তকারী সৃষ্টি। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে কারবাঙ্কল রোগে মারা যান তিনি। আজ তার প্রয়াণ দিবস কিন্তু কজন মানুষ জানে সেই কথা? তাকে মনে রেখেছে কজন? ২০২২ সালে তার ১৩৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে কলকাতা ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে তাকে নিয়ে এবং তার আবিস্কার নিয়ে একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছিল। এছাড়া তার জন্য আর কিছুই করেনি বাংলা এবং বাঙালি। প্রয়াণ দিবসে তাকে দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিক্লসের পক্ষ থেকে তাকে প্রণাম ও শ্রদ্ধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!