Home » সাইবার ক্রাইমের হাত থেকে নিজেকে কি করে বাঁচাবেন

সাইবার ক্রাইমের হাত থেকে নিজেকে কি করে বাঁচাবেন

আমাদের মধ্যেয় অনেকেই ইতিমধ্যেই সাইবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়ে বেশ কিছু নগদ খুইয়ে বসেছি। এবং আমরা সবাই জানি যে এর পিছনে আছে বিহারের জামতাড়া গ্যাং। এই অপরাধী দল এতো দক্ষতার সাথে কাজ করে যে বেশীর ভাগ সময়েই পুলিশ আসল অপরাধীর নাগাল পায়না। যদিও বলে রাখা ভালো যে সাইবার ক্রাইম মানে শুধু ব্যাঙ্ক জালিয়াতি নয়। রয়েছে আরও নানান অপরাধ। আজ আমরা আলোচনা করছি কি ভাবে আমরা আমাদের টাকা পয়সা সুরক্ষিত রাখবো সেই নিয়ে।

 

সবার আগে দুটি কথা মনে রাখুন, ১। লোভ সম্বরন করুন ২। সহজে ভয় পাবেন না ।

এই দুটি কথা কেন বললাম এবার সেই কথায় আসা যাক। দুটি সত্য ঘটনা আপনাদের জানাই তবে নাম আর পরিচয় গোপন রেখে ।

ঘটনা ১ – কিছুদিন আগেই মিসেস রায়ের মোবাইলে একটি মেসেজ আসে এবং তার পরেই আসে ফোন। সেখানে তাকে জানানো হয় তিনি একটি বহুজাতিক কোম্পানির লটারি তে একটি চার চাকা গাড়ি কিনেছেন। এই খবর পেয়ে মিসেস রায় তো ভীষন আনন্দিত, একবারও ভাবলেনই না সেই বহুজাতিক কোম্পাণী কবে এই লটারি ঘোষনা করলো ? এবার মিসেস রায় কে ফোনের ওপার থেকে খুব যত্নের সাথে আবেদন করা হল,- ম্যাডাম, আজই প্রাইজ ডেলিভারির শেষ দিন। আগামীকাল আর এই প্রাইজ থাকবে না। তাই আমরা আপনাকে গাড়ী না দিয়ে গাড়ীর মূল্য টা নগদে আপনার ব্যাঙ্ক এ ট্রান্সফার করতে চাই তাই যদি আপনি আপনার ডেবিট কার্ডের ১৬ টি সংখ্যার সাথে ডেবিট কার্ডের পিছনে থাকা ৩ টি নম্বর আমাদের জানান তাহলে খুব সুবিধা হয়। মিসেস রায়, আনন্দে সাত পাঁচ না ভেবে সব বলে দিলেন। ফোনের ওপার থেকে আবারও যত্নের সাথে বলা হল আপনার ফোনে একটি পিন নম্বর গেছে সেটা বলুন। মিসেস রায় এবার সেটাও জানিয়ে দিলেন আর তারপরেই ফোন টা কেটে গেল। এর পরেই পর পর কয়েক টা এসএমএস ঢুকল আর তার সাথে সাথেই মিসেস রায়ের ব্যাঙ্ক একাঊণ্ট ফাঁকা।

 

ঘটনা ২ –  সদ্য চাকুরী থেকে অবসর প্রাপ্ত বিজন বাবু সপরিবারে মেয়ের বিয়ের কেনা কাটি করতে বেড়িয়েছেন। মেয়ের বিয়ে বলে কথা, তাই বিচক্ষণতার সাথে সব কিছুতে নজর দিয়ে কেনা কাটি করছিলেন। এবং স্বাভাবিক ভাবেই কেনা কাটির সময় নিজের ডেবিট কার্ড ব্যাবহার করছিলেন। ঠীক এমন সময়েই একটি অজানা নম্বর থেকে একটি ফোন আসে এবং বিজন বাবুকে বলা হয়, স্যর আপনার ডেবিট কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই মুহূর্তে আপনার ডেবিট কার্ড টি বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিজন বাবু একটু ঘাবড়ে গেলেন। কেনা কাটির সময় ডেবিট কার্ড বন্ধ হয়ে যাবে ! বিজন বাবু আঁতকে ঊঠে জানতে ছাইলেন তাহলে কি করতে হবে ? ফোনের ওপার থেকে এবারও সেই ডেবিট কার্ডের ১৬ টি সংখ্যার সাথে ডেবিট কার্ডের পিছনে থাকা ৩ টি সংখ্যা জানতে চায়, বিজন বাবু বলে দেন । আগের মতই যত্ন সহকারে বিজন বাবু কে জানানো হয় তার ফোনে একটি পিন নম্বর গেছে সেটি জানাতে। বিজন বাবু সেটিও বলে দেন। ব্যস আর কি !!!!! এখানেই মধুরেন সমাপোয়েত

 

 

প্রথমেই আপনাদের দুটি মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হতে হবে যা আমি আগেই বলেছি। ১। লোভ সম্বরন করুন ২। সহজে ভয় পাবেন না বা ঘাবড়ে যাবেন না। সাইবার অপরাধীরা বেশীর ভাগ সময়ে এই দুটি হাতিয়ার ব্যাবহার করে থাকে। যাতে আপনি লোভে বা ঘাবড়ে গিয়ে আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের যাবতীয় তথ্য তাদের জানিয়ে দেন।

মাথায় রাখবেন, ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা কখনই আপনার কার্ডের তথ্য জানতে চান না। চাইলেও, আপনি বলবেন না। একটু কষ্ট করে নিজের ব্যাঙ্কে গিয়ে কথা বললে আপনার সঞ্চিত অর্থ থাকবে নিরাপদে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!