নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা সফরে এসেছেন চে গুয়েভারার কন্যা আলেইদা গুয়েভারা এবং নাতনি এস্তাফানিয়া। ২০ তারিখ কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা ছাত্র ফেডারেশন , যুব ফেডারেশন এবং মহিলা সমিতি ।
গোটা বিশ্ব জুড়ে বামপন্থী ঘরানার অন্যতম প্রধান মুখ হিসেবে মার্কস, লেনিনের পাশাপাশি অতি চেনা মুখ আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরের আর্নেস্তো চে গুয়েভারা । পেশাগত ভাবে তিনি ডাক্তার ছিলেন। চাইলেই অর্থনৈতিক ভাবে একটি স্বাচ্ছন্দ্য জীবন কাটাতে পারতেন তিনি কিন্তু গোটা দুনিয়া মজদুরদের ভালো রাখার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রান্তে বামপন্থীদের একজোট করে কিউবা বিপ্লব সংগঠিত করেন তৎকালীন লাতিনের সমস্ত স্বৈরাচারী শক্তিদের বিরুদ্ধে । বামপন্থীদের কাছে এই যুগে চে শুধু দার্শনিক নয় বরং একজন গ্ল্যামার আইকন । পরবর্তী কালে ফিদেল কাস্ত্রো কিউবার সভাপতি থাকা কালীন তিনি ছিলেন সেই সরকারে অর্থ এবং শিল্প মন্ত্রী । এছাড়াও কিউবা ব্যাংকের সভাপতি এবং কিউবার সৈন্য কমান্ডার ছিলেন তিনি । এর আগে ১৯৫৯ সালে চে নিজেও এসেছিলেন কলকাতা ভ্রমণে । তবে এবার কলকাতা সফরে এলেন তার কন্যা আলেইদা এবং নাতনি এস্তাফানিয়া ।
কলকাতা সফরে পৌঁছে তাকে বরণ করা থেকে শুরু করে তার সমস্ত সফরের দাইত্ব নিয়ে নেয়ে এ.আই.পি.এস.ও । এস এফ আই, দি ওয়াই এফ আই , এবং সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি তাকে বিমানবন্দরে বরণ করে তাদের কর্মসূচি শুরু করে । এরপর বড়াহনগর ইন্ডিয়ান স্ট্যস্টিকাল ইনস্টিটিউট এর সামনে চলে আলেইদা এবং এস্তাফানিয়া কে সম্বর্ধনা কর্মসূচি । সেখানেই আলেইদা এই রাজ্য এবং দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আরো জোরদার লড়াই করার কথা বলেন এবং জানান যে ভারতের ঐতিহ্য কে নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না , কিউবায় প্রতি শুক্রবার তারা নিয়ম করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন পরিচালকের সিনেমা চালিয়ে দেখেন । সেখানেই তাকে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে আকাশ কর, দিপ্ত্যজিত দাস , সপ্তর্ষি দেব , সফিকুল সরদার এবং অন্যান্য নেতৃত্ব রা সংবর্ধিত করে ।
২১ তারিখ কলেজ স্ট্রিট কলকাতা বিশ্বিদ্যালয়ের উল্টো দিকে মঞ্চ বেধে ছাত্র যুব এবং মহিলারা আরো একবার তাকে সম্মান জানান । মঞ্চে তাকে বিভিন্ন সঙ্গীত এবং স্মারক এর সঙ্গে বরণ করেছেন তারা । সঙ্গীত পরিবেশনা করেছে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ , সপ্তক সানাই , কল্যাণ সেন বরাট এর ক্যালকাটা কয়ের এবং বিভিন্ন সঙ্গীতশিল্পীরা, রূপঙ্কর বাগচীর আশার কথা থাকলেও বিশেষ কারণে এসে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি । সেখানে আর্জেন্টাইন সুরে গানে গলা মেলান আলেইদা নিজে । মঞ্চে তার পাশেই ছিলেন তাকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাদের অন্যতম মীনাক্ষী মুখার্জি , প্রতিকুর রহমান , সৃজন ভট্টাচার্য্য , কনিনিকা ঘোষ এবং অন্যান্য নেতৃত্ব । এছাড়াও ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা বিমল চক্রবর্তী ।
আলেইদার এই কলকাতা সফর কি আদেও শূন্য হয়ে যাওয়া বামপন্থীদের কাছে ঘুরে দাড়ানোর এবং লড়াই করার রসদ হবে ? এই প্রশ্ন নিয়ে সামনে তাকিয়ে রইলো রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ।