Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

বাংলার ”কালী কথা” , বাংলা জুড়ে থাকা কিছু বিখ্যাত কালী মন্দিরের ইতিহাস ।

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

আজকের বিশেষ প্রতিবেদনে রইল কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের কিছু বিখ্যাত কালী মন্দিরের ইতিহাস । ব্রহ্মযামল তন্ত্রের মতে, বাংলার অধিষ্ঠাত্রী হলেন দেবী কালিকা। এই কারণেই, বহু প্রাচীন কাল থেকে বঙ্গদেশে কালীর সাধনা শুরু হয়। গড়ে ওঠে বিখ্যাত কালী মন্দিরগুলি।

দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি

১৮৫৫ সালে । “কাশী যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গঙ্গাতীরেই একটি নয়নাভিরাম মন্দিরে আমার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পূজা কর। সেই মূর্তিতে আবির্ভূত হয়েই আমি পূজা গ্রহণ করব।” স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে জমিদার রানি রাসমণি নির্মাণ করেন দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি। উত্তর চব্বিশ পরগনার হুগলি নদীর তীরে দক্ষিণেশ্বরে অবস্থিত। রামকৃষ্ণ পরমহংসের সাধনাস্থল এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন । এই মন্দিরে দেবী কালীকে “ভবতারিণী” রূপে পুজা করা হয়।

আদ্যাপীঠ

কোনও শক্তিপীঠ নয়, তবু দক্ষিণেশ্বরের অনতি দূরে দেবীর অন্য একটি বিখ্যাত মন্দির আদ্যাপিঠ। মা এখানে আদিশক্তি বা আদ্যা মা। মায়ের মূর্তির উৎস বর্তমান ইডেন উদ্যানের জলাশয়। শিব জ্ঞানে জীব সেবাই এই মন্দিরের উদ্দেশ্য।

কালীঘাট মন্দির

কালীঘাট মন্দির কলকাতার সবচেয়ে বিখ্যাত কালীমন্দির এবং একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। দক্ষিণাকালী এবং পীঠরক্ষক দেবতা নকুলেশ্বরের পুজা হয় এখানে। পৌরাণিক কিংবদন্তি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি) আঙুল এই তীর্থে পতিত হয়েছিল। কোনো কোনো গবেষক মনে করেন, “কালীক্ষেত্র” বা “কালীঘাট” কথাটি থেকে “কলকাতা” নামটির উদ্ভব। জনশ্রুতি, ব্রহ্মানন্দ গিরি ও আত্মারাম ব্রহ্মচারী নামে দুই সন্ন্যাসী কষ্টিপাথরের একটি শিলাখণ্ডে দেবীর রূপদান করেন। ১৮০৯ সালে বড়িশার সাবর্ণ জমিদার শিবদাস চৌধুরী, তাঁর পুত্র রামলাল ও ভ্রাতুষ্পুত্র লক্ষ্মীকান্তের উদ্যোগে আদিগঙ্গার তীরে বর্তমান মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে।

ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি

ঠনঠনিয়ার সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির একটি প্রাচীন কালী মন্দির। জনশ্রুতি অনুসারে ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে জনৈক তান্ত্রিক মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি গড়েন। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে শঙ্কর ঘোষ নামে জনৈক ধনাঢ্য ব্যক্তি বর্তমান কালীমন্দির ও পুষ্পেশ্বর শিবের আটচালা মন্দির নির্মাণ করেন ও নিত্যপূজার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন।

ডাকাতকালী মন্দির

হুগলীর সিঙ্গুরের কাছে পুরুষোত্তমপুরে অবস্থিত একটি বিখ্যাত সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির। এই মন্দির ডাকাত সনাতন বাগদী না গগন সর্দার না রঘু ডাকাত নির্মাণ করেছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কথিত আছে, অসুস্থ রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে দেখতে যাওয়ার পথে সারদা দেবীকে এই স্থানে দুই ডাকাত আটক করলে স্বয়ং কালী দেখা দেন ও তাঁকে রক্ষা করেন। এই অলৌকিক ঘটনায় ভয় পেয়ে ডাকাতরা এখানে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করে। রঘু ডাকাতের কালীমন্দির হুগলীর বাসুদেবপুর গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির। একচূড়াবিশিষ্ট ডাকাত কালীমন্দির বিখ্যাত রঘু ডাকাতের ভাই বুধো নামক এক ডাকাত প্রতিষ্ঠা করেন। বুধো ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত হলেও এই কালী রঘু ডাকাতের কালী নামে জনপ্রিয় ও সিদ্ধেশ্বরী কালী হিসেবে পূজিতা হন।

ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি

কলকাতার বউবাজারে বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটে অবস্থিত এই ৫০০ বছরের প্রাচীন কালী মন্দির। জনশ্রুতি অনুযায়ী, মন্দিরটি অ্যান্টনি নামে একজন পর্তুগীজ সাহেব বা ফিরিঙ্গি এই মন্দিরে আসতেন। তাই এই মন্দিরটি ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি নামে পরিচিত।

চিত্তেশ্বরী সর্বমঙ্গলা কালীমন্দির

চিতপুর যার নামে তিনি চিত্তেশ্বরী। উত্তর কলকাতার চিতপুরে খগেন চ্যাটার্জী রোডে অবস্থিত এই মন্দিরটি কলকাতার প্রাচীনতম মন্দিরগুলির অন্যতম। “দস্যুবৃত্তি করে জীবনযাপন না করে সময় থাকতে এখন ছেড়ে দিয়ে সাবধান হয়ে যা। মহাশক্তিরূপিণী আমি সভৈরব জলাশয়ে পড়ে আছি; শেষ জীবনে আমার মহিমা প্রচার কর।” রঘু নামে এক দুর্দান্ত ডাকাত স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে নির্মাণ করেন চিত্তেশ্বরী সর্বমঙ্গলা কালীমন্দির।

তারাপীঠ

বীরভূমের রামপুরহাটের কাছে অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র মন্দির নগরী। পাগলা সন্ন্যাসী” বামাক্ষ্যাপার লীলাক্ষেত্র এই শহর তন্ত্রের দেবী মা তারার মন্দির ও মন্দির-সংলগ্ন শ্মশানক্ষেত্রের জন্য বিখ্যাত ও একান্ন সতীপীঠের অন্যতম।

করুণাময়ী কালীমন্দির

মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুত সেনাপতি মানসিংহ বারাসাতের আমডাঙায় সূক্ষ্মাবতী নদীর তীরে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই মন্দিরের প্রথম পুরোহিত ছিলেন রামানন্দ গিরি গোস্বামী যার নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম হয় ‘রামডাঙা’। পরে রামডাঙা কথাটি লোকমুখে বিকৃত হয়ে হয় ‘আমডাঙা’। করুণাময়ী কালীমূর্তিটি মন্দিরের দোতলায় প্রতিষ্ঠিত।

পুঁটেকালী মন্দির

কলকাতার বড়োবাজার অঞ্চলে কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটে একটি পুরনো কালীমন্দির। মন্দিরের কালীমূর্তিটির উচ্চতা মাত্র ছয় ইঞ্চি, তাই ছোটো “পুঁটিকালী” বা “পুঁটেকালী”। অন্যমতে, হোমের সময় পাশে গঙ্গা থেকে একটি পুঁটিমাছ লাফিয়ে হোমকুণ্ডের মধ্যে পড়ে যায়। অর্ধদগ্ধ মাছটিকে তুলে জলে ফেলে দিতেই সেটি আবার জীবন্ত হয়ে হয়ে ওঠে। সেই থেকে “পুঁটিকালী” বা “পুঁটেকালী”।

চীনা কালী মন্দির

কলকাতার ট্যাংরায় চায়না টাউনের কাছে প্রায় ৬০ বছর পুরনো এই বিখ্যাত কালী মন্দির। নিত্য দিনের পূজা একজন বাঙ্গলী পুরোহিত করে থাকেন। এখানকার অধিকাংশ অধিবাসীরা খ্রীষ্টান এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও এই কালী মন্দিরের খুব ভক্ত। কালী পূজা উপলক্ষে প্রায় ২০০০ চীনা মানুষ সমবেত হন এই মন্দির চত্বরে। মায়ের পূজোর প্রসাদ হল নানা চীনা খাবার যেমন চাউমিন বা নুডলস ইত্যাদি।

