পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ মেজাজটাই তো আসল রাজা। সেটাই প্রমান করল উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারি দুই ছাত্র শুভ্রাংশু সর্দার এবং আবু সামাদ। প্রতিবছর মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হয় সাথে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু কৃতি ছাত্র ছাত্রীর নাম। এক থেকে দশের মধ্যে থাকে প্রায় ৬০-৭০ জনের নাম। সেই দিন তাদের নিয়ে কত লেখালিখি কত সাক্ষাৎকার, কিন্তু তারপর তারা কোথায় হারিয়ে যায় কেউ খোঁজ রাখে না। সাক্ষাৎকারে তাদের দুটো খুব প্রশ্ন সকলেই কমবেশি করা হয়? এরপর কি হতে চাও? এবং তোমার সাফল্যের পিছনে কে দায়ী?
প্রতিবছরই দেখা যায় সকলের উত্তরের একটা সামঞ্জস্য রয়েই যায়। সকলেই নাকি গরীবদের সেবা করবে ডাক্তার হয়ে বা ইঞ্জিনিয়ার হবে। মোটামুটি একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে সবাই। সাফল্যের জন্য তো অবদানের ফর্দ করতে বসে। আর তারপর প্রকাশনীর বিজ্ঞাপন তো রয়েছেই। সাড়া বছর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই বিজ্ঞাপন আমার সাফল্যের জন্য অমুক প্রকাশনী তমুক সহায়িকা দায়ি টেলিভিশনে দেখানো হয়।
এই বছর ঘটল এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। প্রথম স্থানাধিকারি শুভ্রাংশু সর্দারকে সাফল্যের পিছনে কার অবদান জানতে চাওয়ায় সে দৃপ্ত কণ্ঠে জানায় পরীক্ষা সে দিয়েছে তাই সাফল্যের অবদান সবথেকে বেশি তার নিজের। এই কথা ভাইরাল হয়ে যায় নেটদুনিয়ায়। সত্যিই তো তাই নিজের খাটনির ফলের কৃতিত্ব নিজের। অন্য কাউকে সেই সাফল্য দিতে নারাজ শুভ্রাংশু।
অপরদিকে উত্তর দিনাজপুরের ছাত্র দ্বিতীয় স্থানাধিকারি আবু সামাদকে প্রশ্ন করা হয় বড় হয়ে কি হতে চাও? তার উত্তর ‘বলব না।‘ সত্যি তাই তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সে কারোর সাথে ভাগ করে নিতে চায়না, তাতে অসুবিধা কোথায়? কারণ ভবিষ্যতে সে সত্যিই কি হচ্ছে বা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে তা দেখতে কোন সংবাদ মাধ্যম আসে না।
প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী পাশ করে তাদের কাউকেই মনে রাখে না মানুষ। এমনকি এই এত বিজ্ঞাপন দেয় প্রকাশনীরা সেই বিজ্ঞাপনও এক বছরের জন্য। অর্থাৎ তোমার মত কেউ আসবে তোমার জায়গা নিয়ে নেবে। তুমি তখন আলাদা কেউ নউ তুমিও সাধারণ। তাই নিজের কৃতিত্ব তোমার নিজের, নিজের ভবিষ্যৎ তুমি নিজেই করবে ইচ্ছে না হলে কাউকে তা বলবে না।