পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ মায়াপুর ইস্কন নিয়ে তোলপাড় নেট দুনিয়া। মায়াপুরের এক সন্ন্যাসী অমোঘ লীলা দাস রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং স্বামী বিবেকানন্দ কে প্রকাশ্যে সামাজিক মাধ্যমে অপমান করেছেন। তা নিয়ে তোলপাড় নেট দুনিয়া। এমনকি বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষও সরব হয়েছে এই ব্যাপারে। হ্যাঁ সেই কথার জন্য ক্ষমা চেয়েছে মায়াপুর ইস্কন কর্তৃপক্ষ এবং অমোঘ লীলা দাস। ক্ষমা চাওয়ার রেকর্ড কোথায়? অপমানের রেকর্ড তো পাওয়া যাচ্ছে, প্রকাশ্যে অপমান করলে আর ঘরের মধ্যে ক্ষমা চাইলে সব দোষ মিটে যায়?
মায়াপুর ইস্কনের সন্ন্যাসী অমোঘ লীলা দাস বিবেকানন্দ কতটা সন্ন্যাসী সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি নিজে কতটা সন্ন্যাসী? সন্ন্যাসী হতে গেলে যে ত্যাগ দরকার যে যোগ দরকার তা তার নিজের মধ্যে আছে তো? ভিডিও টি ভালো ভাবে দেখলে বোঝা যাবে তার হাতে টমি হিলফিগারের ঘড়ি রয়েছে। বর্তমান বাজারে তার বাজার দর ঠিক কতটা তা বোধহয় সকলেই জানেন। বহুমূল্য ঘড়ি হাতে নিয়ে তিনি নিজেকে সন্ন্যাসী প্রমান করছেন? সামান্য সময়ের হিসেবের জন্য যে মানুষ এমন ঘড়ি পড়ে তার মুখে ত্যাগের কথা মানায় কি?
স্বামী বিবেকানন্দের আমিষ খাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পড়ে অবশ্য ইস্কন কর্তৃপক্ষের ক্ষমা পত্রে এর জন্যও ক্ষমা চেয়েছেন তারা বলেছেন সেটা যার যার ব্যক্তিগত পছন্দ। এই অমোঘ লীলা দাস ওরফে আশিস আরোরা ২০১০ সাল পর্যন্ত আদ্যপান্ত কর্পোরেট কর্মী ছিলেন। পেশায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। তারপর সব ছেড়ে সন্ন্যাস জীবন। তিনি কি তবে সন্ন্যাস জীবন কে ক্যারিয়ার অপশন হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। তাহলে সেই মানুষকে যে স্বামী বিবেকানন্দ বা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ত্যাগ সততা বুঝবেন এমনটা আশা করাও বোধহয় ভুল।
ইস্কন কর্তৃপক্ষ এই কাজের জন্য ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি অমোঘ লীলা প্রভুকে ১ মাসের জন্য বয়কট করে। অমোঘ লীলা দাস নাকি এই একমাস প্রায়শ্চিত্য করার জন্য পাহাড়ে গিয়ে তপস্যা করবেন। পাহাড়ে গেলেই তার মনের এই বিষ মহান মানুষের প্রতি যে ঘৃণা তা কমে যাবে? একদিন আগে যে লোক এত অপমান করে সে একদিনের মধ্যে মত পাল্টে ক্ষমা চেয়ে ভালো মানুষ হয়ে গেছে এটা বিশ্বাসযোগ্য? ক্ষমা তিনি মন থেকে চেয়েছেন? তাহলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাক, সেই সৎসাহস যে মানুষের নেই সে নিজেকে সন্ন্যাসী বলে দাবী করে কোন সাহসে? এক মাস তিনি ফিরে আসলে সবাই সব ভুলে যাবে? সব অপমানের ক্ষমা পাওয়া হয়ে যাবে? যে নিন্দার ঝড় উঠেছে তা বন্ধ হয়ে যাবে? হিন্দু সমাজের দুই দিকপাল মানুষকে অপমান করার জন্য শুধু একমাস পাহাড় বেড়াতে যাওয়াই যথেষ্ট শাস্তি? একমাস পর ইস্কন তাকে গ্রহণ করলেও সন্ন্যাসী হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা মানুষের মনে আর কখনও হবে না। এমনকি ইস্কনের অন্য কোনও সন্ন্যাসীও সেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।