Home » অভিনয় থেকে অবসর ঘোষনা করলেন সব‍্যসাচী চক্রবর্তী।

অভিনয় থেকে অবসর ঘোষনা করলেন সব‍্যসাচী চক্রবর্তী।

আপামোর বাংলা ও বাঙালির খুব কাছের এবং প্রিয় অভিনেতা দের মধ‍্যে যিনি শীর্ষে থাকেন তার নাম সব‍্যসাচী চক্রবর্তী, যাকে আজও কেউ ডাকেন গোরা, আবার কেউ জানেন সত‍্যজিত রায়ের ফেলু মিত্র হিসাবে।

অভিনেতা সব‍্যসাচীর অভিনয় জীবন শুরু, বিশিষ্ট নাট‍্য ব‍্যাক্ত্বিত্ব, অভিনেতা ও পরিচালক জোছোন দস্তিদারের হাত ধরে, অনেক আগে হলেও বাঙালীর কাছে জনপ্রিয় হন নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে। স্মার্ট ফোনের ওটিটি তো তখন কল্পনার অতীত। কেবল টিভির হাজার টা চ‍্যানেল ও ছিলনা। ছাদে অ‍্যালুমিনিয়ামের অ‍্যন্টেনা ঘুরিয়ে দেখতে হত দুরদর্শন কেন্দ্র কলকাতার একমাত্র একটি বাংলা চ‍্যানেল।

দর্শকের দরবারে, হরেকরকম্বা, চিত্রহার ও শনিবার বাংলা ও রবিবার হিন্দি সিনেমার পাশে শুরু হয়েছিল জোছোন দস্তিদারের পরিচালনায় বাংলার প্রথম মেগা সিরিয়াল তেরো পার্বন। গল্পে পরিবারের বিদেশ ফেরত ছেলে গোরার প্রতিবাদী চরিত্রে অভিনয় করে বাংলা ও বাঙালীর মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন সব‍্যসাচী।

এরপরে দুরদর্শনের অনান‍্য নাটক ও ধারাবাহিকের সাথে তাকে বাংলা আর্ট ও কমার্শিয়াল ছবিতে অভিনয় করতে দেখাযায়। সত‍্যজিত রায়ের সৃষ্টি গোয়েন্দা চরিত্র প্রদোশ মিত্র ওরফে ফেলু দার চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরে দায়িত্ব নিয়ে অভিনয় করে ছিলেন সব‍্যসাচী। তার অভিনয় দক্ষতা তাকে পৌছে দিয়েছিল বাংলা থেকে মুম্বাই ও দক্ষিনী ছবির দুনিয়াতেও। কখনও বা নায়ক, কখনোও বা খলচরিত্রে আবার কখনো পেট ফাটানো কমেডি চরিত্রে সাবলীল ভাবে অভিনয় করতে তাকে আমরা পেয়েছিলাম বার বার।

প্রচার বিমুখ, তাবেদারিহীন এবং কমুনিষ্ট মানসিকতা তাকে কোনদিন কোনভাবেই আটকাতে পারেনি বরং একাধিক চলচ্চিত্র ও নাটকে লাগাতার অভিনয় করেছেন।

এক সময় “চলো অজ্ঞন” নামক একটি বাংলা ট্রাভেল টিভি শো তেই অভিনেতা ও পরিচালক তথা গায়ক অজ্ঞন দত্ত কে বলেছিলেন তার জীবনের নিয়মানুবর্তিতার কথা। জানিয়েছিলেন তার প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মজীবনের কথা। যতটুকু জীবন ধারনের জন‍্য ঠিক যতটা প্রয়োজন ততটাই উপার্জন তিনি করতে চেয়েছেন। সিলভারস্ক্রীনে অভিনয় করলেও নিজেকে গ্ল‍্যামারের আলোয় ঝলসে না দিয়ে সুযোগ পেলেই হাতে একটা ক‍্যামরা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন বনে জঙ্গলে প্রকৃতির কাছে আলাপ চারিতা করতে।

এবার অভিনয় জগত থেকে পুরোপুরি অবসর নেবার কথা ঘোষনা করলেন সব‍্যসাচী চক্রবর্তী। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন তাঁর এখন বয়স হয়েছে, বুড়ো হয়েছেন। এই মুহুর্তে একাধিক কাজের প্রস্তাব থাকলেও, সব ফিরিয়ে দিচ্ছেন তিনি। তিনি সিনেমা থেকে বিদায় নিচ্ছেন। এখন তার অবসরের সময়। এখন তিনি নিজের মতো করে বাকি সময় কাটাতে চান, পছন্দের খাবার, গল্পের বই, সিনেমা, টেলিভিশন আর ওটিটি দেখবেন আর অবশ্যই তিনি ক‍্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন প্রকৃতির অজানা মুহুর্ত ক‍্যামেরা বন্দী করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!