পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ আচ্ছা ছোটবেলা থেকে আমরা বইয়ের পাতায় কটা ঋতু পড়েছি? ৬টা তাই তো? গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত। যদিও এখন ঋতু বৈচিত্র খুঁজতে গেলে অবশ্য ৬টা ঋতুকে আলাদা করে দেখতে পাওয়া যায়না। বছরে কমবেশি ২মাস শীত কাল আর বাকি সময়টা মোটামুটি গরমকাল। আর বর্ষা তো সারা বছর জুড়েই। বর্ষা কালে বৃষ্টির দেখা কম পাওয়া গেলেও বাকি মাস গুলোতে তার দেখা মাঝে মাঝেই পাওয়া যায়।
এ তো গেল ভারতের কথা। তবে পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে ঋতু আবার ৪টে। কিন্তু ভেবে দেখুন কোনও একটি দেশে ঋতু বৈচিত্রের হিসেবে দেখা গেল সেই দেশের ঋতুর সংখ্যা ৪/৬ নয় মোট ৭২টি ঋতু। হ্যাঁ শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও জাপানে ঋতুর সংখ্যা ৭২। চীন, জাপান সহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই ঋতুর হিসেব হয় চাঁদ ও সূর্যের অবস্থানের ওপর। পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যা পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এক একটি ঋতু। আমাদের এক পক্ষের মত ওইসব দেশে এক একটি ঋতু। অর্থাৎ ওই সমস্ত দেশগুলিতে বছরে ২৪ টি করে ঋতু দেখা যায়। সেখানে অবশ্য এগুলোকে বলা হয় ‘সেক্কি’।
তবে জাপানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু অন্য রকম। জাপানে আবার এই ২৪ টা ‘সেক্কি’ কে আবার তিনটি করে ভাগে ভাগ করে একটি ঋতু তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ জাপানে ঋতুর সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৭২ টি। একে জাপানী ভাষায় ‘কো’ নামে অভিহিত করা হয়। এই ‘কো’ শব্দের মানে করলে ইংরেজিতে দাঁড়ায় ‘মাইক্রো-সিজেন’, এবং বাংলায় ‘অণু ঋতু’। তার মানে জাপানে এক একটি ঋতুর সময়সীমা মাত্র ৫দিন। তবে সেই ঋতুর ভুমিকা জাপানে অপরিসীম। জাপানের কৃষিকাজ নির্ভর করে এই ঋতু বৈচিত্রের ওপরই। ফসলের বীজ বোনা থেকে শুরু করে ফসল কাঁটা পর্যন্ত সব প্রক্রিয়াটাই নির্ধারিত হয় এই ঋতু বৈচিত্রের ওপর নির্ভর করে। বিশ্বের আর কোনও দেশে এতগুলি ঋতু দেখা যায়না।