কঙ্কালীতলা মন্দির

বোলপুরের কাছে বোলপুর-লাভপুর রোডের পাশে এই শক্তিপীঠ। কথিত আছে, দক্ষযজ্ঞের পর এখানে দেবী পার্বতীর কঙ্কাল পড়েছিল। এখানে দেবীর নাম দেবগর্ভা।

হংসেশ্বরী মন্দির

হুগলীর বাঁশবেড়িয়ায় দুশো বছরের পুরনো একটি বিখ্যাত কালী মন্দির। ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজা নৃসিংহদেব হংসেশ্বরী কালীমন্দিরের নির্মাণ শুরু করেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর ১৮১৪ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর বিধবা পত্নী রাণী শঙ্করী মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করেন।

শ্যামনগরের ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির

১৮০৯ খ্রীঃ শ্যামনগরে মূলাজোড় গঙ্গার পাড়ে জমিদার গোপীমোহন ব্রহ্মময়ীর নবরত্ন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এরকম মন্দির পশ্চিম বঙ্গে বেশী দেখা যায় না।

রানাঘাটের সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির

রানাঘাটে চূর্ণী নদীর কাছে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করে রানা ডাকাত। প্রাচীন এই মন্দিরে মা সিদ্ধেশ্বরী নিত্য পুজা পান।

 

More Related Articles

রাজ‍্য ও রাজনীতি

শোকজ তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ! দলের বিরুদ্ধে মন্তব্যে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা

তৃণমূল কংগ্রেসের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সম্প্রতি শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফে এই নোটিস জারি করা হয়, যেখানে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে হুমায়ুন কবীরের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গণ্য হয়েছে।

Read More »
রাজ‍্য ও রাজনীতি

বীরভূম জেলা পুলিশের পাল্টা জবাব: শুভেন্দু অধিকারীর হোলি সময়সীমা বিতর্ক ভিত্তিহীন !

বীরভূম: হোলি উদযাপন নিয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা অভিযোগ উড়িয়ে দিল বীরভূম জেলা পুলিশ। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন যে, বীরভূমে হোলি খেলা নিয়ে পুলিশের তরফে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় মানুষদের জন্য একপ্রকার বিধিনিষেধ। তবে, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

Read More »
বিনোদন জগত

দোল উৎসবে রঙ ও সুরের মেলা: ১৬ই মার্চ জমবে মহামিলনের দোল !

কলকাতা, ১৩ মার্চ: দোল পূর্ণিমার আনন্দে রাঙিয়ে তুলতে চলেছে জি বাংলা! রঙের উৎসবের এই বিশেষ দিনে নাচ, গান এবং চমকপ্রদ মুহূর্তে ভরে উঠবে সন্ধ্যা। ১৬ই

Read More »
বিনোদন জগত

আতঙ্কে ফিরে এলেন ‘আনন্দ কর’! শ্রীজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘Killbill Society’-তে নতুন মোড়

কলকাতা: বাংলা সিনেমার জগতে এক নতুন রহস্যময় অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। শ্রীজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত Killbill Society সিনেমার প্রথম ঝলক প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় অভিনীত

Read More »
রাজ‍্য ও রাজনীতি

বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি রুখতে সরকার আনছে নতুন বিল: জানালেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু

কলকাতা: রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি রুখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নতুন একটি বিল আনতে চলেছে। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, অভিভাবকদের আর্থিক চাপ কমাতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চলেছে।

Read More »
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য

দোল উৎসবে বিষাক্ত রং থেকে চোখ ও ত্বকের সুরক্ষা: জেনে নিন কিছু কার্যকরী ঘরোয়া টিপস

দোল পূর্ণিমা মানেই রঙের উৎসব, আনন্দ, আর উন্মাদনা! কিন্তু বাজারের রাসায়নিকযুক্ত রং আমাদের ত্বক ও চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চুলকানি, অ্যালার্জি, শুষ্কতা এমনকি ত্বকের স্থায়ী ক্ষতিও হতে পারে এসব রঙের কারণে। তাই দোল খেলার আগে ও পরে কিছু বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। আসুন জেনে নিই কীভাবে সহজ ঘরোয়া উপায়ে চোখ ও ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন।

Read More »
error: Content is protected !!