দেখতে দেখতে শেষ মুহুর্তে চলে এলো শারদোৎসব ২০২২। বিগত দু-দুটো বছর করোনা মহামারী কেড়ে নিয়েছিল বাঙালীর কাছের মানুষ সহ এই আবেগের ও প্রানের উৎসব কে। মন চাইলেও মনের আবেগকেও নিজেদের সাথেই গৃহবন্দি করে রাখতে হয়েছিল। শারদোৎসব তো শুধুমাত্র একটা আনন্দ উৎসবই নয়, বলাবাহুল্য বর্তমানে এই উৎসব বহু মানুষের জন্য একটা জীবিকা নির্বাহী উৎস। এ বছর সাধারণ অঙ্কের হিসাবে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকা ব্যায় করে এই উৎসব বহু মানুষের মুখে ফুটিয়ে তুলেছে হাসি। আছে নানান রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক তর্ক। কিন্তু একথা কখনোই অস্বীকার করা যায়না যে এই উৎসব, ভারতের সব থেকে বড় উৎসব, যেখানে ধর্ম, বর্ন, ধনী দরিদ্র সবাই এক হয়ে এই উৎসবে মেতে উঠতে পারেন নিজের মত করে।
আলিপুর আবহওয়া বিদকেও সততার সাথে কাজ করার পরও শুনতে হয়েছে পুজো পাগলদের কটাক্ষ। কিন্তু বৃষ্টি আটকাতে পারেনি মানুষ কে। গতকাল নবমী নিশি যত গভীর হয়েছে, ঠিক ততটাই রাস্তায় ছিল জনস্রোত। শেষ মুহুর্তের আনন্দ গুলো মানুষ চাইছিল না হাতছাড়া করতে। ইদানিং কালে নবমীর পরের দিন সকালে যদি আপনি কাউকে শুভ-বিজয়া বলে শুভেচ্ছা জানান ব্যাস তাহলেই আপনি কটাক্ষের স্বীকার হবেনই। আপনি দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারবেন একাদশী থেকে। প্রতিমা বিসর্জনের পর থেকে। আসলে মৃন্ময়ী “মা” কে কেউ ছাড়তেই চায়না।
পুজো পাড়া গুলো এখন বেশ থমথমে। গাড়ির হর্ন, কোলাহল শোনা গেলেও একটা নিস্তব্ধতা গোটা পাড়াকেই ঘীরে ফেলেছে। প্রস্ততি শুরু হয়েছে বিজয়া পর্বের। এতক্ষনে হয়তো বহু মন্ডপে কাটা হয়েগেছে ঘটের লাল সুতো। শুরু হয়েছে সিদুর খেলার প্রস্তুতি। প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসা এই রীতি একসময় ছিল সধবা বা বিবহিত মহিলাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ঘরের মেয়ে কে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর সময় বিদায় বেলায় একে ওপরের সিথিঁ তে এবং হাতের শাঁখা পলায় সিঁদুর ছুইয়ে একে ওপরের বৈবাহিক জীবন ও স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা করা হত। সাথে সাথে গালে একটু সিঁদুর লাগিয়ে শুরু হতো বিজয়োল্লাস। আজও সেই রীতি মেনেই হবে সিঁদুর খেলা। তবে এখন আর শুধুমাত্র বিবাহিত স্ত্রীদের মধ্যেই এই রেওয়াজ সীমাবদ্ধ নেই। রীতি অনুযায়ী মৃন্ময়ী মা কে, সিদুর দিয়ে বরন করার পরেই নারী পুরুষ, সধবা বিধবা বা অবিবাহিত নারী সহ শিশুরাও মেতে ওঠে এই সিঁদুর খেলায়, আসছে বছর আবার হবে এই কামনায়।
আবার মা আসবেন তার বাপের বাড়ী। আবারও শহর থেকে গ্রাম বাংলা সেছে উঠবে মৃন্ময়ীর আগমনীতে। এখন শুধু অপেক্ষা আরো ৩৬৫ দিনের আর তার সাথে অপেক্ষার এই একটা বছর যেন আমরা সবাই ভালো থাকি ; সুস্থ থাকি এটাই কামনা।
দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলসের তরফ থেকে সকল কে জানাই শুভ বিজয়ার অনেক অনেক শুভেচ্ছা। বছরের বাকি দিন গুলো সকলের কাটুক হাসি খুসি ও সুস্থতার সাথে। ইচ্ছা পুরন হোক সকলের। আসছে বছর, আবার হবে ।