পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ বাংলা সাহিত্যের বয়স নির্ধারণ করতে গেলে তা হয়তো সম্ভব নয়, এর ব্যপ্তি বিশাল। তাই এই বিশাল ব্যপ্তির পরিষরে ছড়িয়ে আছেন অসংখ্য লেখক লেখিকা। এই সমস্ত বর্ষীয়ান মানুষদের ভিড়ে এক নতুন উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম স্মরণজিৎ চক্রবর্তী। যাকে নিয়ে চর্চা হয় খুব কম। অথচ তার বই ‘Out of stock’ এবং ‘Reprint’ হয়েই চলেছে। প্রতিবছর বইমেলায় তার একটা নতুন বই বা পূজাবার্ষিকীতে তার একটা নতুন গল্প বা উপন্যাসের জন্য মুখিয়ে থাকে বহু বাঙালি পাঠক পাঠিকা। এহেন নবপ্রজ্জলিত নক্ষত্রের আজ ৪৭ তম জন্মদিন। অথচ তাকে নিয়ে তেমন একটা চর্চা হচ্ছে না কোথাও।
স্মরণজিৎ চক্রবর্তী প্রচার বা চর্চার উর্দ্ধে কারণ তিনি নিজেই হয়তো প্রচার চান না, নাহলে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তিনি কোন রকম সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবেন না এটা সম্ভব হতনা হয়তো। পাঠকের ভালোবাসাই তার একমাত্র প্রচার। উনিশ-কুড়ি র হাত ধরে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমান যুগের কোন গল্পের ম্যাগাজিনই বোধহয় তার স্পর্শ ছাড়া নেই। এই কুড়ি বছরের লেখক জীবনে ২৪ টা উপন্যাস, গোয়েন্দা গল্পের সিরিজ, কল্পবিজ্ঞানের কিছু উপন্যাস, কবিতার বই, এবং অসংখ্য ছোটগল্প পাঠককে উপহার দিয়েছেন তিনি। তার ছোট গল্প নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘পঞ্চাশটি প্রিয় গল্প’ নামক বইটি ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে পাঠক মহলে।
স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর গুণমুগ্ধ পাঠকের সংখ্যা যেমন অগুন্তি তেমন তার লেখা নিয়ে বিরুদ্ধ চিন্তাভাবনার পাঠকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তার লেখা পছন্দ করেনা বা তার লেখা কোন বই পড়ে না এমন মানুষ অনেক আছে। তবে শুধু বই পড়েনা তা নয়, তার লেখা নিয়ে সমালোচনারও শেষ নেই।
বহু পাঠকের মন্তব্য তার লেখা এক ঘেয়ে এবং নির্দিষ্ট সমাজ কেন্দ্রিক। যদিও এই তীব্র সমালোচনার কোন প্রতিবাদ কখনও করেননি লেখক। বইপাড়ায় সদ্য গজিয়ে ওঠা স্বঘোষিত লেখকদের দলে পড়ে না বলেই বোধহয় তিনি সমস্ত সমালোচনা মাথা পেতে গ্রহণ করেন। যে কয়েকজন মুষ্টিমেয় পাঠক তাকে ভালোবাসে তার লেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকে, তাদের জন্য তার কলম সদা প্রস্তুত। নিজে একজন গুণমুগ্ধ পাঠক হয়ে তার সকল পাঠকদের পক্ষ থেকে তার জন্য জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা এবং নতুন কিছুর অপেক্ষায় থাকার প্রতিশ্রুতি।