Home » একই গৃহে দেবী দুর্গার ৪২২ টি রুপ , কলকাতা তেই !

একই গৃহে দেবী দুর্গার ৪২২ টি রুপ , কলকাতা তেই !

অমিশি রায় ঃ    মিউজিয়াম ! মিউজিয়াম বলতে বোঝায় এমন একটি ভবন বা প্রতিষ্ঠান যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু ভগবানের মিউজিয়াম শুনেছেন কখনো ? সত্যিই অদ্ভুত…

পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত নিউ আলিপুর অঞ্চলের বাসিন্দা শ্রী প্রবীর কুমার মিশ্র , ১৩ বছর ধরে নিজের বাড়ির থার্ড ফ্লোরে একটি সাধনা কক্ষ তৈরি করেছে । প্রায় সাড়ে তেরো বছর ধরে তিনি মিশ্র বাড়ির একটি ইতিহাস তৈরি করেছে।

পুরো বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তিনি তুলে এনেছে নিজের ঘরে । পৃথিবী তে যত দেবী দুর্গার রূপ আছে তার মধ্যে ৪২২ টি রূপকে তিনি নিজের ঘরের তিন তলায় আশ্রয় দিয়েছে । ২০ অক্টোবর ২০১৫ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন এই সংগ্রহশালাটি।

ন বছর বয়সে পৈতে হয় তার । তার বেশ কিছুদিন পর তিনি সংগ্রহশালাটি তৈরী করেন তার মা স্বর্গীয় গীতা মিশ্ৰ আবদারে । মিউজিয়ামটির চার দেওয়ালের তিন দেওয়াল জুড়ে নানান মায়ের রূপ , কোনদিকে দেবী চন্দ্রভাগা তো কোনদিকে দেবী ফলাহারিনী আবার কোনদিকে উত্তরপ্রদেশের মাধবেশ্বারি বা মঙ্গলাগৌড়ি । আর মাঝের একটি দেওয়ালে দেবী অর্ণপূর্না। কথায় আছে অর্ণপূর্ণা দেবী দুর্গার আসল রূপ । তার নব রূপ সেই দেওয়ালের একদিকে মূর্তি হিসেবে রাখা ।

মায়ের বা দিকে নিচে রয়েছে ব্রাহ্মনী তার ওপরে মহশ্বরী ,তারপর একে একে কৌমারি ,বৈষ্ণবী ,নরসিংহী ,বরাহি, ইন্দ্রানী, চামুণ্ডা ,চণ্ডিকা । আর দেবীর সংসারে রয়েছে তার চার ছেলেমেয়ে সাথে মায়ের মাথার ওপরে রয়েছে স্বয়ং মহাদেব ।

দেবী অর্ণপূর্নার ঠিক পাশেই রয়েছে মা শ্যামার দুর্গা রূপ । দেবী দুর্গার মত তার দশ হাত রয়েছে । স্বয়ং মহাদেবের বুক ও পেট থেকে নির্গত হয়েছেন এই দেবী । অদ্ভুতভাবে এই দেবীর কোলে রয়েছে কৃষ্ণ । কথায় বলে বছরে দুবার নবরাত্রি পালিত হয় । সেই নবরাত্রিতে নয় দেবীর পূজা হয়। সেই নয় দেবী যেমন দেবী কুষ্মান্ডা, দেবী চন্দ্রঘন্টা, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী মহাগুরী, দেবী কাত্যায়নী যে মহাদেবের বুক থেকে নির্গত , দেবী শৈল পত্রী, দেবী সিদ্ধিধাত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিনী দেবী কালরাত্রি এই সকল দেবীর একটি মূর্তি তৈরি করা।

ঠিক তার পাশেই রয়েছে দশমহাবিদ্যা। এক কথায় দুর্গা কালী। আমরা সকলেই জানি মহোদয়ের যখন দেবী দুর্গাকে বাপের বাড়ি আসতে দিতে বারণ করেছিলেন তখন দেবী দুর্গা এই ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। তারপর থেকেই এই দেবীর গায়ের অর্ধেক রং হলুদ এবং অর্ধেক রং কালো। এই দেবীর মাথার উপরে অবস্থান করছে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর।

এখানে অবস্থিত প্রত্যেকটি দেবী প্রায় পিতলের তৈরি । তার বাড়িতে রয়েছে ব্রহ্মার স্থান। মা তারা থেকে শুরু করে বগলাবতি, মাতঙ্গী, ছিন্নমস্তা, কমলা, ভৈরবী, ত্রিপুরা সুন্দরী , মহাকালী সমস্ত দেবী পুজিত হয় তার বাড়ির ওই তিন তলার ঘর টা র মধ্যে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!