এক অতি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমারা যে খাবার খাই তা থেকে শরীর প্রয়োজনীয় উপাদান শোষণ করে নেয়। বাড়তি উপাদান মল হিসাবে শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। দিনে ১ থেকে ২ বার মলত্যাগ স্বাভাবিক ও একপ্রকার শারীরিক সুস্থতারই লক্ষণ। কিন্ত এমন কি কখনও হয়েছে টেনশনে পায়খানা পাচ্ছে? ধরুন আপনি পরীক্ষার হলের বাইরে অপেক্ষা করছেন! মাথায়ে খুব চাপ! হলে ঢোকার মুখেই খুব জোরে নেচার কল!
বেশিরভাগ মানুষই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। তবে জানেন কি এই সামান্য বিষয়টির পিছনেই হয়তো লুকিয়ে আছে অনেক বড় কোনও সমস্যা। এই প্রসঙ্গে কলকাতার ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, টেনশনে এরকম হলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে অন্ত্রের কিছু সমস্যা। । তাই মানুষকে সমস্যার কারণ খুঁজে বের করতে হবে ও অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
IBS-র কারণঃ
অনেক ক্ষেত্রেই দেখতে পাওয়া যায় সমস্যাটির পিছনে মূল কারণ IBS বা ইরিটেবল বাওয়ালে সিনড্রোম। এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের সঙ্গে এই রোগের একটা যোগ রয়েছে। তাই প্রাথমিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। ডা: পালের মতে, দুশ্চিন্তা হলে আমাদের শরীরে কিছু রাসায়নিক নির্গত হয়। রাসায়নিকের নাম হল নিউরোট্রান্সমিটার। যাদের IBS থাকে তাঁদের বৃহদন্ত্র খুবই সংবেদশীল হয়ে থাকে। তাই টেনশন হলেই বৃহদন্ত্রে পৌঁছে যায় সিগন্যাল। আর তখনই আসে নেচার কল।
IBS-র জন্য করনীয় টেস্টঃ
তবে সমস্যার আরও কারণ হতে পারে যেমন কোলাইটিস, ক্রনিক বা আমাশা ইত্যাদি রোগ। টেস্টের মাধ্যমে সহজেই সমস্যা সনাক্ত করা যেতে পারে। স্টুল টেস্ট, পেটের কোলোনোস্কোপি ইত্যাদি টেস্টের মাধ্যমে রোগ ধরা ও নিরাময় করা যায়। তাই চিন্তার কোন কারণ নেই। টেস্টের মাধ্যমেই বোঝা সম্ভব শরীরে অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা। চিকিৎসকরা সেই বুঝে পরবর্তী চিকিৎসা করেন।
ডায়েট ও চিকিৎসাঃ
ডা: পালের মতে এই রোগের মূল কারণ অতিরিক্ত ভাবানা। তাই দুশ্চিন্তা কাটানোর কিছু ওষুধ দেওয়া হয় প্রাথমিক পর্যায়ে। এর পাশাপাশি কিছু ওষুধ রয়েছে যা এই রোগে দারুণ কার্যকরী। তবে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি দৈনন্দিন ডায়েটে রাখা উচিত শাক, তেল, ঝাল, গমের খাবার যেমন রুটি ইত্যাদি। অবশেষে বলে রাখা ভাল, এই রোগ ফেলে রাখা উচিত নয়। রোগটি চেপে রাখলে সমস্যা বাড়তে পাড়ে। তাই সময় থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।