দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে আর

Days
Hours
Minutes
Seconds

দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে আর

Days
Hours
Minutes
Seconds
Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)
Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

আজ চলচ্চিত্রের মহারাজের ১০২ তম জন্মদিন

Table of Contents

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

শোভন মল্লিক, কলকাতা : ২রা মে ১৯২১ সালে রায় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়। তাঁর পিতা সকলের প্রিয় কবি সুকুমার রায় ও মাতা সুপ্রভা রায় । তখন কি কেউ জানতো ? রায় পরিবারে জন্মগ্রহণ করা সেই ছেলেটি সারা বিশ্বের কাছে মহারাজার খেতাব পাবে। তবে ছোট থেকেই তার কথাবার্তা, পড়াশোনা, জানার ইচ্ছা তাঁর পিতা সুকুমার রায়-কে অবাক করতো। তিনি পরবর্তীকালে বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে নিজের জায়গা করে নেন।

তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিৎ রায়ের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও , প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে , বাইসাইকেল চোর দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।

যদিও তার পেশার কথা বলতে গেলে হতবাক হতেই হয়। একই সাথে তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক, চলচ্চিত্র প্রযোজক, গীতিকার ,সংগীত পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, লিপিকলাবিদ, অঙ্কন শিল্পী ,সঙ্গে কবি। সর্বগুণসম্পন্ন শব্দটি তৈরি হয়েছিলই হয়তো তাঁর জন্যেই।

চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে সত্যজিৎ রায় ছিলেন বহুমুখী এবং তাঁর কাজের সংখ্যা অগুনতি। তাঁর প্রত্যেকটা কাজ প্রত্যেকটা কাজকে টক্কর দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। তিনি ৩৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র, প্রামাণ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তাঁর প্রথম কাজ ছিল পথের পাঁচালী ১৯৫৫ সালে। তাঁর কাজে শুরুতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে । কিন্তু তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা এবং তার স্ত্রী বিজয়া দাস তাকে অপরিসীম সাহস জুগিয়েছিল।

আর এই চলচ্চিত্রই সত্যজিৎ রায়-এর জীবনের মোড় একেবারে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। সারা বিশ্ব পথের পাঁচালীর সফলতার পথে যোগ দিয়েছিল। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালী (১৯৫৫) ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে, এর মধ্যে অন্যতম ১৯৫৬ কান চলচ্চিত্র উৎসবে পাওয়া “শ্রেষ্ঠ মানুষে-আবর্তিত প্রামাণ্যচিত্র” পুরস্কার। পথের পাঁচালীর পর অপরাজিত ও অপুর সংসার সমান জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। পথের পাঁচালী, অপরাজিত (১৯৫৬) ও অপুর সংসার (১৯৫৯) – এই তিনটি একত্রে অপু ত্রয়ী নামে পরিচিত, এবং এই চলচ্চিত্র-ত্রয়ী সত্যজিৎ রায়ের জীবনের শ্রেষ্ঠ কর্ম হিসেবে বহুল স্বীকৃত।

তিনি শুধুমাত্র একজন সফল পরিচালক হিসেবে মানুষের মন জয় করেই সন্তুষ্ট হননি। চলচ্চিত্র মাধ্যমে সত্যজিৎ রায়ের চিত্রনাট্য রচনা, চরিত্রায়ন, সঙ্গীত স্বরলিপি রচনা, চিত্রগ্রহণ, শিল্প নির্দেশনা, সম্পাদনা, শিল্পী-কুশলীদের নামের তালিকা ও প্রচারণাপত্র নকশা করা সহ নানা কাজ করেছেন। একই সঙ্গে তার লেখা ক্রোড়পত্র সন্দেশ সেই সময়ে সারা ফেলেছিল সামগ্র বিশ্বজুড়ে। তিনি যেমন সুনিপুণভাবে প্রতিটি কাজ দায়িত্ব সহকারে সম্পূর্ণ করেছেন । তেমনি তাঁর পুরস্কারের সংখ্যাও অগুন্তি। শুধুমাত্র দেশের মধ্যেই তাঁর পুরস্কারের ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ ছিল না। সারা বিশ্ব থেকে তিনি নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। যার মধ্যে বিখ্যাত হল ১৯৯২ সালে পাওয়া একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার (অস্কার), যা তিনি সমগ্র কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেন।তিনি এছাড়াও ৩২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১টি গোল্ডেন লায়ন, ২টি রৌপ্য ভল্লুক লাভ করেন।

