সিকিমের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হল এই বাবা মন্দির বা বাবা হরভজন সিং মন্দির । মন্দির টি ভারতের বীর জওয়ান বাবা হরভজন সিং কে উৎসর্গ করেই তৈরী করা হয়েছে । এখানে ক্যাপ্টেন বাবা হরভজন সিং কে শ্রদ্ধা জানাতে দুটি মাজার তৈরী করা হয়েছে । ১৯৪৭ সালের ৩০শে আগস্ট গুজরান ওয়ালা জেলার সদরনা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে যেটি পাকিস্তানে অবস্থিত।
এই বাবা মন্দির কে ঘিরেই রয়েছে নানান কাহিনী । সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার ওপরে ভারত ও চিনের মধ্যবর্তী এলাকা নাথুলা । ঐতিহাসিক সিল্ক রুটে যাবার পথ এখন থেকেই শুরু আর এখানেই ভারতের প্রয়াত বীর সেনা বাবা হরভজন সিং এর মন্দির রয়েছে ।
অবাক করা বিষয় হলো , বর্তমান কালেও এখানে সীমান্তে ভারত ও চিন সেনা বাহিনীর মাসিক আলোচনা সভায় একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয় । তাদের বিশ্বাস এই চেয়ারেই বসেন প্রয়াত বীর জওয়ান বাবা হরভজন সিং।
১৯৬৮ সালের ৪ ঠা অক্টোবর , বন্যার মধ্যে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে নিখোঁজ হন বাবা হরভজন সিং। বেশ কিছুদিন যাবৎ তার কোন খোঁজ পাননি ভারতীয় সেনা বাহিনী। শোনা যায় এর পরেই হরভজন সিং এর এক সহ কর্মীর স্বপ্নে বাবা হরভজন সিং জানান ঐ অঞ্চলের একটি বিশেষ জায়গায় ওনার দেহাবশেষ আটকে রয়েছে । এই একই স্বপ্ন দেখেন আরো অন্য সেনা জওয়ানরাও । তারা সব কিছু উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানালে একাধিক সেনা বাহিনী পাঠিয়ে ঐ নির্দিষ্ট অঞ্চলে বাবা হরভজন সিং এর দেহাবশেষ খুঁজতে পাঠানো হয় এবং ওখানেই পাওয়া যায় বাবা হরভজন সিং এর দেহাবশেষ।
এই ঘটনাটিকে সাধারণ স্থানীয় মানুষ ও সেনা বাহিনীর অন্য জয়ওয়ান রা অলৌকিক বলেই মনে করেন ।
আরো শোনা যায় , বাবা হরভজন সিং স্বপ্নে তার সোহকর্মীদের কাছে দুটি অনুরোধ করেছিলেন । প্রথম টি ছিল ঐ স্থানে তার নামে সমাধি তৈরী করা ও দ্বিতীয় টি ছিল মৃত্যুর পরেও তিনি সেনা হিসাবে কর্মরত থাকবেন । সেই থেকে আজও ভারত ও চিনের মাসিক বৈঠকে বাবা হরভজন সিং এর উদ্দেশ্যে একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয় ।
এমনকি ভারত ও চিনের সীমান্ত রক্ষীরা অনেকেই এক সেনা কে একটি ঘোড়ায় চড়ে ভারত সীমান্ত কে পাহারা দিতে দেখেছেন । সকলেই মনে করেন ইনি আর কেউ নন স্বয়ং বাবা হরভজন সিং । বাবা হরভজন সিং এর মন্দিরে তার রাখা বিছানার চাদর প্রতিরাতে গুছিয়ে পেতে রাখলেও সকালে এমন ভাবে অবিন্যাস্ত থাকে যা দেখলেই মনও হবে এখানে কেউ সদ্য ঘুমিয়ে উঠে গেছেন। তিনি আর কেউ নন স্বয়ং বাবা হরভজন সিং।
বছরের পর বছর , মাসের পর মাস ধরে হাজার হাজার পর্যটক ১৪০০০ ফুট ওপরে দর্শন করতে আসেন এই মন্দিরে । এখানে বাবা হরভজন সিং এর প্রসাদ বলতে নাকি শুধু এক বোতল পানীয় জল।
এবার এখানেই পৌঁছে গিয়ে স্বচক্ষে অনুভব করলেন বিশিষ্ট বাঙালি প্যারানরমাল রিসার্চার ডা উজ্বল গুপ্ত । না তিনি ওখানে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মানুষের আস্থা ও বাবা হরভজন সিং এর প্রতি অসম্মান করতে চাননি বরং মৃত সেনা বাহিনীর আত্মা কে কি ভাবে আজও দুই দেশের সেনা বাহিনী ও মানুষ সম্মান জানায় সেটাই দেখতে পৌঁছে গিয়েছেন ।
তবে তিনি একা নন , সাথে রয়েছেন জয় সরকার, জয়িতা সরকার, জয় মন্ডল, রিপন ভট্টাচার্য, রিয়া বিশ্বাস, শুভ বিশ্বাস, অভিজিৎ গারু ও ঋষিতা মুখোপাধ্যায়