আমরা, হ্যাঁ বিশেষ করে আমরাই যারা ডিজিটাল নিউজ পোর্টাল নিয়ে সাংবাদিকতা করি, সত্যিই আমরা সমাজের পরাশ্রয়ীর গায়ে লেগে থাকা সরিসৃপ সাংবাদিক। আমাদের গায়ের রক্ত মাংস অস্থি মজ্জা কোন কিছুই জীব বিজ্ঞান বইয়ের সাথে মেলে না। এসব শুনে কি রাগ হচ্ছে আপনার? তাহলে আপনিও নিশ্চিতরূপে আমাদের মত ডিজিটাল দুনিয়ার বেনামী নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক না হলে কর্নধার।
আসলে শিক্ষা অর্জনের পর, বরং বলা ভালো বিদ্যা অর্জনের পর যখন পুরাতনী বাঙালির রক্তের দোষের কারনে নিজ প্রতিষ্ঠান তৈরীর তাগিদে ঝাপিয়ে পড়েছি নতুন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন ভাবে ইন্টারনেট জগতে সাংবাদ পরিবেশন ব্যাবসাতে। হ্যাঁ এটা ব্যাবসাই। এটা বলতে কোন লজ্জানেই। কারন আমাদের শেখানো হয় সাংবাদিকতা ও সংবাদ পরিবেশন গনতান্ত্রিক দেশের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে কিন্তু সেটা তো পাঠক্রমেই শেষ ঠিক যে ভাবে থোড়বড়ি খাড়া বাকি স্থম্ভ গুলি।
এখানেও আছে ব্র্যান্ড ভ্যালু। এখানেও আছে পাঠক-পাঠিকা ( পড়ুন Subsceiber ) এর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক পরকিয়ার বানিজ্যিক প্রচার। আমরা সরকারি চাকরির আশা না করে নিজ উদ্যোগে উদ্যোগী হয়ে তকমা পাই দুটাকার সাংবাদিক, সে সব আমরা গায়ে মাখিনা কারন আমাদের শরীরে থাকে পরিশ্রমী ঘামের গন্ধ। আমরা কর্পোরেট অফিসের ঠান্ডা ঘরে বসে, স্বল্প বসনা সেক্রেটারি কে নিয়ে ভাবিনা কি খবর করবো, কোনটা খবর করবো। প্রথম সারির টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিরা সভায় আসন পান সবার আগে। সরকারি অনুষ্ঠানে ডাক পেলেও আমাদের দেখাতে হয় বিগত কত বছর ধরে আমরা সেই সংবাদ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। বাদ পড়লে আমরাও বাদ। রাজনৈতিক শাষক ও বিরোধী দলের নেতা নেতৃদের কাছে ছুটে যাই তাদের কথা তুলে ধরতে কিন্তু তারাই আমাদের তাড়িয়ে দেন আমাদের ব্র্যান্ড ভ্যালুর অভাব দোহাই দিয়ে। অথচ যদি আমরাই কখনো সত্য প্রকাশ করি তখনই আমদের ওপর নেমে আসে আইনি পদক্ষেপ।
আমরা নিজ উদ্যোগে ছুটি খবর সংগ্রহ করার জন্য। তবে অনেক জায়গা থেকেই আমাদের সারমেয় মনে করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় কারন আমাদের সাংবাদিকতার কোন স্বীকৃতি নেই। রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের নিয়ে এখনো কোন রকম স্বীকৃতি দেবার কথা ভাবেননি। তাঁরা ব্যাস্ত ডিজিটাল বাজারে ওটিটি আর পাবজি চলবে কি চলবে না সেই নিয়ে। তাঁরা ব্যাস্ত ডিজিটাল জুয়ার প্ল্যাটফর্ম কে স্বীকৃতি দেওয়াতে। এখানেই কি কাজ শেষ নাকি? আরো আছে বাকি। কোন চলচ্চিত্র হলে চলবে নাকি দেশদ্রোহীতার কবলে পড়ে চালাতে হবে কাঁচি ! দেখতে হবে কোন কোন সংস্থা দুয়ারে মদ পৌঁছনোর কাজে রাজী। তবে সেসবের আঁচে আমরাও অল্প বিস্তর বাঁচি একথা নয় মিথ্যা।
ডিজিটাল সাংবাদিকতার প্রথম ও প্রধান প্রতিভা হল সংবাদ পরিবেশনার প্রতিযোগিতায় না গিয়ে একে ওপরকে অনৈতিক সাংবাদিকতার দোষারোপ করা। হ্যাংলা শিরোমনি পুরস্কার গ্রহন করা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। সাথে মাথা নুইয়ে গ্রহন করা খাবারের প্যাকেট। অসংগঠিত হবার কারনে আমাদের কথা বলার কেউ নেই। রাজ্যে চপ বা ঝালমুড়ি শিল্পের স্বীকৃতি আছে, কেন্দ্রে চা’য়ের স্টলের। আমাদের স্থান এর থেকেও খারাপ।