পড়ে একটু অবাক হলেন তাই না? বিশেষ করে গতিবেগ ও বারের আনুপাতিক হার দেখে ভাবছেন কি এমন কাজ আপনি করেন? না না আপনি এটা একা করেন না। তবে এই কাজ করে আপনি বিশ্ব রেকর্ড ও করতে পারেন। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই কাজ সম্পর্কে।
দম বন্ধ করা ভীড় বাস থেকে শীত কালে কনকনে ঠান্ডায় মানুষ এই একটা জিনিস কেই ভয় পায়। তা হল বাৎকর্ম বা সহজ ভাষায় পাদ। যা আমরা নিজেরা করলেও বেশির ভাগ সময়ে অন্যের ঘাড়েই দোষ চাপাই। কখনো কখনও কেউ তর্কে বলে ওঠেন “এই” জিনিস টাই নাকি তার হয় না। কিন্তু এটা নিয়ে সঠিক তথ্য জানলে আপনারা সবাই অবাক হবেন।
মানব দেহে নিস্বাস প্রস্বাসের মত বা মল মুত্র ত্যাগের মতোই একটি অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয় যা না হলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। একজন মানুষ প্রতিদিন, ৭কিমি বেগে গড়ে ১৪ বার এই বাৎকর্ম করে থাকেন। যা কখনো সশব্দে আবার কখনো নিঃশব্দে ঘটে থাকে। এই বাৎকর্ম সব সময় দূর্গন্ধময় হয়না।
এটি আসলে শরীরে উৎপন্ন হওয়া আন্ত্রিক গ্যাস, যা আমাদের দেহে পাচনতন্ত্রের এনজাইম এর দ্বারা খাদ্য পদার্থ বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় বা হজমের সময় তৈরী হয়। যেমন চর্বনের সময় বা তরল কিছু পান করার সময় বেশ কিছু গ্যাস আমাদের শরীরের ভীতরে যায় এবং অন্ত্রে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয় এবং মলদ্বারের মাধ্যমে নির্গত হয়।
সাধারণত সালফার সমৃদ্ধ খাবারেই বেশী দূর্গন্ধময় বাৎ উৎপন্ন হয়ে থাকে। যেমন – মটরশুটি, বাঁধাকপি, পনীর, সোডা এবং ডিম। বাৎকর্মে যে মিশ্র গ্যাস নির্গত হয় তাতে 59% নাইট্রোজেন, 21% হাইড্রোজেন, 9% কার্বন ডাই-অক্সাইড, 7% মিথেন, 3% ওক্সিজেন ও 1% অন্যান্য। এবং সাধারণ মানুষ দিনে প্রায় হাফ লিটার এই গ্যাস তার শরীরে উৎপন্ন করে থাকে। যা নির্গত হবার সময় মোটামুটি 98.6 ডিগ্রী তাপমাত্রা হয়ে থাকে এবং এটি একটি জ্বলনশীল গ্যাস।
বিজ্ঞান বলে, যদি কোন মানুষ প্রতি নিয়ত 7 বছর ধরে বাৎকর্ম করেন তাহলে তা হিরোশিমা তে বিস্ফোরিত হওয়া পারমানবিক বোমার সমতূল্য গ্যাস উৎপন্ন করবে। তাই পাদ আটকে রাখা শরীরের পক্ষেও বেশ ক্ষতিকর।
মানব দেহের মৃত্যুর পর তিন ঘন্টা পর্যন্ত বাৎকর্ম চলতে থাকে। পরিপাক নালির উভয় দিক থেকেই এই গ্যাস নির্গত হতে পারে।
অবাক করা বিষয় হল চিন দেশে, চিকিৎসা জগতে আপনি একজন পেশাদার Fart smeller বা বাৎকর্ম গন্ধ বিশারদের চাকরী করতে পারেন।
মানুষ ছাড়া, জীব জগতে উই পোকা, উট, জেব্রা, ভেড়া, গরু ও হাতিও এই বাৎকর্ম করে থাকে যা খুব স্বাভাবিক।