কয়েকদিন আগেই বরানগর থানা গ্রেফতার করেছে কলকাতা শহরের বরং বলা ভালো পশ্চিমবঙ্গের গ্ল্যামার জগতের স্বঘোষিত জনক “জেডি বুড়ো” বা জয়ন্ত দাশগুপ্ত। বরানগর কালীতলা লেনের এই বাসিন্দা নিজেকে ও নিজের পরিবার কে ভীষন শৌখিন ও আভিজাত্যের মোড়কে মুড়ে রাখতেন। নিজের পারিবারিক আভিজাত্যের প্রমান দিতেই সর্বদা বাঙালির জাতীয় পোষাক পরিধান করতেন যদিও তা থাকতো রঙিন। ধোপদুরস্ত চেহারার সাথে সাথে মুখে থাকতো গ্ল্যামার জগতের রঙিন কথার জাল। আর এই চাকচিক্য আর কথার জালেই বরানগরের জয়ন্ত দাশগুপ্ত ওরফে জেডিবুড়ো পশ্চিমবঙ্গের অজস্র যুবক- যুবতী সহ বেশ কিছু বানিজ্যিক সংস্থার সাথেও করেছেন জালিয়াতি।
আমাদের তদন্তে উঠে আসে তার সাঙ্ঘাতিক রকমের মিথ্যার সাম্রাজ্য ও ঔদ্ধত্য। প্রথমেই আপনারা জানলে অবাক হবেন জয়ন্ত দাশগুপ্ত নিজে কোন ভাবেই প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ছিলেন না।একটা দামী ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকলেই কেউ প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হয়না। ফটোগ্রাফির ব্যাকরন জানতে হয়, পড়তে হয় এমনকি কিছু পরিক্ষাও দিতে হয়। তিনি কোনদিনও সেই অর্থে ফটোগ্রাফি চর্চাও করেননি অথচ তিনি তার সামাজিক মাধ্যমের একাউন্টে লিখেছেন – ” তিনি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার, প্রথম রোজগার নাকি তার এই ফটোগ্রাফি থেকেই আর সেখান থেকেই আলাপ রুমা দাশগুপ্ত মানে তার স্ত্রীর সাথে। তিনি অর্থাৎ জয়ন্ত দাশগুপ্ত এখন আর ছবি তোলেন না কারন যাতে অন্যরা ভালো ছবি তুলতে পারেন! এটাই নাকি তার জীবনের শেষ দিন অবধি শেষ ইচ্ছা।
ভাবতে পারেন, বেনু সেন ও আরো বিশ্ব বিখ্যাত ফটোগ্রাফারদের শহরে কতবড় এই ঔদ্ধত্য।
সর্বদা গোপিনী পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতেই ভীষন পছন্দ করা এই জয়ন্ত দাশগুপ্ত বা জেডিবুড়োর স্ত্রী রুমা দাশগুপ্ত সব কিছু জানা সত্বেও কোন রকম বাধা দিতেন না সেরকম টাই লাইভ ভিডিও তে উল্লেখ করেছিলেন বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার সৌরভ মুখার্জী।
বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার সৌরভ মুখার্জীর বক্তব্য দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন ঃ http://theindianchronicles.com/আর্থিক-প্রতারনার-দায়ে-গ/
কোলকাতা গড়ের মাঠ নাকি ছিল তার প্রায় কিনে ফেলা। কলকাতা ও কলকাতার পার্শবর্তী এলাকার নতুন উঠতি যুবক-যুবতী ( ফটোগ্রাফার, মডেল ও মেআপ অর্টিস্ট ) দের কে সফট টার্গেট করে, তাদের কে নানা রকম ফ্যাশন ইভেন্টের নামে তাদের থেকে চাঁদা আদায় করাই হয়ে উঠেছিল পেশা। এমনকি জয়ন্ত দাশগুপ্ত প্রকাশ্যেই বলতেন ময়দান থানা সহ কলকাতা পুলিশের হেড কোয়ার্টারের বহু উচ্চপধাধিকারী অফিসাররা তার সাথে দারুন সম্পর্কে থাকেন এবং তাই কোন উঠতি যুবক-যুবতী গভীর রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তারা এই “জেডিবুড়ো” বা “জেডিবাবা” কে ফোন করলেই তাদের ছাড় হয়েযেত।
এখন প্রশ্ন উঠছে কিসের জন্য এই ব্যাক্তির এত প্রভাব? কোন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা নাকি প্রষাশনের কোন উচ্চপদস্থ আমলার অবৈধ প্রশয় নাকি চটজলদি কেরিয়ার আর গ্ল্যামারের লোভে মক্ষীরানিদের জমায়েত? কারন বিগত দিনে ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্তে দেখা গেছে পার্থ চট্টপাধ্যায়ের সাথে অর্পিতা, গোপাল দলপতির সাথে হৈমন্তী , কুন্তল ঘোষের সাথে সোমা চক্রবর্তী, অয়ন শীলের স্বেতা, অভিষেক শীলের সাথে ইমন গঙ্গোপাধ্যায়, এদের বেশীর ভাগই জেরায় স্বীকার করেছেন তারা আগে মডেলিং করতেন।
স্ত্রী রুমা দাশগুপ্ত একজন মেকাপ আর্টিস্ট, কন্যা ও পুত্র কেও গ্ল্যামার জগতের প্রমোট করতে চেয়েছিলেন বলেই অভিযোগ। অভিযোগ তুলেছেন দ্বিপান্বীতা দত্ত দাস। ঠিক কি অভিযোগ তার? দেখুন তার ভিডিও সাক্ষাৎকার। অবশ্যই হেডফোন ব্যাবহার করবেন।