তিনি তো সমাজের প্রতিটি মানুষের জন্য চলচ্চিত্র তৈরি করতেই। সঙ্গে ছোটদের জন্যও তিনি সাজিয়েছিলেন নানা উপহারের ডালি। শিশু-কিশোরদের জন্য তিনি নানা গল্প , প্রবন্ধ রচনা করেছেন। যা শুধু সেই সময়ের শিশু-কিশোরদের মন জয় করেছে এমনটা নয় । আজকের দিনেও প্রায় প্রতিটি শিশু-কিশোরদের কাছে সেগুলি সমান জনপ্রিয়। কল্পবিজ্ঞানে তার নির্মিত জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্র গোয়েন্দা, ফেলুদা এবং প্রোফেসর শঙ্কু। সত্যজিৎ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিগ্রি লাভ করেন। অধিল দেশ বিদেশের সম্মানের মাঝেও তিনি আমাদের ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানে সম্মানিত হন। ১৯৯২ সালে ভারত সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ভারত রত্ন সম্মাননা প্রদান করে।

সত্যজিৎ রায় ২০০৪ সালে বিবিসি এর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী তালিকায় ১৩তম স্থান লাভ করেছিলেন । যিনি কিনা বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে এনেছেন , বাঙালি চলচ্চিত্রকে সারা বিশ্বের সামনে হীরের মুকুট পড়িয়েছেন । সত্যিই তাঁর মতন বাঙালিই তো এই সমস্ত সম্মানের একমাত্র অধিকারী। হৃদযন্ত্রের জটিলতার কারণে ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল সত্যজিৎ রায় পরলোক গমন করেন । কিন্তু কথায় আছে শিল্পীর হয়না। সত্যিই তো তিনি না থেকেও প্রতিটি বাঙালির মনে প্রাণে মিশে রয়েছেন। বাঙালি বলাটা ভুল বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মনে সত্যজিৎ রায়ের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা । মহারাজের হীরের মুকুটের মতনই মহারাজের সিংহাসন আজও মহারাজের জন্যই রয়েছে । যতদিন চলচ্চিত্র থাকবে , আর যতদিন স্টুডিও পাড়ায় লাইট ক্যামেরা একশন কথাটির রোল উঠবে। ততবারই সত্যজিৎ রায়ের নাম উঠে আসবে মানুষের মুখে মুখে। এইভাবেই মহারাজা বেঁচে থাকবে, তার স্মৃতি বেঁচে থাকবে, তার কাজ বেঁচে থাকবে আমাদের মধ্যে।

More Related Articles

"কোটির কেলেঙ্কারিতে ছত্তীসগঢ়ে তোলপাড়! প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র গ্রেফতার, আবগারি দুর্নীতিতে ইডির জালে চৈতন্য বাঘেল"
সংবাদ ও রাজনীতি
“কোটির কেলেঙ্কারিতে ছত্তীসগঢ়ে তোলপাড়! প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র গ্রেফতার, আবগারি দুর্নীতিতে ইডির জালে চৈতন্য বাঘেল”

ছত্তীসগঢ়ের আবগারি দুর্নীতিতে চাঞ্চল্যকর মোড়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের ছেলে চৈতন্য বাঘেলকে গ্রেফতার করল ইডি। প্রায় ২১৬১ কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ভোরবেলা ভিলাইয়ে তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

Read More »
পথপরিচয়ক জয় হে
সম্পাদকীয়
পথপরিচয়ক জয় হে

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর একের পর এক আঘাতের প্রতিবাদে রাজপথে নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জনতার ঢল, স্লোগানে মুখর রাজপথ, আর ভাষার লড়াইকে ঘিরে এক ঐতিহাসিক প্রতিবাদ।

Read More »
error: Content is protected !!