তিনি বিতর্কিত ও বিবাদিত তার কাজ ও তার বক্তব্যে। তার পরিচালিত প্রথম কমার্শিয়াল হিন্দি ছবি গুলি সেই ভাবে মানুষের মনে দাগ না কাটতে পারলেও তার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরী সিনেমা যেমন দ্যা তাসখন্দ ফাইলস্ ও কাশ্মীর ফাইলস্ তাকে সংবাদের শিরোনামে আনেন।
পরবর্তী প্রসঙ্গে যাবার আগে তার একটি মতাদর্শ এখানে বলতেই হয় তা হল, তিনি নরেন্দ্র মোদি কে পছন্দ করেন, ভারতীয় জনতা দল বা বিজেপি কে নয়। বাংলায় একটা প্রবাদবাক্য আছে – ধরি মাছ না ছুঁই পানি। ওনার মতাদর্শ অনেকটা সেরকমই।
আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা এজেন্সিদের ষড়যন্ত্র কতটা সাঙ্ঘাতিক তা প্রথমবার ভারতীয় সিনেমা প্রেমী ( বেশির ভাগ শিক্ষিত কুপমন্ডুক শ্রেনীর মানুষ ) দের সামনে এনে চমকে দেন। সেখানেই তিনি দেখান কিভাবে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছায়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী কে কিভাবে রাশিয়ার হত্যা করে সেই রহস্য দেশবাসীর কাছে গোপন রাখা হয়েছিল। ঘটনাটি সত্য হলেও ঠিক কতজন দ্যা তাসখন্দ ফাইলস্ দেখেছেন? তা সঠিক ভাবে আমরা আমাদের আশেপাশের সিনেমা প্রেমী মানুষ দের কাছে জানতে চাইলেই বোঝা যাবে। আখেরে সেই ছবির মূল প্রচারের বিষয় ছিল জাতীয় কংগ্রেস দল ও গান্ধী পরিবারের কুকীর্তি জনসমক্ষে আনা।
এর পরেই তার আর একটি সিনেমা দেশ জুড়ে ( বলা ভালো মিডিয়া জুড়ে ) হইচই ফেলেদেয়। তা হল “দ্যা কাশ্মীর ফাইলস্”। এখানেও আবারও দেখানো হল জাতীয় কংগ্রেস দলের পরোক্ষ সমর্থনে কাশ্মীরে হিন্দু পুরোহিত সম্প্রদায়ের ওপর মুসলিম উগ্রবাদী দল গুলি নিকৃষ্টতম অত্যাচার করেছিল যার ফলে বহু হিন্দু পুরোহিত পরিবার কাশ্মীর ছেড়ে অন্যত্র চলেগিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। সিনেমাটি হলে আসতেই প্রথমে বাছাই করে সেই সব পরিবারের কাছে ফ্রি প্রিমিয়ার শো করে তাদের থেকে সহানুভূতি পেয়ে মিডিয়া কে ব্যাবহার করে দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেন।
শেষ পর্যন্ত এই দুটি সিনেমার মূল বিষয় থেকে রাজনৈতিক লাভবান কিন্তু ভারতীয় জনতা দল বা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এখানে আরো একটা কথা বলে রাখি, কাশ্মীরে হিন্দু পরিবারের ওপর আক্রমণ কিন্তু আজও অব্যাহত।
আজ কিছুক্ষন আগেই পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী তার পরবর্তী সিনেমার নাম ও পোষ্টার ঘোষনা করলেন। ” দ্যা ভ্যাকসিন ওয়ার”। ফাইলের পর ফাইল ঘেটে রিসার্চ করে ইঞ্জেকশনের ফাইল নিয়ে তার পরবর্তী কাজ। করোনা কালে নরেন্দ্র মোদি কিভাবে এই ভ্যাকসিন নিয়ে লড়াই করেছিলেন আর কারা তার অন্তরায় বাধা দিয়ে ছিলেন সেই নিয়েই হবে এই গল্পের কাহিনী। প্রশ্ন ওঠে এখানেই তিনি তাসখন্দ ফাইল আর কাশ্মীর ফাইলের পর “নোট বন্দী” ফাইল খুজে পেলেন না কেন?
প্রযোজনায় থাকছেন তার স্ত্রী পল্লভি জোশী। এক-কালীন দুরদর্শন খ্যাত (হাতে গোনা কয়েকটি ) ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। তার কাছে বলিউড ফিল্ম বানানোর এত অর্থ আসে কোথা থেকে এটাও একটা প্রশ্ন।
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল কি এ বিষয়ে কখনো আলোকপাত করবেন?
তবে এবার এই ভ্যাকসিন কান্ড আসতে চলেছে ১১টি ভাষায়। তার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে। ব্যাপার টা ঘুরে ফিরে “হর ঘর মোদি ; ঘর ঘর মোদি ” হয়েই যাচ্ছে তা পরিচালক না বললেও অনুভব করা যায়।